• NEWS PORTAL

  • শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪

ইন্সপেক্টর মামুন হত্যা: আরাভসহ ৮ জনের বিরুদ্ধে বাদীর সাক্ষ্যগ্রহণ শেষ

প্রকাশিত: ১৯:৩৭, ২১ মার্চ ২০২৩

আপডেট: ১৯:৩৮, ২১ মার্চ ২০২৩

ফন্ট সাইজ
ইন্সপেক্টর মামুন হত্যা: আরাভসহ ৮ জনের বিরুদ্ধে বাদীর সাক্ষ্যগ্রহণ শেষ

আরাভ খান

পুলিশের স্পেশাল ব্রাঞ্চের (এসবি) ইন্সপেক্টর (পরিদর্শক) মামুন হত্যা মামলায় আসামি রবিউল ইসলাম ওরফে আরাভ খানসহ আটজনের বিরুদ্ধে মামলার বাদী জাহাঙ্গীর আলম খানের সাক্ষ্যগ্রহণ শেষ হয়েছে। 

মঙ্গলবার (২১ মার্চ) ঢাকা প্রথম অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ ফয়সল আতিক বিন কাদেরের আদালতে জেরার মধ্য দিয়ে তার সাক্ষ্যগ্রহণ শেষ হয়। এ নিয়ে মামলাটিতে ৩৮ জন সাক্ষীর মধ্য দিয়ে একজনের সাক্ষ্য শেষ হলো।

মামলার অন্য আসামিরা হলেন—সুরাইয়া আক্তার কেয়া, রহমত উল্লাহ, স্বপন সরকার, মিজান শেখ, আতিক হাসান, সারোয়ার হাসান ও দিদার পাঠান। এদের মধ্যে আরাভ ও কেয়া পলাতক রয়েছে।

এদিন কারাগারে আটক ছয় আসামিকে আদালতে হাজির করা হয়। এরপর তাদের উপস্থিতিতে মামলার বাদীকে জেরা করেন আসামিপক্ষের আইনজীবীরা। জেরা শেষে আদালত পরবর্তী সাক্ষ্যগ্রহণের জন্য আগামী ৪ জুন দিন ঠিক করেন। এর আগে ২০২২ সালের ২৮ জুলাই মামলার বাদী জাহাঙ্গীর আলমের জবানবন্দি রেকর্ড করেন আদালত।

২০১৮ সালের ৭ জুলাই বনানীতে খুন হন পুলিশ পরিদর্শক মামুন। ঘটনার তিন দিন পরে তার ভাই বাদী হয়ে হত্যা মামলা করেন। তদন্ত শেষে ২০১৯ সালের ৩১ মার্চ এ মামলায় রহমত উল্লাহ, রবিউল ইসলাম ওরফে আপন ওরফে সোহাগ ওরফে হৃদয় ওরফে হৃদিসহ ৮ জনের বিরুদ্ধে আদালতে চার্জশিট দেয় পুলিশ। ২০২১ সালের ২৫ নভেম্বর আদালত এ মামলার অভিযোগ গঠনের মাধ্যমে বিচার শুরুর আদেশ দেন।

মামলার চার্জশিটে বলা হয়, বনানীর ২ নম্বর সড়কের ৫ নম্বরের ওই বাসায় নিয়ে আসামি দিদার, স্বপন, রহমত উল্লাহ পুলিশ কর্মকর্তা মামুনের হাত-পা বেঁধে ফেলেন। পরে ওই তিন আসামির সঙ্গে মিজান, আতিক ও ছারোয়ার যুক্ত হয়ে মামুনকে নির্দয়ভাবে মারতে থাকেন। এতে মামুন অজ্ঞান হয়ে পড়েন। রাত ১০টার দিকে আসামি কেয়া (রবিউলের স্ত্রী), আফরিন ও মীম বাসা থেকে চলে যান। রাতের কোনো একসময় সেখান থেকে চলে যান রবিউলও। গভীর রাতে আসামি আতিক আসামি স্বপনকে ডেকে বলেন, ‘দাদা, দেখেন তো পুলিশ কর্মকর্তার হাত-পা কেমন শক্ত মনে হচ্ছে।’ ভোরবেলায় তারা নিশ্চিত হন যে মামুন মারা গেছেন। মামুন মারা যাওয়ার পর রহমত উল্লাহ সবাইকে বলেন, লাশ গুম না করলে তারা সবাই বিপদে পড়ে যাবেন। কারণ, মামুন তার বন্ধু। তিনি মামুনকে ফোন করে ডেকে এনেছেন। রহমত উল্লাহর মুঠোফোনের শেষ কলটিও তার (মামুন)। তখন স্বপন মুঠোফোনে রবিউলকে মামুনের মৃত্যুর বিষয়টি জানান। স্বপন বলেন, ‘এখন আমরা কী করব? আপনি সকালে এখানে আসেন।’

চার্জশিটে আরও উল্লেখ করা হয়, দুটি বস্তা ও একটি সাদা কাপড় নিয়ে বাসার নিচে আসেন রবিউল। তার কাছ থেকে বস্তা নিয়ে বাসার ওপরে যান দিদার। ওই সময় রহমত উল্লাহ, আতিক ও মিজানকে সঙ্গে নিয়ে বাসার নিচে গিয়ে তার ব্যবহৃত প্রাইভেট কারটি লিফটের দরজার কাছে নিয়ে রাখেন। সকাল ৭টার দিকে স্বপন, দিদার ও আতিক মিলে মামুনের লাশ লিফটে করে নিচে নামান। সবাই মিলে গাড়ির পেছনের অংশে লাশ তোলেন। পরে রহমত উল্লাহ ওই গাড়ি চালিয়ে বনানীর রোডে যান। গাড়িতে ছিলেন দিদার, স্বপন ও আতিক। সেখানে রবিউল, তার স্ত্রী আসামি কেয়া, মেহেরুন্নেছা ও মীমকে সঙ্গে নিয়ে একটি মোটরসাইকেলসহ অপেক্ষায় ছিলেন। পরে সেখান থেকে রবিউলের মোটরসাইকেল অনুসরণ করে রহমত উল্লাহ গাড়ি চালাতে থাকেন। খিলক্ষেতের একটি পাম্পে গিয়ে মোটরসাইকেলে তেল নিয়ে রবিউল ফিরে আসেন। আর গাড়ি নিয়ে রহমতউল্লাহ যান গাজীপুরের দিকে। ওই সময় রবিউলের সঙ্গে একাধিকবার মুঠোফোনে কথা বলেন দিদার ও স্বপন। গাজীপুরের শিমুলতলীতে দিদার, স্বপন ও আতিক একটি দোকান থেকে সাত লিটার পেট্রল কেনেন। রবিউল আসামি স্বপনের মুঠোফোনে টাকা পাঠান।

পরে রাত সাড়ে ৮টার দিকে উলুখোলা থেকে আবদুল্লাহপুর যাওয়ার পথে একটি বাঁশবাগানে পেট্রল ঢেলে মামুনের লাশ পুড়িয়ে দেওয়া হয়। এরপর গাড়ি নিয়ে সবাই ঢাকায় ফিরে আসেন।

বিভি/এসএইচ/টিটি

মন্তব্য করুন: