বেরোবিতে যৌন নিপীড়নকারী শিক্ষকের শাস্তির দাবিতে মানববন্ধন
রংপুরের বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের (বেরোবি) যৌন নিপীড়নকারী শিক্ষকের শাস্তির দাবিতে মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন সংগঠনের নেতা ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা বিভাগের শিক্ষার্থীরা।
এসময়ে সংগঠনের নেতারা যৌন নিপীড়নকারী শিক্ষকদের স্থায়ী বহিষ্কারের দাবি করেন ও দূর্যোগ ব্যবস্থাপনা বিভাগের শিক্ষার্থীরা সহযোগী অধ্যাপক ড. শাকিবুল ইসলামের সকল ক্লাস পরীক্ষা বর্জনের ঘোষণা দেন।
বুধবার (১২ নভেম্বর) দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের মেইন গেটে মানববন্ধন শুরু করে এবং পরবর্তীতে বিশ্ববিদ্যালয় গুরুত্বপূর্ণ সড়ক প্রদক্ষিণ শেষে মিডিয়া চত্বরে গিয়ে মানববন্ধন শেষ করেন। এসময়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগের প্রায় এক শতাধিক শিক্ষার্থী উপস্থিত ছিলেন।
উপস্থিত বিশ্ববিদ্যালয় দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা বিভাগের একাধিক নারী শিক্ষার্থী নাম প্রকাশ না করে তিনি বলেন,আমরা ওই শিক্ষকলর স্থায়ীভাবে বহিষ্কার চাই,তিনি মার্ক টেম্পারিং করেন। নারী শিক্ষার্থী হিসেবে তার ক্লাসে আমরা সেফ ফিল করি না। তার বিরুদ্ধে আমাদের এক সিনিয়র অভিযোগ দিয়েছেন তদন্তের মাধ্যমে তার স্থায়ী বহিষ্কার করার দাবি জানাই প্রশাসনের কাছে।
বেরোবি শিক্ষার্থী পরিষদের নেতা আহামাদুল হক আলভির বলেন,আমাদের একটা কথা যৌন নিপীড়কের স্থায়ী বহিষ্কার চাই। বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে নিউজের মাধ্যমে দেখি যৌন নিপীড়কদের স্থায়ী বহিষ্কার করা হয়েছে কিন্তু এই বিশ্ববিদ্যালয়ে যৌন নিপীড়নের মতো এমন কার্যক্রম ঘটে আসছে তবে এর সঠিক বিচার না হওয়ার কারণে কুলাঙ্গারা বারবার আমাদের নারী শিক্ষার্থীদের সঙ্গে এমন যৌন হয়রানি করে আসছে। দৃষ্টান্তমুলক শাস্তির ব্যবস্থা করা হোক।প্রশাসন শুধু তদন্ত কমিটি পর্যন্ত থেমে থাকে এর পরবর্তীতে আর আগায় না।পরিসংখ্যানের অধ্যাপক ড. রশিদুলসহ আরও অনেক শিক্ষক এর সঙ্গে জড়িত তাদের সঠিক বিচার দাবি করি।
বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিবেট এসোসিয়েশনের সাবেক সাধারণ সম্পাদক খোকন ইসলাম বলেন,প্রশাসনের কাছে আমাদের দাবি এই শিক্ষকদের স্থায়ী বহিষ্কার করে দৃষ্টান্ত নজির তৈরি করুক। ড. রশিদুলের যৌন নির্যাতনের অভিযোগ প্রমাণ হওয়ার পরও তাকে অস্থায়ী শাস্তি দিয়েছে। তদন্ত কমিটির প্রতিবেদন বা প্রশাসন কি শাস্তি নিশ্চিত করে সেসব বিষয় সাধারণ শিক্ষার্থীরা জানতে পারে না।যৌন নিপীড়ক শিক্ষকদের স্থায়ী বহিষ্কারের দাবি জানান।
ছাত্র সংসদ নির্বাচনের ভিপি প্রার্থী আশিকুর রহমান বলেন, যৌন নিপীড়কদের ঠিকানা এই ক্যাম্পাসে হবে না,তাদের স্থায়ী বহিষ্কার করতে হবে। সাময়িক বহিষ্কার কোনো সমাধান হতে পারে না। স্পষ্টভাষায় বলে দিতে চাই, যৌন নিপীড়নের সঙ্গে যেই সব শিক্ষক জড়িত তাদের এই ক্যাম্পাসে দেখতে চাই না।প্রশাসন দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা করলে অন্য কোনো শিক্ষক পরবর্তীতে আর সাহস পাবে না। এই ক্যাম্পাসে একের পর এক এমন ন্যাক্কারজনক ঘটনা ঘটছে।বিশ্ববিদ্যালয়ে নারী শিক্ষার্থীরা নিরাপদ নয় তাহলে তারা কোথায় নিরাপবোধ করবে। তাই প্রশাসন দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা করুক।
রংপুরের বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে (বেরোবি) একই দিনে দুই বিভাগের দুই শিক্ষকের বিরুদ্ধে যৌন হয়রানির পৃথক অভিযোগ উঠেছে। গতকাল রোববার (২ নভেম্বর) দুই শিক্ষার্থী বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর এবং ছাত্র পরামর্শ দপ্তর বরাবর এই লিখিত অভিযোগ জমা দেন।
একজন ভূগোল ও পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগের (ছদ্মনাম) এক নারী শিক্ষার্থী। বিভাগের সহকারী অধ্যাপক শামীম হোসেনের বিরুদ্ধে নারী শিক্ষার্থী ৩১ পৃষ্ঠার একটি যৌন হয়রানির অভিযোগপত্র জমা দিয়েছেন। অভিযোগপত্রে উল্লেখ রয়েছে, ওই শিক্ষক শিক্ষার্থীকে নীতিবিরুদ্ধ ও অশোভন প্রস্তাব দিয়েছেন এবং অশালীন আচরণ করেছেন।
আরেকজন, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. শাকিবুল ইসলামের বিরুদ্ধে একই বিভাগের এক শিক্ষার্থী যৌন হয়রানির অভিযোগ করেছেন।
বিভি/এআই




মন্তব্য করুন: