আগ্রাসী ইসরায়েলকে থামালো যে অদৃশ্য শক্তি (ভিডিও)
কথা ছিলো লড়াই হবে সমানে-সমান, বাড়ছিলো উত্তেজনা; কিন্তু শেষমেশ হলোনা তেমন কিছুই। ইরানের হামলার জবাবে ইসরায়েল যতটা হুমকি আর ধমকের সুরে কথা বলেছিলো ততোটা শক্তির প্রদর্শন তারা বাস্তবে দেখাতে পারেনি। কিন্তু এত সামর্থ্য থাকার পরও কেনো উপযুক্ত জবাব দিতে ব্যর্থ ইসরায়েল? কি সেই অদৃশ্য শক্তি যা আটকে দিলো ইসরায়েলের দানবীয় মেজাজকে?
গত ১৪ এপ্রিল ইসরায়েলকে লক্ষ্য করে তিন শতাধিক ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র ছোড়ে তেহরান। এই ঘটনার পর বড় সংঘাতের আশঙ্কায় পড়ে যায় সারা বিশ্ব। ইরানের হামলার জবাবে গত শুক্রবার দেশটিতে ব্যাপক পরিসরে হামলা চালাতে চেয়েছিলো ইসরায়েল। হামলার পরিকল্পনা ছিলো ইরানের রাজধানী তেহরানের কাছের সামরিক ঘাঁটিতেও। তবে পরে সে সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসে ইসরায়েল সরকার। আর এর নেপথ্যে আছে ইসরায়েলের বন্ধুরাই।
আন্তর্জাতিক চাপের মুখে পড়ে ইরানে বড় হামলার সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসে ইসরায়েল। আর এ বিষয়ে সবচেয়ে বড় ভূমিকা রাখে ইসরায়েল সরকারের পরম বন্ধু হিসেবে পরিচিত মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। ইসরায়েলের তিন কর্মকর্তার বরাতে যুক্তরাষ্ট্রের সংবাদমাধ্যম দ্য নিউ ইয়র্ক টাইমস এক প্রতিবেদনে জানায়, যুক্তরাষ্ট্রসহ বিভিন্ন মিত্রদেশের কূটনৈতিক চাপে ইরানে বড় ধরনের হামলার সিদ্ধান্ত বাতিল করে ইসরায়েল।
প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, ইরানে অনেক বড় আকারে হামলা চালানোর পরিকল্পনা করেছিলো ইসরায়েল। এতে মধ্যপ্রাচ্য অঞ্চলে সংঘাত ছড়িয়ে পড়ার সম্ভাবনা ছিলো। এমন হামলা চালানো হলে তা এড়িয়ে যাওয়া তেহরানের পক্ষে কঠিন হতো। ফলে ইরানের পক্ষ থেকেও শক্তিশালী পাল্টা হামলা চালানোর ঝুঁকি বাড়তো। আর এসব বিষয় বিবেচনা করে ইরানে হামলার ব্যাপারে ইসরায়েলকে বাঁধা দেয় যুক্তরাষ্ট্র। একই মতামত দেয় ইউরোপের দুই শক্তিধর রাষ্ট্র যুক্তরাজ্য ও জার্মানি।
ইরানের হামলার পরদিনই দেশটিতে ব্যাপক পরিসরে হামলা চালাতে চেয়েছিলো ইসরায়েল। ইরানের রাজধানী তেহরানের কাছের সামরিক ঘাঁটিসহ ইরানের বিভিন্ন সামরিক ঘাঁটিতে বড় পরিসরে হামলা চালানোর পরিকল্পনা করেছিলো ইসরায়েল। কিন্তু মধ্যপ্রাচ্যে বড় সংকট এড়াতে ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুকে ব্যাপক হামলা না চালানোর আহ্বান জানান যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। ফলে পরিকল্পনা থাকার পরও কারো সমর্থন না পাওয়ায় বড় কোনো হামলা চালায়নি ইসরায়েল।
এদিকে চলমান উত্তেজনার মধ্যেই পদত্যাগ করেছেন ইসরায়েলের সামরিক গোয়েন্দা প্রধান মেজর জেনারেল আহারন হালিভা। সাম্প্রতিক সময়ে ইসরায়েল হামলা ঠেকাতে ব্যর্থতা সহ বিভিন্ন ইস্যুতে সমালোচনার মুখে পড়ে দায়িত্ব ছাড়েন তিনি। রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা জানিয়েছেন গোয়েন্দা প্রধানের এই পদত্যাগ প্রত্যাশিতই ছিলো। কারণ শুধু ৭ অক্টোবর হামাসের হামলাই নয়, ইরানের ৩০০টির বেশি ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র হামলা সম্পর্কে সতর্ক না হওয়ার দায়ও পড়েছে গোয়েন্দা বিভাগের ওপর।
একদিকে আন্তর্জাতিক মহলের চাপ, অন্যদিকে নিজেদের নিরাপত্তা ও সক্ষমতা নিয়ে সমালোচনা। এরইমধ্যে গাজায় ইসরায়েলে হামলা নিয়ে বাইডেন ও নেতানিয়াহুর মধ্যে বেশ দূরত্ব তৈরি হয়েছে। তাই সব কিছু মিলিয়ে এখন বেশ কোনঠাসা অবস্থাতেই আছে দখলদার ইসরায়েল বাহিনী।
বিভি/এমএফআর
মন্তব্য করুন: