তদন্ত ঘিরে বেরোবিতে আন্দোলন, মুখ খুললো আবু সাঈদের পরিবার

বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের প্রথম শহীদ আবু সাঈদের হত্যাকাণ্ড নিয়ে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইবুনালের তদন্ত সংস্থার প্রতিবেদন চূড়ান্ত হবার খবরে আন্দোলন হয়েছে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে। ট্রাইবুনালের তৈরি করা তদন্ত প্রতিবেদন প্রকাশ হবার আগেই অসন্তোষের বার্তা দেয় বেরোবির একটি বিভাগের শিক্ষার্থীদের একাংশ।
প্রতিবেদন দাখিলের আগে গণশুনানি হয়নি প্রথমে এমন অভিযোগ তুলে ক্যাম্পাসে আন্দোলনের চেষ্টা করে কেউ কেউ। তবে সে আন্দোলনে আওয়ামী পন্থী শিক্ষক ও নিষিদ্ধ সংগঠন ছাত্রলীগের কর্মীদের উপস্থিতি থাকায় রংপুর জুড়ে শুরু হয় সমালোচনা।
তবে এবার তদন্ত ঘিরে আবু সাঈদের ক্যাম্পাসে আন্দোলন প্রসঙ্গে মুখ খুলেছে আবু সাঈদের পরিবার। তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের প্রাক্কালে কতিপয় শিক্ষার্থীর আন্দোলনে পারিবারিক অসন্তোষের কথাও জানান তারা। সম্প্রতি আবু সাঈদের ভাই আবু হোসেন জানান, ‘সাবেক প্রক্টর শরিফুল ইসলামের নাম তদন্তের জন্য দেওয়া হয়েছিল। তদন্ত কর্তৃপক্ষ হয়তো কিছু পেয়েছেন প্রক্টর শরিফুল স্যারের বিরুদ্ধে। প্রাথমিকভাবে সবাইকে অভিযুক্ত করা হয়। তারপর তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগের তদন্ত করা হয়। তদন্ত কর্তৃপক্ষের কাছে ওনার ঐ সময়ের কল রেকর্ডসহ যাবতীয় ডকুমেন্ট আছে বলেও জানান আবু হোসেন।’
এসময় শরিফুল ইসলামের বিরুদ্ধে তাদের কারও কোন রাজনৈতিক শত্রুতা নেই জানিয়ে আবু সাঈদের ভাই বলেন, ‘আমরা এই মামলায় সর্বোচ্চ সততা রক্ষা করার চেষ্টা করেছি। অন্যান্য মামলার মত এই মামলায় ১০০-২০০ আসামি করা হয়নি।’
তিনি আরও বলেন, ‘এই মামলায় আমরা যাদেরকে হত্যাকান্ডের সাথে প্রত্যক্ষ এবং পরোক্ষভাবে দায়বদ্ধ মনে করেছি তাদের নাম দিয়েছি। শুনানির সময় সাক্ষ্য প্রমাণের ভিত্তিতে আদালত নির্দোষ মনে করেন তাহলে তাকে আদালত জামিন দিবেন।’
আবু সাঈদের ভাই আরও জানান, ‘মামলা শুনানির সময় যদি প্রক্টর নির্দোষ প্রমাণিত হয় তাহলে তিনি জামিন পাবেন। আন্দোলনকারীরা সরাসরি যা চোখে দেখেছেন শুধু তাই জানেন। কিন্তু গোপনে যে ষড়যন্ত্র হয়েছে তা কি তারা জানেন? এমন প্রশ্নও ছুঁড়ে দেন আবু হোসেন। কিছু লোক আছে যারা উপরে উপরে সান্ত্বনা দেন বলেও যোগ করেন আবু সাঈদের পরিবারের এ সদস্য।
এছাড়া আবু সাঈদের ভাই হতাশ এবং শঙ্কা প্রকাশ করে বলেন, ‘এভাবে চলতে থাকলে হয়তো শুধু আল্লাহর কাছে বিচার দিয়েই আমাদের সন্তুষ্ট থাকতে হবে।’
উল্লেখ্য, বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনে ১৬ জুলাই পুলিশের গুলিতে নিহত হয় আবু সাঈদ। ৫ আগস্ট আওয়ামী সরকারের পতন ও শেখ হাসিনার পলায়নের পর ১৮ আগস্ট ১৭ জনকে আসামি করে মামলা করেন আবু সাঈদের ভাই রমজান আলী। পরে অধিকতর তদন্তের জন্য আরও ৭ জনের নাম আসামির তালিকায় যোগ করার আবেদন করে বাদীপক্ষ। এরপর আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে গড়ায় মামলা। আলোচিত এ মামলার তদন্তের জন্য একাধিকবার রংপুরে এসেছিলেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের প্রসিকিউশন টিমের সদস্যরা। গেলো বৃহস্পতিবার তদন্ত প্রতিবেদন এর আলোকে চার্জ গঠন করে ট্রাইব্যুনালে জমা দেবার কথা থাকলেও তা পিছিয়ে রবিবার দিন ধার্য করা হয়।
বিভি/এজেড
মন্তব্য করুন: