মেহের গোদাখালের বিভিন্ন অংশ দখলের অভিযোগ
চাঁদপুরের শাহরাস্তি উপজেলার সাহাপুর, ঠাকুর বাজার (নিজ মেহের), কাজির কামতা মৌজায় প্রবাহিত মেহের গোদা খালটি গুরুত্বপূর্ণ হলেও এর বিভিন্ন অংশ ভরাট করে স্থায়ীভাবে দখল করে নিয়েছেন প্রভাবশালী ব্যক্তিরা। আবার কেউ কেউ ময়লা-আবর্জনা দিয়ে খাল ভরাট করে দখলের চেষ্টা করছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। এতে করে খাল সংকুচিত হয়ে যাচ্ছে এবং ময়লা-আবর্জনায় পরিবেশ দূষিত হচ্ছে।
সম্প্রতি এলাকার বেশ কয়েকজন সাধারণ মানুষের সঙ্গে কথা বললে তারা জানান, মেহের গোদা খালটি একসময় শাহরাস্তিবাসীর আশীর্বাদ ছিল। এই খাল দিয়ে বৃষ্টি ও বন্যার পানি দ্রুত নিষ্কাশন হতো। চাঁদপুর ও হাজীগঞ্জ থেকে বড় বড় নৌকা দিয়ে এখানকার ব্যবসায়ীদের জন্য এ খাল দিয়ে পণ্য আসতো। খালের পাড়ে কোনো স্থাপনা ছিল না। আর এখন একদিকে ময়লা-আবর্জনা দুর্গন্ধ, অন্যদিকে খাল ভরাট হওয়ার কারণে বৃষ্টির জমে থাকা পানি নিষ্কাশন হচ্ছে না। এতে করে সবাইকে মারাত্মক দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। অনেক প্রভাবশালী ব্যক্তি অবৈধভাবে খালটি দখল করে রেখেছে। গড়ে তুলেছে বিভিন্ন স্থাপনা। দ্রুত খালটি দখলমুক্ত করে সংস্কার করে দেওয়ার দাবি জানান তারা।
শাহরাস্তি উপজেলার নির্বাহী অফিসার মো. ইয়াসির আরাফাত জানান, পানি নিষ্কাশনের ক্ষেত্রে মেহের গোদা খাল খুবই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে শাহরাস্তি পৌরসভা এলাকার। সম্প্রতি এ খালের বিভিন্ন অংশ প্রভাবশালী কর্তৃক দখল হয়ে যায়। তাই এই বিষয়ে আমরা পদক্ষেপ নিচ্ছি এবং তাদেরকে আমরা নোটিশ দিচ্ছি। এরপরও যদি তার না উঠে যায়, তাহলে তাদের প্রতি আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এদিকে গত বুধবার দুপুরে শাহরাস্তি পৌর প্রশাসক ও চাঁদপুরের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) মোস্তাফিজুর রহমান মেহের গোদা খাল পরিদর্শনে আসেন। এ সময় তিনি বলেন, বিভিন্ন সময় মানুষের অসচেতনতার কারণে কারো কারো দখল দারিত্বের মনোভাবের কারণে খালের বিভিন্ন পয়েন্টে বাঁধার সৃষ্টি হয়েছে। যে কারণে পানিটা স্বাভাবিকভাবে প্রবাহিত হচ্ছে না। অতীতে যারা খাল দখল করেছে, আমরা সেগুলো দখলমুক্ত করব। আপাতত যেখানে বেশি দখল করা আছে সেগুলো আমরা অপসারণ করব। আইনি প্রক্রিয়ায় ওই দখলীয় খাল পুনরুদ্ধার করে অবৈধ ব্যক্তি ও দখলদারদেরকে উচ্ছেদ করা হবে।
পরে তিনি স্থানীয় জনপ্রতিনিধি গণমাধ্যম কর্মী, সুশীল সমাজের ব্যক্তিদের নিয়ে পৌর শহরের ঠাকুর বাজারস্থ গরু বাজার সংলগ্ন পৌরসভার বর্জ্য ফেলার (ক্রয়কৃত স্থানটি) পরিদর্শন করেন। একই সময় ওই বাজারের কসাইখানা, জবাই খানা, মাংস বাজার, মেহের গোদা খালের দখলিও বিভিন্ন অংশের স্থান, পানি ও পয়ঃনিষ্কাশন ব্যবস্থাপনা পরিদর্শন করেন।
সম্পূর্ণ সরকারি সম্পত্তি রক্ষায় শত বছরের পুরনো খালটি পরিষ্কার, খননসহ সংস্কার এবং সম্পূর্ণ দখলমুক্ত করার জোর দাবি জানিয়েছেন এলাকাবাসী।
বিভি/এজেড
মন্তব্য করুন: