মামলা নিয়ে বিবৃতি দিলেন মেহজাবীন চৌধুরী
নাটক কিংবা সিনেমায় নয়, বাস্তব জীবনেই আইনি জটিলতায় জড়িয়ে পড়েছেন দেশের জনপ্রিয় মডেল ও অভিনেত্রী মেহজাবীন চৌধুরী। পারিবারিক ব্যবসার পার্টনার হিসেবে রাখার বিনিময়ে ২৭ লাখ টাকা আত্মসাৎ, হুমকি-ধামকি এবং ভয়ভীতি দেখানোর অভিযোগে করা মামলায় মেহজাবীন এবং তার ভাই আলিসান চৌধুরীর বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছেন ঢাকার একটি আদালত। এরপর আদালতে হাজির হয়ে জামিন নিয়েছেন এই অভিনেত্রী।
এরপর সোমবার (১৭ নভেম্বর) নিজের ফেসবুকে একটি স্ট্যাটাসের মাধ্যমে স্টেটমেন্ট দেন মেহজাবীন চৌধুরী। পাঠকের জন্য অভিনেত্রী মেহজাবীন চৌধুরীর স্ট্যাটাসটি তুলে ধরা হলো-
আমার অফিসিয়াল বিবৃতি-
একজন অজানা ব্যক্তি ২০২৫ সালের মার্চ মাসে আমার ও আমার ১৯ বছর বয়সী ছোট ভাইয়ের বিরুদ্ধে একটি মামলা দায়ের করেছেন। গত নয় মাসে আমি এই মামলার কোনো তথ্য পাইনি। কারণ অভিযোগকারী ব্যক্তি পুলিশকে আমার সঠিক ফোন নম্বর, সঠিক ঠিকানা বা কোনো যাচাইকৃত তথ্য দিতে পারেননি। তিনি দাবি করেন যে ২০১৬ সাল থেকে তিনি আমার সাথে ‘ব্যবসা’ করছিলেন। কিন্তু—
১. কোনো যোগাযোগের প্রমাণ নেই
তিনি বলেন যে তিনি ২০১৬ সাল থেকে আমাকে ফেসবুকে মেসেজ দিতেন। কিন্তু তিনি যা দেখাতে পারেননি-
• একটি মেসেজ যেটা তিনি আমাকে পাঠিয়েছিলেন মেসেজের, ওয়াটসাপ বা আমার নম্বরে,
• কিংবা আমার পক্ষ থেকে একটি উত্তর,
• এমনকি একটি স্ক্রিনশটও না।
২. তার পরিচয় অসম্পূর্ণ
তার সম্পূর্ণ পরিচয়পত্র এখনো জমা দেয়া হয়নি। তার এনআইডি পর্যন্ত অনুপস্থিত।
৩. অভিযোগকারী ও তার আইনজীবী ফোন বন্ধ করে রেখেছেন
গতকাল খবর প্রকাশ হওয়ার পর থেকে-
• অভিযোগকারী তার ফোন বন্ধ করে রেখেছেন,
• এমনকি তার আইনজীবীর নম্বরও বন্ধ।
৪. আর্থিক লেনদেনের কোনো প্রমাণ নেই
তিনি দাবি করেন যে তিনি আমাকে ২৭ লাখ টাকা দিয়েছেন। কিন্তু তিনি দেখাতে পারেননি—
• কোনো ব্যাংক লেনদেন,
• কোনো চেক,
• বিকাশ লেনদেন,
• কোনো লিখিত চুক্তি,
• কোনো রশিদ,
• কোনো সাক্ষী কিছুই না। একটি কাগজপত্রও নেই।
৫. ১১ ফেব্রুয়ারির ঘটনাটি সম্পূর্ণ প্রমাণহীন
তিনি দাবি করেন যে ১১ ফেব্রুয়ারি আমি তাকে চোখ বেধে হাতিরঝিলের একটি রেস্টুরেন্টে নিয়ে গিয়েছিলাম। আমার ছোট ভাইসহ আরও ৪–৫ জনকে নিয়ে। গত নয় মাসে তিনি দেখাতে পারেননি-
• রেস্টুরেন্ট বা আশেপাশের রাস্তার এক সেকেন্ডেরও সিসিটিভি ফুটেজ,
• কোনো সাক্ষী,
• কোনো প্রমাণ, কিছুই না।
হাতিরঝিল ঢাকার সবচেয়ে বেশি সিসিটিভি-নিয়ন্ত্রিত এলাকা — তবুও তিনি একটি ছবি বা ভিডিও ফুটেজ দেখাতে পারেননি।
৬. গত নয় মাসে আমি কোনো নোটিশ পাইনি
এই নয় মাসে আমি পাইনি—
• কোনো পুলিশ স্টেশনের ফোন কল,
• কোনো কোর্টের নোটিশ বা ডকুমেন্ট।
একটি নোটিশ পেলেও আমি অনেক আগে থেকেই আইনি ব্যবস্থা নিতাম।
৭. আমি আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল
এই মামলার কোনো ভিত্তি না থাকলেও, যখন জানতে পারলাম যে একটি অ্যারেস্ট ওয়ারেন্ট জারি হয়েছে, তখন আমি আইনি প্রক্রিয়া মেনে জামিন নিয়েছি — কারণ আমি আমাদের আইন ও নিয়ম মানি। প্রমাণ ছাড়া দায়ের করা মামলা কখনো সত্য হয়ে যায় না।
সত্য খুব দ্রুতই আদালতে পরিষ্কার হয়ে যাবে। এখনকার দিনে কাউকে অপমান করা, মানহানি করা বা ভাইরাল হওয়ার জন্য অন্যকে ব্যবহার করা খুবই সহজ হয়ে গেছে। এই ব্যক্তির যেই উদ্দেশ্যই থাকুক, আমার বা আমার পরিবারের সুনাম ক্ষুণ্ণ করার চেষ্টা করে সে যা-ই করতে চায়—আমি বিশ্বাস করি সবকিছু খুব দ্রুতই পরিষ্কার হয়ে যাবে।
এর আগে পর্যন্ত আমি সবাইকে অনুরোধ করবো—দয়া করে সহানুভূতিশীল হোন, দয়া করে মানবিক হোন এবং কাউকে না জেনে কোনো মিডিয়া ট্রায়াল শুরু করবেন না।
গত ১৫ বছর ধরে আমি আমার কাজ, আমার পেশা এবং আমার দর্শকদের জন্য যে পরিমাণ পরিশ্রম এবং নিষ্ঠা দিয়ে এসেছি, সেই পরিশ্রমের পরেও আজ আমাকে এসব ব্যাখ্যা করতে হচ্ছে—এটাই সবচেয়ে দুঃখজনক।
বিভি/জোহা




মন্তব্য করুন: