হামলা চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা ইরানের, দেশ ছেড়ে পালিয়েছেন নেতানিয়াহু?

অপারেশন ট্রু প্রমিজ-থ্রি’র প্রথম দফার মিসাইল হামলায় ইসরাইলের অন্তত দেড়শ’ লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হানার দাবি জানিয়েছে ইরানের বিপ্লবী গার্ড বাহিনী-আইআরজিসি। আইআরজিসি’র অন্যতম শীর্ষ কর্মকর্তা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আহমাদ ভাহিদির বরাত দিয়ে এ কথা জানিয়েছে ইরানের রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যম প্রেস টিভি। ভাহিদি জানান, ইসরাইলের আক্রান্ত ওইসব লক্ষ্যবস্তুর মধ্যে কৌশলগতভাবে খুবই গুরুত্বপূর্ণ বেশকিছু সামরিক ঘাঁটি আছে।
এদিকে ইসরাইলে চলমান এই হামলা সহসাই থামবে না। জায়নবাদীদের চরম শিক্ষা দিতে পাল্টা হামলা অব্যাহত রাখার ঘোষণা দিয়েছে ইরান। ১৪ জুন ইরানি কর্মকর্তাদের বরাত দিয়ে আল জাজিরা জানায়, গত রাতের সীমিত হামলার মধ্য দিয়েই সংঘাত শেষ হবে না। ইরান হামলা চালিয়ে যাবে। ইসরাইলের জন্য সে সব হামলা হবে আরো ভয়াবহ ও অনুতাপের।
এরই মাঝে গত রাতের হামলায় তেল আবিবসহ বিভিন্ন অঞ্চলে যে ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে, ইসরাইলকে এর আগে কখনোই এতোটা ক্ষয়ক্ষতির মুখে পড়তে হয়নি বলে জানাচ্ছে দেশটির গণমাধ্যমগুলো। হামলার ভয়াবহতা বোঝাতে ইসরাইলে নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত মাইক হাকাবি বলেছেন, শুক্রবার দিবাগত রাত থেকে শনিবার ভোর পর্যন্ত পাঁচবার আশ্রয়কেন্দ্রে ছুটতে হয়েছে তাকে।
এদিকে যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য ও ফ্রান্স যদি ইসরাইলের ওপর আসন্ন হামলা ঠেকাতে সহযোগিতা করে, সে ক্ষেত্রে মধ্যপ্রাচ্যে ওইসব দেশের ঘাঁটি ও যুদ্ধজাহাজে হামলার হুমকি দিয়েছে ইরান। সামনের দিনগুলোতে যুদ্ধের পরিসর আরো বাড়বে বলেও হুমকি দিয়েছে তারা। এরই মাঝে যুক্তরাজ্য সরকার জানিয়েছে, ইরানে ইসরাইলি হামলা ঘিরে তারা কোনো অস্ত্র সহায়তা দেয়নি বা ইসরাইলে হামলার সময় ইরানের ড্রোন ভূপাতিত করেনি। তবে যুক্তরাষ্ট্র ও ফ্রান্স ইসরাইলের প্রতিরক্ষায় কাজ করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে।
এদিকে ইরানের পাল্টা হামলার মুখে নিরাপত্তাজনিত কারণে ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু অজ্ঞাত স্থানে লুকিয়েছেন বা দেশ ছেড়ে পালিয়েছেন, এমন গুঞ্জন উঠেছে। ইসরাইলি গণমাধ্যমসহ বিভিন্ন সূত্রের বরাত দিয়ে ইরানের রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যম ইরনা বলছে, সম্ভবত নেতানিয়াহু গ্রিসে পালিয়েছেন।
ইরনা জানায়, দুটি যুদ্ধবিমানের পাহারায় নেতানিয়াহুর বিমান ‘উইং অব যায়ন’-কে দখলকৃত অঞ্চলের বাইরে দেখা গেছে। অজ্ঞাত গন্তব্যের দিকে যাচ্ছিল সেগুলো। পরে নেতানিয়াহুর বিমানটি গ্রিসের রাজধানী এথেন্সে অবতরণ করে বলে জানায় ইসরাইলি গণমাধ্যম চ্যানেল টুয়েল্ভ। সেটিতে নেতানিয়াহু বা তার পরিবারের কেউ ছিল কিনা তা নিশ্চিত হওয়া যায়নি।
তবে সিএনএন গ্রিস জানিয়েছে, ইরানি হামলার মুখে তেল আবিবে বাণিজ্যিক বিমান চলাচল বন্ধ হয়ে যাওয়ায় গ্রিসে নিযুক্ত ইসরাইলের রাষ্ট্রদূত নোয়াম কাটযকে পৌঁছে দিতেই ব্যবহার করা হয় উইং অব যায়নকে।
তবে এরপরও স্পর্শকাতর এই সময়ে নেতানিয়াহুর বিমান গ্রিসে যাওয়ার বিষয়টিকে সরলভাবে দেখছে না অনেকেই। এর সাথে কৌশলগত বা নিরাপত্তাজনিত কোনো ইস্যু জড়িত আছে বলে ধারণা অনেক বিশ্লেষকের।
বিভি/এইচজে
মন্তব্য করুন: