ভারতের কাঁধে নিঃশ্বাস ফেলছে ‘অঘোষিত জোট’?

চীন-পাকিস্তান অর্থনৈতিক করিডর এবার বিস্তৃত হতে যাচ্ছে আফগানিস্তান পর্যন্ত। ২১মে চীনের রাজধানী বেইজিংয়ে এক ত্রিপক্ষীয় বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। আর এই বৈঠক থেকেই করিডোর সম্প্রসারনের বিষয়ে একমত হন তিন দেশের নেতারা। এটি চীনের বেল্ট অ্যান্ড রোড ইনিশিয়েটিভ প্রকল্পের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ।
বৈঠকে তিন দেশ প্রতিশ্রুতি দিয়েছে—আঞ্চলিক স্থিতিশীলতা, সন্ত্রাসবিরোধী লড়াই এবং অর্থনৈতিক সংযোগ জোরদারে একসাথে কাজ করবে তারা। শুধু তাই নয়, পাকিস্তান ও আফগানিস্তান দীর্ঘদিনের সম্পর্কের টানাপোড়েন ভুলে, খুব শিগগিরই রাষ্ট্রদূত বিনিময়ে নীতিগতভাবে একমত হয়েছে। ফলে এই পদক্ষেপকে শুধু অর্থনৈতিক নয়; রাজনৈতিক ও কৌশলগতভাবেও বেশ গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।
চীন স্পষ্ট করে বলেছে—পাকিস্তানের সার্বভৌমত্ব ও আঞ্চলিক অখণ্ডতার প্রশ্নে তারা সবসময় পাকিস্তানের পাশে আছে। অন্যদিকে দেশে ফিরে চীন সফরের বিষয়ে সাংবাদিকদের ব্রিফিং করেন পাকিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইসহাক দার। ত্রিপাক্ষিক বৈঠকটি অত্যন্ত সফল ছিলো বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
শুধু চীন ও আফগানিস্তান নয়, আঞ্চলিক সহযোগিতার এই যাত্রায় বাংলাদেশকেও শরিক করতে চায় পাকিস্তান। বাংলাদেশ-চীন-আফগানিস্তানকে নিয়ে জোট গড়ার আগ্রহ দেখিয়েছে পাকিস্তান। ‘অল পাকিস্তান চেম্বার্স প্রেসিডেন্টস’ সম্মেলনে এশিয়ার এ তিন দেশের সঙ্গে জোট গঠনের পাশাপাশি ভারতের সঙ্গে সাম্প্রতিক সংঘাত নিয়েও কথা বলেন ইসহাক দার। যেখানে দুই দেশের বিমানবাহিনীর সম্মুখ যুদ্ধের বিষয়টি বিশেষভাবে উল্লেখ করেন এই পাক মন্ত্রী। ২২মে এক প্রতিবেদনে এমনটাই জানিয়েছে পাকিস্তানি সংবাদমাধ্যম সামা টিভি।
পাকিস্তানের উপ-প্রধানমন্ত্রী ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইসহাক দারের বাংলাদেশ সফর ২০২৫ সালের এপ্রিল মাসে নির্ধারিত ছিলো। যা দুই দেশের মধ্যে সম্পর্ক উন্নয়নের একটি যুগান্তকারী পদক্ষেপ হিসেবে বিবেচিত হচ্ছিলো। এটি ২০১২ সালের পর প্রথমবারের মতো একজন পাকিস্তানি পররাষ্ট্রমন্ত্রীর ঢাকা সফর হতো। তবে, ভারতের পেহালগাম এলাকায় বন্দুকধারীর হামলার পর উত্তেজনাকর পরিস্থিতির কারণে পাকিস্তান সরকার এই সফরটি স্থগিত করার সিদ্ধান্ত নেয়।
বিভিন্ন সূত্র থেকে জানা গেছে, পাক পররাষ্ট্রমন্ত্রী শীঘ্রই বাংলাদেশ সফরে আসছেন। আগামী কয়েকদিনের মধ্যেই সফরের বিষয়ে আনুষ্ঠানিক ঘোষণা আসতে পারে। বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্ক উন্নয়নে পাকিস্তানের সক্রিয়তা এবং চীনের ক্রমবর্ধমান অর্থনৈতিক ও অবকাঠামোগত সহযোগিতা ভারতের জন্য এক নতুন চ্যালেঞ্জ হয়ে উঠছে। অঘোষিত হলেও এই নতুন জোট কাঠামো ভারতবিরোধী এক পরোক্ষ বলয় গড়ে তুলছে বলে মনে করছেন আন্তর্জাতিক বিশ্লেষকরা।
বিভি/এমএফআর
মন্তব্য করুন: