ফেসবুক-ইনস্টাগ্রাম-টিকটকের বিরুদ্ধে একাধিক পরিবারের মামলা

শিশুদের মানসিক স্বাস্থ্যের ক্ষতি করে এমন আসক্তিকর ফিচারের ব্যবহার ও বয়সসীমা নিষেধাজ্ঞা কার্যকরে ব্যর্থতার অভিযোগ এনে ফেসবুক, ইনস্টাগ্রাম ও টিকটকের বিরুদ্ধে মামলা করেছে ইতালির একাধিক পরিবার।
এ মামলায় মিলানের একটি আদালতের কাছে দাবি তোলা হয়েছে, প্ল্যাটফর্মগুলো যেন ইতালির আইন অনুযায়ী ১৪ বছরের কম বয়সী ব্যবহারকারীদের জন্য কঠোর বয়স-যাচাই ব্যবস্থা গ্রহণ করে। এছাড়া মেটার মালিকানাধীন ফেসবুক, ইনস্টাগ্রাম এবং টিকটকের কাছে সম্ভাব্য ম্যানিপুলেটিভ অ্যালগরিদম অপসারণ এবং অতিরিক্ত ব্যবহারের সম্ভাব্য ক্ষতি সম্পর্কে স্বচ্ছ তথ্য প্রদানের দাবিও জানানো হয়েছে।
অ্যামব্রোসিও অ্যান্ড কমোডো আইন সংস্থা এবং ইতালিয়ান প্যারেন্টস মুভমেন্টের (এমওআইজিই) সম্মিলিত দায়ের করা এই মামলাটি মিলান আদালতের ব্যবসায়িক চেম্বারে ২০২৬ সালের ফেব্রুয়ারি থেকে শুনানির জন্য নির্ধারিত হয়েছে।
মামলার সঙ্গে যুক্ত আইনজীবী রেনাতো অ্যামব্রোসিও এক বিবৃতিতে বলেন, ‘শিশুদের জন্য বয়স নিষেধাজ্ঞা অতিক্রম করা খুবই সহজ। যা অনেকের জন্য ক্ষতিকর। এমন আচরণ বন্ধ করার জন্য এই মামলাটি করা হয়েছে।’
তবে নিরাত্তা ব্যর্থতার অভিযোগ অস্বীকার করে মেটার একজন মুখপাত্র বলেন, ‘কোম্পানিটি তরুণদের অনলাইনে নিরাপদ রাখতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ এবং কিশোর নিরাপত্তা সকল প্রতিষ্ঠানেরই অগ্রাধিকার হওয়া উচিত।’
তিনি আরও বলেন, ‘টিন অ্যাকাউন্টের মাধ্যমে আমরা কিশোরদের জন্য ডিফল্ট সুরক্ষা প্রদান করি, যারা তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারে, তারা কী কনটেন্ট দেখতে পারে এবং ফেসবুক ও ইনস্টাগ্রামে তারা কতটা সময় ব্যয় করে তা সীমিত করে। আমরা কিশোরদের বয়স সম্পর্কে মিথ্যা বলা প্রতিরোধেও ব্যবস্থা রেখেছি।’
তবে এ বিষয়ে জানতে চেয়েও তাৎক্ষণিক কোনো জবাব পাওয়া যায়নি টিকটকের কাছ থেকে।
সামাজিক মাধ্যমে শিশু-তরুণদের নিরাপত্তা নিয়ে অবশ্য শুধু ইতালিতেই এমন দুশ্চিন্তা নয়। অস্ট্রেলিয়া এবং ইউরোপের বেশ কয়েকটি দেশ শিশুদের মধ্যে সামাজিক মাধ্যম ব্যবহার নিয়ন্ত্রণের জন্য ব্যবস্থা নিয়েছে অথবা বিবেচনায় রেখেছে। লাখ লাখ শিশুকে তাদের প্ল্যাটফর্মে আকৃষ্ট এবং আসক্ত করার জন্য মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে কয়েক ডজন মামলার সম্মুখীন হচ্ছে ফেসবুক, ইনস্টাগ্রাম এবং টিকটক।
ইতালিতে বাদীদের অনুমান, ফেসবুক, ইনস্টাগ্রাম এবং টিকটকের ৯ কোটি অ্যাকাউন্টের মধ্যে ৩০ লাখের বেশি ব্যবহারকারী ১৪ বছরের কম বয়সী শিশু। তাদের অভিযোগ, সামাজিক মাধ্যমের ব্যবহার শিশুদের খাওয়ার ব্যাধি, ঘুমের অভাব, বিষণ্নতা এবং একাডেমিক পারফরম্যান্সের ক্ষতির মতো স্বাস্থ্য সমস্যার দিকে নিয়ে যেতে পারে।
সূত্র: রয়টার্স
বিভি/টিটি
মন্তব্য করুন: