বেগম জিয়ার হৃৎপিণ্ডে প্রধান নালীর ৯৯ শতাংশ ব্লক, পরানো হলো রিং
ফাইল ছবি
শনিবার দুপুর আড়াইটায় বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার এনজিওগ্রাম সম্পন্ন হয়েছে। খালেদা জিয়ার ব্যক্তিগত চিকিৎসক ডা. জাহিদ হোসেন এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। হৃৎপিণ্ডে বেশ কয়েকটি ব্লক ধরা পড়েছে বলে জানান জাহিদ হোসেন।
শনিবার (১১ জুন) দুপুরে জরুরিভিত্তিতে তার এনজিওগ্রাম করা হয়। এ সময় হৃৎপিণ্ডে বেশ কয়েকটি ব্লক ধরা পড়ে। তার মধ্যে একটি ব্লক ছিল ৯৯ শতাংশ। সেটিতে রিং পরানো হয়েছে। চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, বেশ কয়েক দিন হাসপাতালে থাকতে হতে পারে বেগম জিয়াকে। তবে আপাতত স্থিতিশীল আছেন সাবেক এই প্রধানমন্ত্রী।
এর আগে শনিবার (১১ জুন) দুপুরে মেডিক্যাল বোর্ডের জরুরি বৈঠকে খালেদা জিয়ার এনজিওগ্রামের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। তার ব্যক্তিগত চিকিৎসক অধ্যাপক ডা. জাহিদ হোসেন এ কথা সংবাদমাধ্যমকে জানান।
তিনি বলেন, ‘ম্যাডামের একিউট করোনারি হার্ট অ্যাটাক হয়েছে। অতি দ্রুত তার হৃদযন্ত্রে এনজিওগ্রাম করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে মেডিক্যাল বোর্ড। একই সঙ্গে উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশে প্রেরণে পরিবারের সদস্যদের ব্যবস্থা নিতে বলেছেন।’
কখন এই এনজিওগ্রাম করা হবে জানতে চাইলে বোর্ডের একজন চিকিৎসক জানান, দুপুর আড়াইটা নাগাদ এনজিওগ্রাম করার সকল প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে।
সকাল সাড়ে ১০টায় বসুন্ধরা এভারকেয়ার হাসপাতালে খালেদা জিয়ার জন্য গঠিত মেডিক্যাল বোর্ড বৈঠকে বসে। বৈঠকে বিএনপি চেয়ারপারসনের সর্বশেষ অবস্থা এবং তার হৃৎপিণ্ডের বিভিন্ন পরীক্ষা-নিরীক্ষার রিপোর্টগুলো পর্যালোচনা করেন বিশেষ চিকিৎসকরা।
হাসপাতালের বিশেষ চিকিৎসক অধ্যাপক শাহাবুদ্দিন তালুকদারের নেতৃত্বে ১০ সদস্যের এই মেডিক্যাল বোর্ডে হৃদরোগ বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক মোমিন-উজ জামান ও অধ্যাপক সামস মনোয়ারও ছিলেন।
সকাল ১০টার পর বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এভারকেয়ার হাসপাতালে আসেন। তিনি চিকিৎসকদের বোর্ড সভায়ও ছিলেন।
গুলশানের বাসা ‘ফিরোজা’য় বেগম খালেদা জিয়া হঠাৎ অসুস্থ বোধ করলে রাত তিনটায় ছোট ভাই শামীম এস্কান্দারের গাড়িতে করে বসুন্ধরার এভারকেয়ার হাসপাতালে তাকে নিয়ে যাওয়া হয়।
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর দলের চেয়ারপাসনের অসুস্থতার খবর পেয়ে দ্রুত উত্তরার বাসা থেকে গুলশানে আসেন এবং চেয়ারপারসনকে হাসপাতালে পাঠানোর ব্যবস্থা করেন।
হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার পর তাৎক্ষনিকভাবে খালেদা জিয়ার হৃৎপিণ্ডের কয়েকটি পরীক্ষা করা হয়।
পরে সাংবাদিকদের বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘এই মুহূর্তে ম্যাডামের অবস্থা স্থিতিশীল। পরীক্ষা নিরীক্ষা করার পর, বিশেষ করে এনজিওগ্রাম করার পর বুঝা যাবে তার সমস্যাটা কতটা জটিল।’
২০২১ সালের এপ্রিলে কোভিড আক্রান্ত হওয়ার পর এ নিয়ে বেগম খালেদা জিয়াকে পাঁচ দফায় হাসপাতালে ভর্তি করা হলো। গত ৬ এপ্রিল নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য তাকে একই হাসপাতালে নেওয়া হয়েছিল। এর আগে চিকিৎসকরা বেগম জিয়ার 'পরিপাকতন্ত্রে' রক্তক্ষরণ এবং লিভার সিরোসিসে আক্রান্ত হওয়ার কথা জানান। তিনি দীর্ঘদিন ধরে আর্থ্রাইটিস, ডায়াবেটিস, কিডনি, ফুসফুস, চোখের সমস্যাসহ নানা জটিলতায় ভুগছেন।
৭৬ বছর বয়সী খালেদা জিয়া দীর্ঘ কয়েক বছর ধরে আর্থ্রাইটিস, ডায়াবেটিস, কিডনি, ফুসফুস, চোখের সমস্যাসহ নানা জটিলতায় ভুগছেন।
বিভি/এনএ
মন্তব্য করুন: