স্কুলে বিনামূল্যের খাবারে বিষক্রিয়া: হাসপাতালে ৩৬৫

ছবি: সংগৃহীত
ইন্দোনেশিয়ার একটি শহরে বিনামূল্যের স্কুলের খাবার খাওয়ার পর অন্তত ৩৬৫ জন অসুস্থ হয়ে পড়েছে। প্রেসিডেন্ট প্রাবোও সুবিয়ান্তোর বিনামূল্যের খাবার কর্মসূচি চালুর পর এটিই এখন পর্যন্ত সবচেয়ে বড় খাদ্যে বিষক্রিয়ার ঘটনা।
এ ঘটনার পর কেন্দ্রীয় জাভার স্রাগেনের একটি ল্যাবে খাবারের নমুনা পরীক্ষা করা হচ্ছে, ফলে সেখানে সাময়িকভাবে এ কর্মসূচি বন্ধ রাখা হয়েছে বলে জানিয়েছে স্থানীয় কর্তৃপক্ষ।
প্রায় ২৮০০ কোটি ডলার ব্যয়ে পরিচালিত এ কর্মসূচি ছিলো প্রেসিডেন্টের নির্বাচনী প্রতিশ্রুতি, যার লক্ষ্য দেশজুড়ে শিশুদের বিনামূল্যে খাবার বিতরণ করা।
তবে, শুরু থেকেই এ কর্মসূচি একের পর এক খাদ্যে বিষক্রিয়ার ঘটনা ও উচ্চ ব্যয় নিয়ে সমালোচনার মুখে পড়েছে। সরকারের আর্থিক চাপ কমাতে বেশ কয়েকটি মন্ত্রণালয়ের বাজেটও কেটে দেওয়া হয়েছে।
স্রাগেনের নবম শ্রেণির শিক্ষার্থী উইজদান রিধো আবিমান্যু ব্রিটিশ সংবাদ সংস্থা রয়টার্সকে বলেন,
‘রাতে হঠাৎ তীব্র পেটে ব্যথা নিয়ে ঘুম ভেঙে যায়। পরে ডায়রিয়া ও মাথাব্যথায় ভুগেছি। মনে হয় খাবার বিষক্রিয়ার কারণেই হয়েছে।’
তিনি আরও জানান, সোশ্যাল মিডিয়ায় তার সহপাঠীরাও একই ধরনের উপসর্গের অভিযোগ করেছে।
সন্দেহভাজন খাবারের তালিকায় ছিলো— ভাত, ঝুরি ডিম, ভাজা টেম্পে, শসার সালাদ ও দুধের একটি বাক্স—যা একটি কেন্দ্রীয় রান্নাঘরে প্রস্তুত করে শহরের বিভিন্ন স্কুলে বিতরণ করা হয়েছিলো।
দেশটির সরকার জানিয়েছে, এ ঘটনার কারণে হওয়া চিকিৎসা ব্যয় তারা বহন করবে। তবে স্রাগেন শহরের প্রশাসক সিগিত পামুঙ্গকাস টেম্পো সংবাদমাধ্যমে এক বিবৃতিতে বলেছেন,
‘এখনই নিশ্চিত করে কিছু বলা সম্ভব নয়। কিন্তু মূল বিষয় হলো, এটা শুধু এখানেই ঘটছে না। পুরো কর্মসূচির ক্ষেত্রে আরও কঠোরতা ও স্বাস্থ্যবিধি প্রয়োজন।’
চলতি বছরের জানুয়ারিতে শুরু হওয়া এ কর্মসূচির পর থেকে দেশজুড়ে ইতোমধ্যে এক হাজারের বেশি মানুষ খাদ্যে বিষক্রিয়ায় আক্রান্ত হয়েছে।
কর্মসূচির ব্যয় মেটাতে প্রেসিডেন্ট প্রাবোও ১৯০০ কোটি ডলার বাজেট কাটছাঁটের নির্দেশ দেন। ফলে একাধিক মন্ত্রণালয়ের বাজেট অর্ধেক কমে যায় এবং কর্মকর্তাদের অভিযোগ অনুযায়ী, অফিসে এসি, লিফট এমনকি প্রিন্টারের ব্যবহারও সীমিত করতে বাধ্য করা হয়।
এ নিয়ে হাজারো মানুষ রাস্তায় নেমে বিক্ষোভ করেছে। একজন বিক্ষোভকারীর প্ল্যাকার্ডে লেখা ছিলো, ‘শিশুরা বিনামূল্যে খাচ্ছে, অভিভাবকেরা চাকরি হারাচ্ছে।’
তবে গতকাল শুক্রবার (১৫ আগস্ট) সংসদে প্রথম ভাষণে প্রেসিডেন্ট প্রাবোও এ কর্মসূচির পক্ষে সাফাই গেয়ে বলেন, এ উদ্যোগ এবং অন্যান্য সামাজিক কর্মসূচি ইন্দোনেশিয়াকে ‘দারিদ্র্য, ক্ষুধা ও দুঃখ-কষ্টমুক্ত দেশে’ রূপান্তরিত করবে।- সূত্র: বিবিসি নিউজ।
বিভি/এআই
মন্তব্য করুন: