• NEWS PORTAL

  • বুধবার, ৩০ এপ্রিল ২০২৫

Inhouse Drama Promotion
Inhouse Drama Promotion

অন্যায়ভাবে কুকুর-বিড়াল হত্যা, যা বলছে ইসলাম

প্রকাশিত: ১৭:০৫, ১১ ডিসেম্বর ২০২৪

আপডেট: ১৭:৫৩, ১১ ডিসেম্বর ২০২৪

ফন্ট সাইজ
অন্যায়ভাবে কুকুর-বিড়াল হত্যা, যা বলছে ইসলাম

সম্প্রতি খাবারের সাথে বিষ প্রয়োগে করে রাজধানীর জাপান গার্ডেন সিটিতে মেরে ফেলা হয়েছে বেশ কয়েকটি  কুকুর ও বিড়াল। ২২ নভেম্বর শুক্রবার রাতে এই ঘটনা প্রকাশ পেলে সামাজিক মাধ্যমে শুরু হয় সমালোচনার ঝড়। ইতমধ্যে সচেতন নাগরিক সমাজ রাজধানীর মোহাম্মদপুর থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেছেন।

দেশের প্রচলিত আইনে তো বটেই, ইসলামের দৃষ্টিতেও এমন ঘটনা একটি গুরুত্বর অপরাধ। চলুন জেনে নেই পশু পাখির অধিকার ও অন্যায় ভাবে তাদের হত্যা নিয়ে কি বলা আছে ইসলামে।

রাসুল (স) বলেন, “কোন পশুর প্রতি যদি কেউ দয়া দেখায়, তাহলে সে যেন কোন মানুষের প্রতি দয়া দেখাল, আর কোন পশুর উপর যদি কেউ নির্যাতন করে তাহলে যেন সে কোন মানুষের প্রতি নির্যাতন করলো।” [মিশকাত আল মাসাবিহ] 

মহানবী (স) এর এই হাদিসটি থে স্পষ্টভাবেই বুঝা যাচ্ছে যে তিনি পুশুদের অধিকার কোনভাবেই মানুষের অধিকার থেকে খাটো করে দেখেননি। এমনকি মহান আল্লাহ কোরয়ানেও গুরুত্বের সাথে পশু অধিকার নিয়ে কথা বলেছেন। 

পবিত্র  কোরআনের ৬ নম্বর সুরার নাম করণ করা হয়েছে ‘সুরা আন’আম’ যার অর্থ ‘গৃহপালিত পশু’। এই সুরায় আল্লাহ বিষদভাবে বর্ণনা করেছেন পশুপাখির প্রতি মানুষের করণীয় নিয়ে। সুরার ৩৮ নম্বর আয়াতে আল্লাহ বলেন, “পৃথিবীতে বিচরণকারী সমস্ত জীব এবং আকাশে ডানা ঝাপটে উড়া পাখিরাও তোমাদের মতই সম্প্রদায়। কিতাবে কোনকিছুই আমি বাদ দেইনি। অতঃপর স্বীয় প্রতিপালকের দিকে তাদেরও একত্র করা হবে।” [সুরা আন’আম, আয়াত-৩৮]

এই আয়াত ও হাদিসের বিভিন্ন বর্ণা থেকে পাওয়া যায় যে, যদিও মানুষ ও জ্বিন ছাড়া অন্য প্রাণিদের পরকাল নেই, তবুও কেয়ামতের দিন সব পশুপাখিদেরও পুনঃজীবিত করা হবে। সেদিন শোনা হবে তাদের অভিযোগ ও ফরিয়াদ। অর্থাৎ, যদি কেউ দুনিয়ায় তাদের সাথে খারাপ আচরণ করে, তাদের কষ্ট দেয়, হত্যা করে তার ন্যায় বিচার তারা পাবে আবার যদি কেউ তাদের প্রতি মায়া দেখায়, খাবার দেয় বা যত্ন করে, তার প্রতিদানও পাবে। 

এছাড়াও মহানবী (স) এর দুইটি বিখ্যাত হাদিস রয়েছে পশু অধিকার নিয়ে। আবু হোরায়রা (র) থেকে বর্ণিত, রাসুল (স) বলেন, “একবার এক পতিতা একটা কুয়ার পাশ দিয়ে যাচ্ছিলেন। তিনি দেখলেন পাশেই একটা কুকুর পিপাসায় মৃতপ্রায় অবস্থায় পরে আছে। তার মায়া হয়। তিনি নিজের জুতা খুলে তা তার মাথার কাপড়ের সাথে বেধে কুয়া থেকে পানি উঠিয়ে কুকুরটাকে খাওয়ান। আর তার এই কাজের জন্য আল্লাহ তাকে জান্নাত দান করেন।” [সহীহ বুখারি ৩৩২১] অর্থাৎ আল্লাহ’র সৃষ্টি এক প্রাণীর প্রতি দয়া দেখানোর কারণে ওই নারীর সারা জীবনের গুনাহ আল্লাহ ক্ষমা করে দিয়েছেন ও তাঁকে জান্নাত দান করেছেন।

আবার বিপরীত একটা হাদিসও আছে। আবু হোরায়রা (র) থেকে বর্ণিত, রাসুল (স) বলেন, “একজন মহিলা জাহান্নামের আগুনে প্রবেশ করেছে একটি বিড়ালের জন্য। সে বিড়ালটিকে বন্দি করে রেখেছিল। তাঁকে খেতেও দেয়নি, খাবার খোঁজার জন্য ছেড়েও দেয়নি, যতক্ষণ না বিড়ালটি মারা যায়।” [সহীহ মুসলিম ২৬১৯]

উল্লেখিত আয়াত ও হাদিস থেকে একটি বিষয় পরিষ্কার যে, ইসলামে প্রাণিদের অধিকার কোনভাবেই মানুষের অধিকার থেকে খাট করে দেখা হয়নি। যদি কেউ কোন পশু-পাখির প্রতি দয়া দেখান, শেষ বিচারের দিন আল্লাহও তার প্রতি দয়া দেখাবেন। কিন্তু যদি কেউ পশু-প্রাণির সাথে নির্মম আচরণ করেন, আল্লাহও তার সঠিক বিচার করবেন। মহান আল্লাহ আমাদের সবাইকে বুঝার তৌফিক দিক।

মন্তব্য করুন:

সর্বাধিক পঠিত
Drama Branding Details R2
Drama Branding Details R2