• NEWS PORTAL

বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ ২০২৪

খালেদা জিয়ার কোনো অঘটন ঘটলে পরিণতি কঠিন হবে

প্রকাশিত: ১৬:৩৮, ১২ জুন ২০২২

ফন্ট সাইজ
খালেদা জিয়ার কোনো অঘটন ঘটলে পরিণতি কঠিন হবে

বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, খালেদা জিয়ার কোনো অঘটন ঘটলে তার পরিণতি কঠিন হবে।রবিবার দুপুরে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে এক বিক্ষোভ সমাবেশে তিনি এই হুঁশিয়ারি দেন।

এ সময় মির্জা বলেন, ‘আমি বলতে চাই, সরকারকেই দায় নিতে হবে। আজকে দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার আল্লাহ না করুক যদি কোনোরকম অঘটন ঘটে তাহলে এদেশের মানুষ আপনাদের ক্ষমা করবে না। টেনে হিঁচড়ে ক্ষমতা থেকে নামিয়ে দেবে।’

তিনি বলেন, ‘আমি শুধু পরিস্কার বলতে চাই যে, আমাদের শেষ কথা অবিলম্বে দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে মুক্তি দিন। তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশে পাঠান। অন্যাথায় তার সমস্ত দায়-দায়িত্ব আপনাদের নিতে হবে।’

খালেদা জিয়া হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে বর্তমানে বসুন্ধরার এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। গতকাল তার হৃৎপিণ্ডে একটি ব্লক অপসারণ করে স্টেন্ট বসানো হয়েছে।

মহানগর উত্তর-দক্ষিণ বিএনপির উদ্যোগে অসুস্থ খালেদা জিয়াকে উন্নত চিকিৎসার দ্রুত বিদেশে প্রেরণ ও তার মুক্তির দাবিতে এই  সমাবেশে হয়। এতে রাজধানীর বিভিন্ন ওয়ার্ড থেকে কয়েক হাজার নেতা-কর্মী ব্যানার-ফেস্টুন নিয়ে সমাবেশে আসে।

মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ‘কেন দেশনেত্রীকে আটক রাখা হয়েছে, কেন তাকে চিকিৎসার সুযোগ দেওয়া হচ্ছে না? যখন তাদের (সরকার) সলিম উদ্দিন-কলিম উদ্দিন বিদেশে গিয়ে চিকিৎসা করে, সাজাপ্রাপ্ত লোকেরা বিদেশে গিয়ে চিকিৎসা করে। কেউ এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে যায়! তখন বাংলাদেশের এই জনপ্রিয় নেতা, যিনি গণতন্ত্রের জন্য নিজের সারা জীবন উৎসর্গ করেছেন তাকে বিদেশে চিকিৎসা নিতে দেওয়া হয় না কেনো?’

মির্জা ফখরুল বলেন, ‘কারণ তিনি (খালেদা জিয়া) হচ্ছেন এই ফ্যাসিবাদী সরকারের, এই আওয়ামী লীগের সবচেয়ে বড় ভয়। দেশনেত্রী যদি বেরিয়ে আসেন, তিনি যদি রাস্তায় নামেন, তিনি যদি মানুষকে ডাক দেন, সেই ডাকে ব্যাবিলনের সেই বংশীবাদকের মতো সব মানুষ বের হয়ে আসে রাস্তায়। সেজন্য তারা (সরকার) তাকে আটকে রেখেছে।’

মিথ্যা মামলা দিয়ে সরকার খালেদা জিয়াকে আটকে রেখেছে মন্তব্য করে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘মূল কারণ হলো তাকে রাজনীতি থেকে সরিয়ে দেওয়া। এই্ ভয়াবহ দানবীয় ফ্যাসিস্ট সরকার এবং তার অবৈধ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তিনি অত্যন্ত পরিকল্পিতভাবে বিচার বিভাগকে নিয়ন্ত্রণ করে, প্রশাসনকে নিয়ন্ত্রণ করে, দুদককে নিয়ন্ত্রণ করে দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে সাজা দিয়ে আটক করে রেখেছেন।’

খালেদা জিয়ার সর্বশেষ অবস্থা জানিয়ে বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘আমাদের চিকিৎসকদের অত্যন্ত সময়োচিত পদক্ষেপের এবং চিকিৎসার কারণে অতি দ্রুত স্টেন্টিং করে তার জীবন বাঁচানো হয়েছে। এটাই তার শেষ না। তার অনেক অসুখ আছে। লিভার সিরোসিস আছে, আর্থ্রাইটিস আছে, হার্ট ডিজিজ আছে, কিডনি ডিজিজ। এর জন্য দরকার উন্নত চিকিৎসা কেন্দ্র। সেটা আমাদের দেশে নেই।’

‘ডাক্তাররা বলেছেন, তাকে উন্নত মেডিকেল সেন্টারে নিয়ে যাওয়া দরকার। যেটা বিদেশে আছে। সেজন্য আজকের এই প্রতিবাদ সভা। আমরা বার বার সরকারকে অনুরোধ করেছি, আন্দোলন করেছি, কর্মসূচি দিয়েছে। এখন সোজা কথায় বলতে চাই, কালকে ওবায়দুল কাদের সাহেব বলেছেন, সরকার কোনো দায় নেবে না। আমি স্পষ্ট বলতে চাই, সরকারকেই দায় নিতে হবে।’

‘কারো কাছে আমি মাথা নত করিনি’-প্রধানমন্ত্রীর এই বক্তব্য খণ্ডন করে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘এরশাদ সাহেব ১৯৮২ সালের ২৪ মার্চ যখন ক্ষমতা দখল করেন তখন উনি (শেখ হাসিনা) বলেছিলেন, উই আর নট আনহ্যাপী, আমরা অখুশি নই। আবার ১/১১ যখন অবৈধ সেনা সমর্থিত সরকার হলো তখন আপনি এয়ারপোর্টে ঘোষণা দিয়েছিলেন এই অবৈধ সরকারের সব অবৈধ কাজকে বৈধ করে দেবেন।’

তিনি বলেন, ‘আমাদের মেমোরি এখনও শর্ট (কমে যায়নি) হয়নি। সেজন্য আমরা বলি যে, আপনারা বরাবরই আঁতাত করে ক্ষমতায় এসেছেন। আপনারা বরাবরই ওই শক্তির সঙ্গে আঁতাত করেছেন যারা বাংলাদেশের বিরুদ্ধে অবস্থান গ্রহণ করে, যারা বরাবরই গণতন্ত্রকে ধবংস করে।’

বর্তমান সরকারকে অবশ্যই পদত্যাগ করে নিরপেক্ষ সরকারের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তর করতে হবে উল্লেখ করে আন্দোলনের জন্য সকলকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহবান জানান মির্জা ফখরুল।
 
মহানগর উত্তরের আহবায়ক আমান উল্লাহ আমানের সভাপতিত্বে এবং সদস্য সচিব আমিনুল হক ও রফিকুল আলম মজনুর সঞ্চালনায় সমাবেশে বিএনপির রুহুল কবির রিজভী, মীর মোহাম্মদ নাসির, হাবিবুর রহমান হাবিব, আবুল খায়ের ভুঁইয়া, মাহবুব উদ্দিন খোকন, খায়রুল কবির খোকন, ফজলুল হক মিলন, আবদুস সালাম আজাদ, শিরিন সুলতানা, মীর সরফত আলী সপু, মোস্তাফিজুর রহমান বাবলু, নাজিম উদ্দিন আলম, সাইফুল আলম নিরব, মীর নেওয়াজ আলী, মহিলা দলের আফরোজা আব্বাস, যুব দলের সুলতান সালাহউদ্দিন টুকু, স্বেচ্ছাসেবক দলের মোস্তাফিজুর রহমান, কৃষক দলের হাসান জাফির তুহিন, শ্রমিক দলের আনোয়ার হোসেইন, তাঁতী দলের আবুল কালাম আজাদ, মৎস্যজীবী দলের আবদুর রহিম, ছাত্রদলের সাইফ মাহমুদ জুয়েল, মহানগর বিএনপির ইশরাক হোসেন, আনোয়ারুজ্জামান আনোয়ার, তানভীর আহমেদ রবিন, ফেরদৌসী আহমেদ মিষ্টি, আরিফা সুলতানা রুমা প্রমূখ বক্তব্য রাখেন।

সমাবেশে শামীমুর রহমান, মোরতাজুল করীম বাদরু, সুলতানা আহমেদ, হেলেন জেরিন খান, মুনায়েম মুন্না, মামুন হাসান, আবদুল কাদির ভুঁইয়া জুয়েল, শহিদুল ইসলাম বাবুল, মীর নেওয়াজ আলীসহ মহানগর নেতারা উপস্থিত ছিলেন।

বিভি/এনএ

মন্তব্য করুন: