বইছে নির্বাচনী হাওয়া
নির্বাচনী এলাকায় যাচ্ছেন ওবায়দুল কাদের, টানটান উত্তেজনা

ওবায়দুল কাদের ফাইল ছবি
দুই বছর ৯ মাসপর নিজের নির্বাচনী এলাকা নোয়াখালী-৫ আসনে (কোম্পানিগঞ্জ ও কবিরহাট) যাচ্ছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। অসুস্থতা ও করোনাভাইরাসের কারণে তিনি দীর্ঘ ৩৩ মাস নিজ এলাকায় যেতে পারেননি। সবশেষ ২০১৯ সালের ১৩ অগাস্ট ঈদুল আজহা উদযাপনে নোয়াখালী গিয়েছিলেন তিনি।
এদিকে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদককের আগমনকে ঘিরে এলাকার সাধারণ মানুষের মধ্যে উৎসবমুখর পরিবেশের সৃষ্টি হলেও উপজেলা আওয়ামী লীগের বিবদমান দুটি গ্রুপের মধ্যে টানটান উত্তেজনা বিরাজ করছে।
বৃহস্পতিবার (৫ মে) বেলা ১১টার দিকে নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জে রাজাপুরে নিজ বাড়িতে পৌঁছাবেন। পরে তিনি কবিরহাট জিরো পয়েন্টে উপজেলা আওয়ামী লীগের নেতাকর্মী ও এলাকাবাসীর সঙ্গে ঈদের শুভেচ্ছা বিনিময় করবেন।
করোনাভাইরাস মহামারীতে এবার লকডাউনের বিধিনিষেধ না থাকায় রাজনীতিকদের অনেকেই এবার নিজ নিজ নির্বাচনী এলাকায় ঈদ উদযাপন যাচ্ছেন। অনেকে রোজার সময় গিয়ে ইফতার করেছেন নেতাকর্মীদের নিয়ে। তবে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ঈদ ঢাকাতেই ছিলেন।
এদিকে তার আগমনকে ঘিরে তৃণমূল নেতাকর্মীদের মধ্যে ব্যাপক উদ্দীপনা তৈরি হয়েছে। ব্যানার ফেস্টুনে দেখা গেছে আগমনী বার্তা।
ওবায়দুল কাদেরের সফরকে কেন্দ্র করে সব ধরনের প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে বলে জানান নোয়াখালীর পুলিশ সুপার মো. শহীদুল ইসলাম।
তিনি বলেন, সেতুমন্ত্রীর আগমন উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানের জন্য তার বাড়ির সামনে মঞ্চ তৈরি করা হয়েছে। পুলিশ মঞ্চ পরিদর্শন করেছে। এলাকায় নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে।
গত ১৫ এপ্রিল সন্ধ্যায় কবিরহাট উপজেলার সুন্দলপুর ইউনিয়নের নিজ বাড়িতে আয়োজিত ইফতার ও দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে নোয়াখালী-৪ (সদর-সুবর্ণচর) আসনের বর্তমান সংসদ সদস্য ও জেলা আওয়ামী লীগের আহ্বায়ক কমিটির সদস্য একরামুল করিম চৌধুরী প্রকাশ্যে ওবায়দুল কাদেরের আসনে দলীয় মনোনয়ন চাইবেন বলে জানিয়েছেন।
ওই সময় একরামুল করিম আরও বলেন, ‘এটা আমার হৃদয়। কবিরহাটের মানুষ আমাকে ভোট দিয়েছে। আপনারা কিন্তু কবিরহাটের মানুষকে সে সম্মান দেখাচ্ছেন। বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সিদ্ধান্ত কি হবে আমি জানি না। তবে যদি আপনারা চান। আমি নোয়াখালী-৪ নোয়াখালী-৫ দুই আসন থেকে মনোনয়ন চাইবো। সিদ্ধান্ত দিবেন জননেত্রী শেখ হাসিনা।’
তিনি আরও বলেন, ‘আওয়ামী লীগের ওবায়দুল কাদেরকে উদ্দেশ্য করে তিনি বলেন, আপনাকে বাবার পরে স্থান দিয়েছি। কিন্তু আপনি তো ধরে রাখতে পারেন নাই। আপনার আপন ভাইয়ের কথায় আপনি আমাকে সাধারণ সম্পাদক থেকে বাদ দিয়ে দিলেন। আমাকে বাদ দেন নাই। সারা নোয়াখালী আওয়ামী লীগ পরিবারকে তছনছ করে দিয়েছেন। আজকে যাকে তাকে আহ্বায়ক বানিয়ে দিয়েছেন।’
ওবায়দুল কাদেরকে স্বাগত জানাতে প্রস্তুত কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের বিবদমান দুটি গ্রুপই।
কাদের মির্জা সমর্থিত কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ইস্কান্দার হায়দার চৌধুরী বাবুল বলেন,কয়েক বছর পর নেতার কোম্পানীগঞ্জে আগমনকে ঘিরে তৃণমূলের নেতাকর্মীদের মাঝে প্রাণের সঞ্চার ঘটেছে।
সেতুমন্ত্রীর ভাগনে ফখরুল ইসলাম রাহাত বলেন, ‘কোম্পানীগঞ্জের রাজনীতিতে বর্তমানে নানা রকম প্রেক্ষাপটে মন্ত্রীর উপস্থিতির প্রয়োজনীয়তা ভালোমতো অনুভূত হচ্ছে। মন্ত্রীর আগমনে নেতাকর্মীদের মাঝে আশার সঞ্চার হয়েছে। স্থানীয় লোকজন আশা করছে কোম্পানীগঞ্জের যে রাজনৈতিক সমস্যা, তা সমাধান হবে।’
জানা গেছে, গত কয়েক বছর নানা ঘটনায় সমালোচনায় পড়তে হয় কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা আওয়ামীলীগ নেতৃবৃন্দকে। আলোচনার সমালোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে ছিলেন সেতুমন্ত্রীর ছোট ভাই বসুরহাট পৌরসভার মেয়র আব্দুল কাদের মির্জা। কাদের মির্জার বিরুদ্ধে নানা অনিয়মের অভিযোগ উঠছে সংগঠনের ভেতর থেকেই।
বিভি/এইচএস
মন্তব্য করুন: