• NEWS PORTAL

  • শুক্রবার, ০৬ জুন ২০২৫

Drama: Jamai Bou Chor
Drama: Jamai Bou Chor

স্পেন থেকে ঘোড়ায় চড়ে হজে—৭ মাস পর মক্কায় হাজির ৩ হজযাত্রী

প্রকাশিত: ১২:৩৮, ৫ জুন ২০২৫

আপডেট: ১২:৪২, ৫ জুন ২০২৫

ফন্ট সাইজ
স্পেন থেকে ঘোড়ায় চড়ে হজে—৭ মাস পর মক্কায় হাজির ৩ হজযাত্রী

ছবি: সংগৃহীত

ঘোড়ায় চড়ে সাউথ স্পেন থেকে প্রায় ৬,৫০০ কিলোমিটার পথ পাড়ি দিয়ে হজ পালন করতে এসেছেন তিন স্প্যানিশ নাগরিক। স্পেনের আন্দালুসিয়া থেকে শুরু হওয়া এই অভূতপূর্ব হজযাত্রা সফলভাবে শেষ হয় ইসলামের পবিত্র ভূমি মক্কায়, যা ইতিহাসে এক অনন্য দৃষ্টান্ত হিসেবে স্থান করে নিয়েছে। প্রায় ৫০০ বছর আগের একটি ঐতিহাসিক হজ রুট অনুসরণ করে এই দীর্ঘ ও কষ্টসাধ্য যাত্রা সম্পন্ন করেন তারা। একসময় এই পথটি আন্দালুসীয় মুসলিমদের জন্য হজে যাওয়ার অন্যতম প্রধান রুট হিসেবে ব্যবহৃত হতো।

এই অভূতপূর্ব উদ্যোগ নিয়েছিলেন চার অশ্বারোহী—আবদেলকাদির হারকাসি আইদি, তারেক রদ্রিগেজ, আবদাল্লাহ রাফায়েল হেরনান্দেজ মানচা ও মোহাম্মদ মেসবাহি। তবে সফরের শুরুতেই দুটি ঘোড়া অসুস্থ হয়ে পড়ায় মোহাম্মদ মেসবাহিকে যাত্রা থেকে সরে দাঁড়াতে হয়।

এই ব্যতিক্রর্মী হজযাত্রা শুরু হয় ২০২৪ সালের অক্টোবরে স্পেনের আলমোনাস্তার লা রিয়ালের একটি ঐতিহাসিক মসজিদ থেকে। হেরনান্দেজ মানচা জানান, তিনি ৩৬ বছর আগে ইসলাম গ্রহণের অঙ্গীকার করেছিলেন। ফলে, সেই প্রতিশ্রুতি পূরণ করতেই তিনি এই হজযাত্রায় অংশগ্রহণ করেছেন।

সাত মাসের দীর্ঘ এই যাত্রাটি ছিল পরিশ্রম, আত্মত্যাগ ও অগণিত চ্যালেঞ্জে ভরপুর। খুজেস্তানি ঘোড়ার প্রশিক্ষণ, অর্থনৈতিক সংকট, বৈচিত্র্যময় আবহাওয়া ও জটিল ভৌগোলিক প্রতিবন্ধকতা—সবকিছুই এই যাত্রাকে করে তোলে আরও কঠিন।  

প্রতিদিন গড়ে ৪০ কিলোমিটার পথ অতিক্রম করতেন তারা। নিজেরাই রান্না করতেন, রাতে ঘুমাতেন তাঁবুতে। যদিও ফ্রান্স, ইতালি, বসনিয়া, সার্বিয়া, তুরস্ক, সিরিয়া ও জর্ডানের স্থানীয় মানুষদের সহায়তা তাদের পথচলায় সাহস ও প্রেরণা জোগায়।

তুরস্কে ঢোকার পর রমজান শুরু হলে তারা রোজা রেখেই যাত্রা অব্যাহত রাখেন। সেখানেই স্থানীয়দের সঙ্গে তারা ইফতার করেন। সিরিয়া, দামেস্ক ও জেরুজালেম অতিক্রম করে অবশেষে তারা প্রবেশ করেন সৌদি আরবে। সৌদি আরবে প্রবেশের সময় কিছু প্রশাসনিক সমস্যার মুখোমুখি হন তারা। পরে সেগুলো সমাধান হলে রিয়াদে ঘোড়াগুলো রেখে তারা মদিনা হয়ে পৌঁছান মক্কায়।

আবদেলকাদির হারকাসি আইদি বলেন, এটি ছিল অসম্ভব এক যাত্রা, যা আল্লাহর ইচ্ছাতেই সম্ভব হয়েছে। তিনি বলেন, তারা শুধু হজ করতে আসেননি বরং স্পেনের মুসলিম সমাজের প্রতিনিধিত্বও করতে এসেছেন। 

এই অনন্য হজযাত্রা বিশ্বব্যাপী অশ্বারোহী ও ধর্মপ্রাণ মানুষের ভেতর দারুণ সাড়া ফেলেছে। তবে যাত্রার শেষদিকে এক ধরনের বিষাদের ছোঁয়া রয়ে গেছে। ঘোড়াগুলো আর তাদের সঙ্গে ফিরতে পারবে না। জানা গেছে, সৌদি আরবেই ঘোড়াগুলোর সঠিক পরিচর্যার ব্যবস্থা করা হচ্ছে। 

বিভি/আইজে

মন্তব্য করুন: