দেশে দেশে কোরবানির পশু কেনায় ভিন্ন চিত্র
ছবি: সংগৃহীত
পবিত্র ঈদুল আজহাকে সামনে রেখে বিশ্বজুড়ে কোরবানির আয়োজন চলছে। সামর্থ্যবানরা কোরবানির পশু কেনায় ব্যস্ত থাকলেও, বৈশ্বিক অর্থনৈতিক চাপের কারণে অনেকেই এবার পিছিয়ে। যেমনটা দেখো গেছে ইন্দোনেশিয়ায় কোরবানির হাটে; আগের মতো ক্রেতার ভিড় নেই, হতাশ সেখানকার বিক্রেতারাও।
রয়টার্সের এক প্রতিবেদনের তথ্য অনুযায়ী, ইন্দোনেশিয়ায় পবিত্র ঈদুল আজহাকে সামনে রেখে কোরবানির পশুর বাজারে অনিশ্চয়তা তৈরি হয়েছে। কয়েকজন গরু ব্যবসায়ী রয়টার্সকে জানান, অর্থনৈতিক চাপের কারণে তাদের পশু বিক্রিতে নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে।
ইন্দোনেশিয়ায় আগামী শুক্রবার ৬ জুন উদযাপিত হতে যাচ্ছে পবিত্র ঈদুল আজহা। এদিকে ঈদের আগের দিনগুলোতে দেশটির পশ্চিম জাভা প্রদেশের পুরওয়াকার্টার সিওয়ারেং বাজারের ব্যবসায়ীদের মধ্যে উৎকণ্ঠা ও দুশ্চিন্তা বেড়ে চলেছে।
রয়টার্সকে ইন্দোনেশিয়ার এক গরু ব্যবসায়ী জানান, দেশের বর্তমান অর্থনৈতিক পরিস্থিতির কারণে ক্রেতার সংখ্যা তুলনামূলক কম। তিনি বলেন, গত বছরের এই সময় তিনি প্রায় ১০০টি গরু বিক্রি করতে পেরেছিলেন। তবে এ বছর এখনও সেই সংখ্যায় পৌঁছাতে পারেননি।
এদিকে পশুদের ফুট অ্যান্ড মাউথ ডিজিজের কারণে ২০২২ সালে বাজারে মন্দাভাব সৃষ্টি হলেও পরবর্তীতে ২০২৪ সালে পরিস্থিতি অনেকটাই স্বাভাবিক হয় এবং বাজারে চাঙাভাব ফিরে আসে। অনেক ব্যবসায়ী তখন জানান, ঈদের মৌসুমে স্বাভাবিক সময়ের তুলনায় বিক্রি প্রায় ৫০% পর্যন্ত বৃদ্ধি পেয়েছিল। যদিও চাহিদা বাড়ার কারণে পশুর দামও প্রায় ২৫% পর্যন্ত বৃদ্ধি পায়।
ইন্দোনেশিয়ার রাজধানী জাকার্তায় সড়কের ধারে ঈদ উপলক্ষে ছাগল ও ভেড়ার প্রদর্শনী যেন এক নিয়মিত দৃশ্য হয়ে উঠেছে। তবে সেখানেও ক্রেতার ঘাটতির সমস্যায় পড়েছেন বলে জানান ব্যবসায়ীরা। ব্যবসায়ীদের অভিযোগ, শুধুমাত্র ছাগলই নয়, প্রায় সব পশুরই ক্রেতা কম।
রয়টার্সের প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, ইন্দোনেশিয়ায় গত ৩ বছরে চলতি বছরের প্রথম ত্রৈমাসিকে সবচেয়ে ধীর গতির প্রবৃদ্ধি হয়েছে। বৈশ্বিক বাণিজ্যের সংকটের কারণে বছরের শেষ নাগাদ অর্থনীতির উপর চাপ অব্যাহত থাকতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
অর্থনৈতিক মন্দা হোক আর যাই হোক, মুসলিমরা ঈদুল আজহায় নিজেদের সামর্থ্য অনুযায়ী কোরবানি দেওয়ার চেষ্টা করেন। এটি আল্লাহর নির্দেশে ইব্রাহিম (আ.)-এর পুত্র ইসমাঈল (আ.)-এর কোরবানির ঐতিহাসিক ঘটনাকে স্মরণ করিয়ে দেয়।
ঈদুল আজহাকে বলা হয় ত্যাগের ঈদ। সামর্থ্যবানরা পশু কোরবানি দেয় এবং কোরবানি করা পশুর মাংস পরিবার, বন্ধু ও অসহায়দের মাঝে বিতরণ করে।
ঈদুল আজহার এই সময় সৌদি আরবে পবিত্র হজ পালিত হয়। এসময় বিশ্বের নানা প্রান্ত থেকে লাখ লাখ মুসলমান সেখানে জড়ো হন। তারা ধর্মীয় নিয়ম অনুসরণ করে হজের প্রতিটি ধাপ সম্পন্ন করেন এবং কোরবানি দেন। পুরো আয়োজনটি অত্যন্ত কঠোর নিরাপত্তা ও ধর্মীয় শৃঙ্খলার সঙ্গে সম্পন্ন করা হয়।
বিভি/আইজে




মন্তব্য করুন: