• NEWS PORTAL

  • সোমবার, ১০ নভেম্বর ২০২৫

বিশ্বে প্রথমবার দৃষ্টি প্রতিবন্ধীদের নিয়ে প্যালিয়েটিভ কেয়ার প্রশিক্ষণ

প্রকাশিত: ১৯:৫১, ৯ নভেম্বর ২০২৫

আপডেট: ১৯:৫১, ৯ নভেম্বর ২০২৫

ফন্ট সাইজ
বিশ্বে প্রথমবার দৃষ্টি প্রতিবন্ধীদের নিয়ে প্যালিয়েটিভ কেয়ার প্রশিক্ষণ

“20 Hours Training for Carer” সম্পন্ন করলেন ১৫ জন দৃষ্টি প্রতিবন্ধী এবং ৩ জন সহকারী, তাদের দৃষ্টি প্রতিবন্ধী স্কুলের শিক্ষকরা এবং দৃষ্টি প্রতিবন্ধী সন্তানের মাও ছিলেন অংশগ্রহণকারী দলে।  

তিন দিনব্যাপী এই প্রশিক্ষণ (০৭ নভেম্বর থেকে ০৯ নভেম্বর) আয়োজন করে ইনস্টিটিউট অব প্যালিয়েটিভ কেয়ার-বাংলাদেশ (আইপিসি-বি)। উল্লেখ্য, দৃষ্টি প্রতিবন্ধীদের জন্য ব্রেইল বই প্রকাশ করে। আইপিসি-বি,  প্যালিয়েটিভ কেয়ার সোসাইটি অব বাংলাদেশ (পিসিএসবি) এর একটি প্রকল্প। যা সমাজকল্যাণ অধিদপ্তরের অধীনে ২০১৩ সাল থেকে  নিবন্ধিত, উপরন্তু ২০২৫ সালে তা জনকল্যাণমূলক প্রতিষ্ঠান হিসেবে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড কর্তৃক রেয়াত পেয়েছে। 

সংগঠনের সদস্য সচিব অধ্যাপক ডা. সানজিদা শাহরিয়ার পরিকল্পনায় আয়োজিত প্রশিক্ষণ কর্মসূচিটি বাস্তবায়নের সহযোগিতায় এগিয়ে আসেন ‘রিয়েল ভিউ’য়ের প্রধান ব্যক্তিত্ব ফাহিমা খাতুন। দৃষ্টি প্রতিবন্ধী নারী এবং শিশুদের নিয়ে কাজ করে রিয়েল ভিউ নামে এই সংগঠন।

উক্ত প্রশিক্ষণ অনুষ্ঠিত হয় মিরপুরে অবস্থিত ব্যাপ্টিস্ট মিশন ইন্টিগ্রেটেড (বিএমআইএস) এর প্রশিক্ষণ কক্ষে।  প্রশিক্ষণ শেষে অংশগ্রহণকারীদের সনদ প্রদান করা হয়। সনদ বিতরণ অনুষ্ঠানে উপস্থিত অতিথিদের মধ্যে প্যালিয়েটিভ কেয়ার সোসাইটি অব বাংলাদেশ (পিসিএসবি) এর সদস্য সচিব অধ্যাপক ডা. সানজিদা শাহরিয়া বলেন, “এই প্রশিক্ষণ মানবিক স্বাস্থ্যসেবায় এক নতুন অধ্যায়ের সূচনা করেছে। দৃষ্টি প্রতিবন্ধীদের প্যালিয়েটিভ কেয়ারে যুক্ত করা অন্তর্ভুক্তিমূলক সমাজ গঠনের গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ, যা বাংলাদেশকে উদাহরণ হিসেবে প্রতিষ্ঠিত বিশ্বের সম্মুখে প্রতিষ্ঠিত করতে সক্ষম হবে।”

ব্যাপ্টিস্ট মিশন ইন্টিগ্রেটেড স্কুলের অধ্যক্ষ গ্লোরিয়া চন্দ্রাণী বাড়ৈ বলেন, “আমাদের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এমন মানবিক প্রশিক্ষণের অংশ হতে পেরে সত্যিই গৌরব অনুভব করছি। এই উদ্যোগ শুধু অংশগ্রহণকারীদের নয়, আমাদের শিক্ষার্থীদের মধ্যেও অনুপ্রেরণা, সহমর্মিতা ও সামাজিক দায়িত্ববোধ বৃদ্ধি করবে। কারণ ৭০-এর দশকে প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে এই প্রতিষ্ঠান দৃষ্টি প্রতিবন্ধীদের সাথে স্বাভাবিক শিশুদের একত্রে নিয়ে কাজ করছে।” 

তিনি আরও বলেন, “১৯৭৭ সালে রেভা. ভেরনিকা এন ক্যাম্পবেল। দৃষ্টি প্রতিবন্ধীদের জন্য এই ব্যাপ্টিস্ট মিশন ইন্টিগ্রেটেড স্কুল প্রতিষ্ঠা করেন যা বাংলাদেশের প্রথম দৃষ্টি প্রতিবন্ধীদের আবাসিক সুবিধাও দেয়। এখান থেকেই প্রথম ব্রেইল বই এর প্রচলন শুরু হয় বাংলাদেশে।”

ইনস্টিটিউট অব প্যালিয়েটিভ কেয়ার, বাংলাদেশের পরিচালক অধ্যাপক ডা. নিজামউদ্দিন আহমদ বলেন, “সত্যিই আজ আমি অভিভূত। বিশ্বে যেখানে কেউ এই বিশেষ সীমাবদ্ধ মানুষদের নিয়ে ভাবেনি— সেখানে আমরা এই বিশেষভাবে সীমাবদ্ধ মানুষদের নিয়ে একটি বিশেষায়িত সেবার প্রশিক্ষণ সফলভাবে সম্পন্ন করতে পেরেছি। এই সাফল্যের মূল কৃতিত্ব অবশ্যই প্রশিক্ষণার্থীদের।  তাদের আন্তরিক অভিনন্দন জানাই। আশা করি বাংলাদেশের এই ধারণা আগামীতে বিশ্বের অন্যান্য দেশেও বিস্তার লাভ করবে।”

অনুষ্ঠানের শেষাংশে ব্যাপ্টিস্ট মিশন ইন্টিগ্রেটেড স্কুলের শিক্ষার্থীদের পরিবেশনায় মনোমুগ্ধকর সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান উপভোগ করেন অতিথি ও অংশগ্রহণকারীবৃন্দ। সনদপ্রদান অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন- পিসিএসবি’র কোষাধ্যক্ষ সালাহউদ্দীন আহমাদ, ডা. নূরজাহান বেগম, ডা. তাসনিম জেরিন, ডা. সীমা রাণী সরকার, ডা. নাদিয়া ফারহীন, লেখক আসিফ নবী, খালিদ আরাফাত অব্যয়, ফারজানা মালা, শাহাদৎ রুমন প্রমুখ।

বিভি/এজেড

মন্তব্য করুন: