• NEWS PORTAL

  • শুক্রবার, ০৬ জুন ২০২৫

Drama: Jamai Bou Chor
Drama: Jamai Bou Chor

প্লাবন ও পাহাড় ধ্বসে রাঙ্গামাটির ২ হাজারের বেশি বাড়িঘর ক্ষতিগ্রস্ত

প্রকাশিত: ০৯:২৬, ২ জুন ২০২৫

আপডেট: ০৯:২৭, ২ জুন ২০২৫

ফন্ট সাইজ
প্লাবন ও পাহাড় ধ্বসে রাঙ্গামাটির ২ হাজারের বেশি বাড়িঘর ক্ষতিগ্রস্ত

ছবি: সংগৃহীত

গত তিনদিনের ভারী বর্ষণে রাঙ্গামাটির মানুষের জনজীবনে ভোগান্তি নেমে এসেছে। বৃষ্টির ফলে পুরো রাঙ্গামাটি জুড়ে পাহাড় ধ্বসের শঙ্কা বেড়ে গেছে। সরকারি হিসাব মতে প্লাবন ও পাহাড় ধ্বসে রাঙ্গামাটির ২ হাজারের বেশি বাড়ীঘর ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। রাঙ্গামাটির জুরাছড়ি উপজেলার জামুরাছড়ি গ্রামের পানছড়ি ছড়া থেকে ঢলের পানিতে ভেসে আসা এক ব্যাক্তির লাশ উদ্ধার করেছে গ্রামবাসী। 

স্থানীয় আবহাওয়া পর্যবেক্ষণ কেন্দ্রের তথ্য বলছে ২৯ মে ২০২৫ হতে ১ জুন ২০২৫ (সন্ধ্যা ৬.০০ টা) পর্যন্ত সর্বমোট বৃষ্টিপাত হয়েছে ৩৮৮ মিলিমিটার। এই ভারী বর্ষণে রাঙ্গামাটির বেশ কিছু স্থানে ছোট ছোট পাহাড় ধসের ঘটনা ঘটেছে। ঝুঁকিতে বসবাসকারীদের আশ্রয় কেন্দ্রে নিয়ে যেতে কাজ করছে প্রশাসন। 

রাঙ্গামাটির জুরাছড়ি উপজেলার জুরাছড়ি ইউপি চেয়ারম্যান ইমন চাকমা ও সংশ্লিষ্ট কাব্বারী ললিক চাকমা জানান, গত কয়েক দিনের টানা বর্ষণে উপজেলার মৈদং ইউনিয়নের জামুরাছড়ি গ্রামের পানছড়ি ছড়া থেকে ব্যক্তির লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। তবে মৃত ব্যক্তির নাম পরিচয় জানা যায়নি।

রাঙামাটি সদর উপজেলা প্রশাসনের তথ্য মতে, পৌর এলাকার ২৬টি আশ্রয়কেন্দ্রের মধ্যে মাত্র ৩ টি আশ্রয় কেন্দ্রের মোট ২৪৬ জন অবস্থান করছে। অপর দিকে রাতে রাঙ্গামাটি-চট্টগ্রাম সড়কের বেশ কিছু সড়কে পাহাড় ধসের ঘটনা ঘটে। সড়ক বিভাগ দ্রুত মাটি সরিয়ে নিলে স্বাভাবিক হয় যান চলাচল।

এছাড়া চলমান ভারী বর্ষণে সদর উপজেলা সাপছড়ি ইউনিয়নের বোধিপুরসহ বেশ কয়েকটি গ্রামে জলবদ্ধ সৃষ্টি হয়েছে এতে বিপাকে পড়েছে এসব এলাকার বাসিন্দারা।

সবিতা চাকমা বলেন, গত কয়েক দিনের ভারী বর্ষণে আমাদের দুর্ভোগ বেড়ে গেছে। ঘরে পনি ঢুকে মালামাল নষ্ট হয় গেছে। রান্না করা মতো জায়গাও নেই। খুব কষ্টের মধ্যে আছি। মনে করেন এক ঘন্টা ভারী বৃষ্টি হলে পানি ঘরে ঢুকে যায়। গত তিন দিনে গড়ে প্রতিদিন চার থেকে পাঁচ বার ঘর পরিষ্কার করতে হয়েছে। আমাদের এই কষ্ট কবে শেষ হবে জানি না।

সাপছড়ি ইউনিয়ন স্বাস্থ্য পরিবার কল্যাণ কেন্দ্রের নিরাপত্তা প্রহরী কীর্তন চাকমা বলেন, আমাদের এই কেন্দ্রটি ভারী বর্ষণ হলেই ডুবে যায়। এতে সেবা দিতে পারেন না কর্মকর্তার। এতো পানি হয় যে চেয়ার পর্যন্ত ডুবে যায়। রোগীদের সেবা দেওয়ার কোনো সুযোগ থাকে না। একবার পানি উঠলে কমতে ৩ থেকে ৪ ঘন্টা সময় লাগে।

সাপছড়ি ৩নং ওয়ার্ডের মেম্বার ফুটন্ত চাকমা বলেন, আমার এই ওয়ার্ডের তিনটি গ্রামের অবস্থা খুবই খারাপ। যেখানে প্রায় দুইশ পরিবার বাস করে। বৃষ্টি হলেই ঘরবাড়ি তলিয়ে যায়। এলাকাবাসীর প্রচুর ক্ষতি হয়। খাল ভরাট হওয়ায় এই ভোগান্তি। জেলা প্রশাসন ও পানি উন্নয়ন বোর্ডের কাছে দাবি জানাচ্ছি এই খালটি খননের ব্যবস্থা করেন। যাতে এই দুর্ভোগ থেকে এলাকাবাসী মুক্তি পায়।

তাছাড়া জেলার বাঘাইছড়ি, জুরাছড়ি, বরকল, বিলাইছড়ির কিছু নিচু এলাকায় জলাবদ্ধতার খবর পাওয়া গেছে।

অন্য দিকে রবিবার বিকালে বিভিন্ন ঝুঁকিপূর্ণ এলাকা ও আশ্রয় কেন্দ্র পরিদর্শন করেছেন জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ হাবিব উল্লাহ। পরিদর্শন শেষে তিনি সাংবাদিকদের বলেন, ভারী বর্ষণে পাহাড়ধসের ঝুঁকি রয়েছে। তাই আমরা সর্বোচ্চ সতর্কতা অবলম্বন করছি। আমাদের বেশ কয়েকটি টিম মাঠে কাজ করছে। এই টিমে ফায়ার সার্ভিস, স্বেচ্ছাসেবক, স্কাউট, রেড ক্রিসেন্ট সদস্যরা রয়েছেন। এছাড়াও সদরের জন্য চারটি কুইক রেস্পন্স টিম গঠন করা হয়েছে। ১০ সদস্যের প্রতিটি টিমে একজন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট, পুলিশ বিভাগের ৩ ফায়ার সার্ভিস ২, স্বেচ্ছাসেবক টিম লিডার দুই ও দুইজন স্কাউট সদস্য রয়েছেন। তিনি আরো বলেন, জেলায় মোট ২৪৬টি আশ্রয় কেন্দ্র খোলা হয়েছে। বর্তমানে ২৪৬ জন আশ্রয় কেন্দ্রে অবস্থান করছেন। তাদের খাবারের ব্যবস্থাও করা হয়েছে।

জেলা প্রশাসক বলেন, জেলার কিছু নিম্নাঞ্চলে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়েছে। সে বিষয়েও আমাদের প্রস্তুতি আছে। উপজেলা নির্বাহী আফিসারদের দেওয়া নির্দেশনা মোতাবেক তার কাজ করে যাচ্ছেন।


 

বিভি/এআই

মন্তব্য করুন: