‘আল আকসা’ মসজিদ ধ্বংস করে ‘থার্ড টেম্পল’, এআই ভিডিও নিয়ে তোলপাড়
বিস্ফোরণের আগুনে ধ্বংস করা হচ্ছে পবিত্র মসজিদ আল আকসা, আর সেখানে স্থাপন করা হচ্ছে থার্ড টেম্পল। ভয়ঙ্কর এই দৃশ্য ক্যামেরাবন্দি করছেন সামনে দাঁড়িয়ে থাকা শত শত মানুষ। পুরো ভিডিওটি এআই বা কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা-নির্ভর হলেও এটি নিয়ে মুসলিম বিশ্বে তোলপাড় শুরু হয়েছে।
সংবাদমাধ্যম দ্যা নিউ আরব জানিয়েছে, সম্প্রতি ইসরাইলের এক উগ্র ডানপন্থি গোষ্ঠী সামাজিক মাধ্যমে এআই দিয়ে তৈরি আল আকসা মসজিদ ধ্বংসের একটি ভিডিও প্রকাশ করে। পরে সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম থেকে ভিডিওটি ছড়িয়ে দেওয়া হয়। ভিডিওটিতে দেখা যায়, জেরুজালেমে অবস্থিত পবিত্র আল আকসা মসজিদ সম্পূর্ণ ধ্বংস হয়ে গেছে এবং সেখানে ‘থার্ড টেম্পল’ নির্মাণের চিত্র তুলে ধরা হয়েছে।
শুধু তাই নয়, ভিডিওর শেষ অংশে হিব্রু ভাষায় “Next Year in Jerusalem, Messiah Now” স্লোগান ব্যবহার করা হয়। অর্থাৎ, আগামী বছরেই মাসিআহ বা দাজ্জালের আগমনের ইঙ্গিত দিচ্ছে কট্টর ইসরাইলিরা।
এই ভিডিও সামনে আসার পর তীব্র প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে বিভিন্ন আরব দেশ। কাতার সরকার এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, এমন উসকানিমূলক ভিডিও অধিকৃত ফিলিস্তিনি অঞ্চলে সহিংসতা আরও বাড়িয়ে তুলতে পারে। তারা আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে এই ধরনের প্রচারণা রোধে কঠোর ভূমিকা রাখার আহ্বান জানিয়েছে।
এদিকে ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষ একে ‘ইসরাইলি উগ্রবাদীদের পরিকল্পিত অপচেষ্টা’ হিসেবে অভিহিত করে তীব্র নিন্দা জানিয়েছে। তাদের মতে, এই ভিডিও ইসরাইলের দিক থেকে ফিলিস্তিনিদের ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত হানার আরেকটি উদাহরণ। জর্ডান এ ঘটনাকে বর্ণনা করেছে “চরমপন্থি ও বর্ণবাদী উসকানি” হিসেবে। দেশটির সরকার জানিয়েছে, ইসরাইলি বসতি স্থাপনকারী গোষ্ঠীগুলোর এমন কর্মকাণ্ড আঞ্চলিক স্থিতিশীলতাকে হুমকির মুখে ফেলছে।
কুরআনে সরাসরি দাজ্জালের আগমন সম্পর্কে বিস্তারিত বর্ণনা নেই, তবে ইসলামী হাদিস ও তাফসীরে তার আগমন ও ফিতনার ব্যাপারে বর্ণনা রয়েছে। বর্ণনা অনুযায়ী, দাজ্জালের ডান চোখ অন্ধ বা অস্বাভাবিক হবে এবং তার কপালে "কাফির" শব্দটি লেখা থাকবে, যা প্রত্যেক ঈমানদার পড়তে পারবে। দাজ্জাল আসমান থেকে বৃষ্টি নামানোর এবং মৃত ভূমিকে সবুজে পরিণত করার মতো মিরাকেল দেখাবে। দাজ্জালের ফিতনা ও প্রতারণা এতটাই ভয়াবহ হবে যে অনেক মানুষ, এমনকি কিছু মুসলমানও তাকে অনুসরণ করবে।
এর আগে চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে একটি এআই ভিডিও শেয়ার দিয়ে সমালোচনার জন্ম দিয়েছিলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। যেখানে দেখানে হয়েছিলো গাজাবাসীদের সরিয়ে বিলাসী নগরী তৈরি করা হয়েছে। আর সেখানে আমোদ ফূর্তিতে মেতে আছেন ট্রাম্প, নেতানিয়াহু ও ইলন মাস্ক। আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষকদের মতে, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা ব্যবহার করে এ ধরনের স্পর্শকাতর এবং ধর্মীয়ভাবে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নিয়ে ভিডিও তৈরি ও প্রচার ভবিষ্যতে আরও বড় সংকট সৃষ্টি করতে পারে।
বিভি/এমএফআর




মন্তব্য করুন: