অনন্য সেবার এক চোখের হাসপাতাল
ময়না মোবাইল আই হসপিটাল। রাজধানীর গ্রিনরোডে অবস্থিত এই হসপিটাল-এর লক্ষ্য দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলে মানুষের মাঝে সেবা পৌঁছে দেওয়া।
৬০ বছরের জসিম উদ্দিন খান।একটু দূরের জিনিসও ঝাপসা দেখেন। বিভিন্ন হাসপাতালে চোখের চিকিৎসা করিয়েছেন রাজধানীর তেজতুরিপাড়ার এই বাসিন্দা। জানালেন, অনেক টাকা খরচ করেও মানসম্মত চিকিৎসা পাননি। এরপর পরিচিতদের কাছে প্রশংসা শুনে এসেছেন ময়না মোবাইল আই হসপিটালে।
ভালো ব্যবহার ও সেবার কারণে পরিবারের আরও চারজনকে ময়না মোবাইল আই হসপিটালে নিয়ে এসেছেন আমজাদ হোসেন নামে আরেকজন। চিকিৎসা সেবার পাশাপাশি হসপিটালটির পরিবেশ দেখেও তিনি মুগ্ধ। বলেন, শহরে অন্য হাসপাতালের চেয়ে ময়না মোবাইল আই হসপিটাল-এর সেবা ব্যতিক্রম।
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বিজয়নগর থেকে মাথাব্যথা এবং চোখের সমস্যা নিয়ে এই ময়না মোবাইল আই হসপিটালে এসেছেন রফিকুল ইসলাম। হসপিটাল ঘিরে তাঁর সুখকর অভিজ্ঞতার শেষ নেই। জানালেন, এমন আন্তরিকতা এবং সময় নিয়ে অন্য হাসপাতালে চিকিৎসা সেবা পাননি।এখানকার ডাক্তার সময় দিয়ে অত্যন্ত যত্নের সংগে তাঁর চোখ দেখেছেন ।
অন্য অনেক রোগী বলেন, হসপিটালটির বিশেষত্ব হলো-ডাক্তারদের ভালো ব্যবহার, ধৈর্য্য নিয়ে রোগী দেখা, রোগীকে পর্যাপ্ত সময় দেওয়া, তাঁদের জটিলতার কথা মন দিয়ে শোনা এবং সেবার মনোভাব। এসব কারণেই হসপিটালটি বাড়তি জনপ্রিয়তা পেয়েছে রোগীদের মাঝে। এখানে আসা রোগীদের অধিকাংশই স্বল্প আয়ের মানুষ। স্বল্প খরচে মানসম্পন্ন সেবা পেয়ে সন্তুষ্ট তাঁরা।
হসপিটাল-এর চিকিৎসক ডা. নাহাল মোস্তাক খান অর্ণব জানান, এখানে রোগীর অপারেশন এবং সার্জনের বিল সর্বনিম্ন রাখার চেষ্টা করা হয়। প্রতিটি সেবার জন্য রয়েছে আলাদা বিভাগ। ফলে সংশ্লিষ্টরা রোগীর পেছনে বেশি সময় দিতে পারেন। গ্রাম, পাড়া, মহল্লা থেকে আসা রোগীরাও যেন যথাযথ সেবা পান বিষয়টি মাথায় রেখেই কাজ করছেন এখানকার সব চিকিৎসক।
ময়না মোবাইল আই হসপিটাল লিমিটেড-এর মেডিকেল অফিসার ডাক্তার উম্মে হাবিবা দিনা বলেন, এখানে মাত্র ৫ হাজার টাকার মধ্যে চোখের ছানি অপারেশন করা হয়। দেশের অন্য কোনো প্রাইভেট হাসপাতালে এতো কম টাকায় এই সেবা পাওয়া কঠিন।
ময়না মোবাইল আই হসপিটাল লিমিটেড-এর মেডিকেল অফিসার ডাক্তার মো. আজাদুর রহমান বলেন, কর্তৃপক্ষ লাভের চিন্তা বাদ দিয়ে সেবার মানের দিকেই বেশি মনোযোগী।
ময়না মোবাইল আই হসপিটাল লিমিটেড-এর উপ-ব্যবস্থাপনা পরিচালক ডক্টর এস. এম. ইলিয়াছ জানান, তাঁদের প্রতিষ্ঠান লাভের কথা চিন্তা করে না বলেই স্বল্প খরচে সেবা দিতে পারে। এই হসপিটালে-এর অধিকাংশ যন্ত্রপাতি আমেরিকা থেকে আনা হয়েছে, জানান তিনি।
করোনা’র এই দেড় বছরে স্কুল-কলেজ বন্ধ থাকায় শিক্ষার্থীরা বাসায় মোবাইল, টেলিভিশন, কম্পিউটার ও ল্যাপটপে সময় পার করেছে। এতে এই সময়ে শিক্ষার্থীদের চোখের সমস্যা বেড়েছে। বিষয়টি মাথায় নিয়ে ময়না মোবাইল আই হসপিটাল কর্তৃপক্ষ প্রতিটি স্কুলের শিক্ষার্থীদের চোখের সমস্যা সমাধানে ক্যাম্পেইনের উদ্যোগ নিয়েছে।
ময়না মোবাইল আই হসপিটাল লিমিটেড-এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. আশরাফ উদ্দিন আহমেদ এফসিএ বলেন, শুরুতে দেশের বিভিন্ন জেলায় ভ্রাম্যমান গাড়ির মাধ্যমে সুবিধাবঞ্চিত মানুষের কাছে স্বল্প সময়ে আধুনিক চিকিৎসা সরঞ্জাম এবং প্রয়োজনীয় চিকিৎসা সহায়তা পৌঁছে দিয়ে সাধারণ মানুষের মনে জায়গা করে নিয়েছে প্রতিষ্ঠানটি।
তিনি বলেন, এই হসপিটাল-এর জন্য এখনো কোনো প্রতিষ্ঠান বা ব্যক্তির কাছ থেকে সহযোগিতা নেওয়া হয়নি। তবে হসপিটাল-এর কার্যপরিধি বেড়ে যাওয়ায় মনে হচ্ছে, এবার সহযোগিতা প্রয়োজন হতে পারে।কোনো কর্ণার থেকে সাড়া পেলে যৌথ সহযোগিতার মাধ্যমে ময়না মোবাইল আই হসপিটালটিকে এগিয়ে নেওয়ার প্রত্যয় ব্যক্ত করেন তিনি।
‘দেশজুড়ে দৃষ্টিদান’ স্লোগান নিয়ে ২০১৯ সালে পথ চলতে শুরু করে ময়না মোবাইল আই হসপিটাল। সুবিধাবঞ্চিত মানুষের কাছে স্বল্প খরচে আধুনিক চিকিৎসা সেবা প্রদান করাই এর মূল লক্ষ্য।
বিভি/এএইচ/এসডি
মন্তব্য করুন: