• NEWS PORTAL

  • সোমবার, ১৫ ডিসেম্বর ২০২৫

প্রকাশ্যে এলো ভারতের প্রতি ট্রাম্পের নাখোশ হওয়ার কারণ

প্রকাশিত: ২০:০৭, ৩ জুন ২০২৫

আপডেট: ২০:০৭, ৩ জুন ২০২৫

ফন্ট সাইজ
প্রকাশ্যে এলো ভারতের প্রতি ট্রাম্পের নাখোশ হওয়ার কারণ

যুক্তরাষ্ট্র ও ভারতের মধুর সম্পর্ক আর আগের মতো নেই। এটা যে দিন দিন শীতল হয়ে উঠছে, তা বুঝতে বিশ্লেষক না হলেও চলে। যে কোনো সাধারণ মানুষও সহজেই টের পাচ্ছে দুই দেশের মধ্যে উষ্ণতার ঘাটতি। বিশেষ করে ডোনাল্ড ট্রাম্প দ্বিতীয় দফায় যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট হওয়ার পর দিল্লি-ওয়াশিংটন সম্পর্ক যেন পড়তির দিকে। অথচ এমনটি মোটেই প্রত্যাশা ছিল না। 


প্রথম দফায় ক্ষমতায় এসে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সাথে ঈর্ষনীয় মাত্রার বন্ধুত্ব গড়ে তুলছিলেন ট্রাম্প। কিন্তু সে যেন দূর অতীত। এ যাত্রায় যুক্তরাষ্ট্র সফরে গিয়ে সেই ট্রাম্পকে আর পাননি মোদী। 


অবশেষে ভারতের প্রতি ট্রাম্প প্রশাসনের নাখোশ হওয়ার কারণগুলো স্পষ্টভাবে জানা গেলো। প্রথমবারের মতো প্রকাশ্যে এ নিয়ে মুখ খুলেছেন মার্কিন কমার্স সেক্রেটারি হাওয়ার্ড লাটনিক। মঙ্গলবার ওয়াশিংটন ডিসিতে ভারত-যুক্তরাষ্ট্রের কৌশলগত অংশীদারীত্ব ফোরামের অষ্টম সভায় ভারতের প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের মনোভাব বর্তমানে কেন নেতিবাচক সেসব নিয়ে খোলামেলা কথা বলেন তিনি। এ সময় দিল্লীকে ব্যাপক কটাক্ষ করেন লাটনিক। 


তিনি বলেন, যুক্তরাষ্ট্র চায় ভারতের সাথে বন্ধুত্ব নতুন করে শক্তিশালী হোক। কিন্তু ভারত যেভাবে সামরিক খাতসহ বিভিন্ন খাতে দিন দিন রাশিয়ার প্রতি নির্ভরশীল হয়ে পড়ছে, তা নিয়ে অসন্তুষ্ট ট্রাম্প। ভারত নিয়মিতই রাশিয়ার কাছ থেকে অস্ত্র কিনছে, এটা নিয়ে আপত্তি জানান তিনি। ওয়াশিংটন চায় দিল্লি তার কাছ থেকে অস্ত্র কিনুক। বলেন, 'একেবারে সুস্পষ্ট কিছু বিষয় আছে, ভারত সরকার সেগুলো করায় স্বাভাবিকভাবেই যুক্তরাষ্ট্র দূরে সরে গেছে। উদাহরণ স্বরূপ বলা যায়, ভারত সাধারণত রাশিয়ার কাছ থেকেই অস্ত্র কেনে। এটা যুক্তরাষ্ট্রের সাথে ভারতের যে বন্ধুত্ব, অনেকটা তার বিরুদ্ধে আচরণ'। 


একই সাথে শত্রুভাবাপন্ন চীন ও রাশিয়ার নেতৃত্বাধীন জোট ব্রিকসে ভারতের যোগ দেয়া নিয়েও ট্রাম্পের আপত্তি আছে বলে জানান মার্কিন কমার্স সেক্রেটারি। ব্রিকস ডলারের আধিপত্য খর্ব করতে কাজ করছে। বন্ধুপ্রতিম ভারতও তা সমর্থন করছে, যুক্তরাষ্ট্রের জন্য এটা অসন্তুষ্টির বলেন এ কর্মকর্তা। বলেন, 'আরেকটা বিষয়, যেমন ব্রিকস। তারা বলছে, চলো ডলারের ওপর থেকে সমর্থন তুলে নেই। ডলারের আধিপত্য ভেঙে দেই। এভাবে তো কেউ যুক্তরাষ্ট্র বা মার্কিনীদের বন্ধুত্ব আশা করতে পারে না। প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প সরাসরি এর তীব্র সমালোচনা করেন। আশার কথা হলো, ভারত সরকার এই সমালোচনাকে আমলে নিচ্ছে'। 

লাটনিক বলেন, সমস্যাগুলো দূর করতে হলে কোনো রাখঢাক করার সুযোগ নেই। এগুলো নিয়ে সরাসরি এবং স্পষ্টভাবে আলোচনা হওয়া উচিত। এর মধ্য দিয়েই আগামীতে দুই দেশের বন্ধুত্ব জোরালো হওয়ার সুযোগ তৈরি হবে বলে অভিমত তার। নিকট ভবিষ্যতে ভারতের সাথে বাণিজ্যখাতে সম্পর্ক বাড়াতে নতুন চুক্তি হবে বলে আশাবাদ জানান লাটনিক। 

এদিকে রাশিয়ার কাছ থেকে অস্ত্র কেনার ব্যাপারে ভারতের বিশেষ পক্ষপাত আছে। সম্প্রতি পাকিস্তানের সাথে সংঘাতেও রুশ আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা এস-ফোর হান্ড্রেড ছিল ভারতের অন্যতম দাবার ঘুঁটি। এই সংঘাতে সাফল্যের জেরে ইতোমধ্যেই আরো বেশকিছু এস-ফোর হান্ড্রেড কেনার প্রস্তাব দিয়েছে ভারত। 

শুধু তাই নয়, ক্ষেপণাস্ত্র ব্রাহ্মকে আরো অত্যাধুনিক করার ক্ষেত্রেও মস্কোর সহায়তা চায় দিল্লি। দুই দেশ যৌথভাবে এই কাজ করবে। এরই মাঝে এ ব্যাপারে কারিগরী সহায়তা দিতে সম্মত হয়েছে মস্কো। উদ্ভূত বাস্তবতায় আগামীতে দিল্লী-ওয়াশিংটন সম্পর্ক কোন দিকে গড়ায় তাই দেখার বিষয়।  

বিভি/এইচজে

মন্তব্য করুন:

Drama Branding Details R2
Drama Branding Details R2