ফেনীতে প্লাস্টিকবিরোধী জনসংযোগ
‘আমাদের বাঁচতে হলে প্লাস্টিক প্রতিরোধ করতেই হবে’

প্লাস্টিক মানুষের শরীরে ক্যান্সারের সৃষ্টি করছে। প্লাস্টিক বর্জ্য পোড়ানোর কারণে প্লাস্টিকের ক্ষতিকর কেমিকেল মানুষের দেহে প্রবেশ করে ফুসফুস নষ্ট করে দিচ্ছে। আমাদেরকে বাঁচতে হলে প্লাস্টিক প্রতিরোধ করতেই হবে বলে বলে মন্তব্য করে দেশব্যাপী প্লাস্টিকবিরোধী গণ আন্দোলন গড়ে তোলার আহ্বান জানিয়েছেন বায়ুমন্ডলীয় দূষণ অধ্যয়ন কেন্দ্রের (ক্যাপস) চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. আহমদ কামরুজ্জমান মজুমদার।
বৃহস্পতিবার (৫ জুন) বিশ্ব পরিবেশ দিবসে মিশন গ্রিন বাংলাদেশের আয়োজনে একইদিনে একযোগে ৬৪ জেলায় বৃক্ষরোপন কর্মসূচির অংশ হিসেবে ফেনীতে বৃক্ষরোপন, বৃক্ষ বিতরণ, প্লাস্টিকবিরোধী জনসংযোগ ও লিফলেট বিতরণকালে তিনি একথা বলেন।
দিনব্যাপী কর্মসূচিতে সকালে ফেনী জেলার সোনাগাজী উপজেলার ভোরবাজার এলাকায় বৃক্ষরোপন ও সচেতনতামূলক সভা অনুষ্ঠিত হয়। বিকেলে ফেনী শহিদ মিনার প্রাঙ্গণে প্লাস্টিকবিরোধী মানবববন্ধন, বৃক্ষ বিতরণ ও প্লাস্টিক ব্যবহার প্রতিরোধে লিফলেট বিতরণ করা হয়। জাতীয় পর্যায়ে এই কর্মসূচির সহ আয়োজক ছিল বাংলাদেশ পরিবেশ আইনবিদ সমিতি (বেলা), বায়ুমণ্ডলীয় দূষণ অধ্যয়ন কেন্দ্র (ক্যাপস), সেন্টার ফর ক্লাইমেট চেঞ্জ অ্যান্ড এনভায়রনমেন্টাল রিসার্চ (সিথ্রিইআর), ইয়্যুথ ফাউন্ডেশন অফ বাংলাদেশ, তরু পল্লব, স্বপ্নপুরী কল্যাণ সংস্থা ও ছাওয়াব ফাউন্ডেশন। এতে সারাদেশের ৬৪টি স্থানীয় সহযোগী সংগঠনের মধ্যে ছিল ফেনী জেলা স্বেচ্ছাসেবক পরিবার ও মানবসেবা সংস্থা ফেনী।
সেচ্ছাসেবী সংগঠক ওসমান গনী রাসেলের সঞ্চালনায় প্লাস্টিকবিরোধী জনসংযোগ ও লিফলেট বিতরণে প্রোগ্রামে প্রধান অতিথির বক্তব্যে পরিবেশবিজ্ঞানী অধ্যাপক ড. আহমদ কামরুজ্জমান মজুমদার বলেন, ফেনীর বিভিন্ন খাল এখন দখলে-দূষণে মৃত। এসব নদী খাল বন্ধের অন্যতম কারণ প্লাস্টিক দূষণ। প্লাস্টিক পড়ে খালগুলোর পানিপ্রবাহ বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। ফলে বৃষ্টির পানি সরতে পারছে না। এতে আমাদেরকে বার বার বন্যার মুখে পড়তে হচ্ছে। প্লাস্টিক দূষণে জেলার কৃষি জমিও উর্বরতা হারাচ্ছে।
তিনি বলেন, ফেনীবাসী বন্যাসহ নানান পরিবেশ বিপর্যয়ের হাত থেকে রক্ষা করতে হলে এখানকার প্রতিটি নদী, খাল ও জলাধারকে সিএস-আরএস দাগ ধরে উদ্ধার করতে হবে। নয়লে ফেনীকে বন্যা ঝুঁকি থেকে রক্ষা করা কোনোভাবেই সম্ভব না। এজন্য খালের দূষণ বন্ধে কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে। আর এটা করতে হলে প্লাস্টিকের ব্যবহার নিয়ন্ত্রণের বিকল্প নেই। জেলা প্রশাসনকে এ বিষয়ে জোরালো ভূমিকা রাখতে হবে। নাগরিক সমাজকেও শক্ত প্রতিবাদ গড়ে তুলতে হবে।
এ সময় তিনি পরিবেশ বিপর্যয় থেকে বাঁচতে সবাইকে ব্যাপকহার বৃক্ষ রোপনেরও আহ্বান জানান।
উক্ত আয়োজনে ইয়্যুথনেট গ্লোবালের কেন্দ্রীয় সমন্বয়ক (পরিবেশ ন্যায্যতা) মোহাইমিনুল ইসলাম জিপাত, ইউনাইটেড ট্রাষ্ট ফেনীর কো-কো-অর্ডিনেটর ফয়সাল ভূইয়া, বালিগাও ইউথ ফোরামের সভাপতি সাহাবুদ্দিন ভূইয়া, জিবা সমাজ কল্যান যুব ফাউন্ডেশনের সভাপতি এমদাদুল হক, কুটিরহাট সোসাইটির সভাপতি মনির উদ্দিন, ইকো রেভ্যুলেশন এর সভাপতি মেহরাজুল হক, ভলান্টিয়ার ফর বাংলাদেশ এর ফেনী জেলা কো-কো-অর্ডিনেটর জহিরুল ইসলাম পিয়াস, মানবসেবা সংস্থা ফেনীর সভাপতি এমদাদ উল্লাহসহ স্থানীয় বিভিন্ন পরিবেশ ও সেচ্ছাসেবী সংগঠনের প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।
বিভি/এসজি
মন্তব্য করুন: