সমগ্র মুসলিম বিশ্ব ইরানের পাশে রয়েছে: ফোনালাপে পেজেশকিয়ানকে মোহাম্মদ বিন সালমান

ছবি: সংগৃহীত
ইসরাইলের হামলার জবাবে ইরানের পাল্টা আক্রমণের পর মধ্যপ্রাচ্যের পরিস্থিতি আরও উত্তপ্ত হয়ে উঠছে। ইরানের প্রতিক্রিয়ায় মারাত্মক ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছে ইসরাইল। এই উত্তেজনাকর পরিস্থিতিতে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন টেলিফোনে আলোচনা করেছেন। এদিকে, ইরানের প্রেসিডেন্ট মাসুদ পেজেশকিয়ানের সঙ্গে ফোনালাপ হয়েছে সৌদি আরবের ক্রাউন প্রিন্স মোহাম্মদ বিন সালমানের। এসময় ক্রাউন প্রিন্স ইরানের প্রেসিডেন্টকে বলেন, আজ পুরো মুসলিম বিশ্ব ঐক্যবদ্ধভাবে আপনার পাশে রয়েছে।
ইরানের রাষ্ট্রীয় সংবাদ সংস্থা ইরনা নিউজের বরাতে জানা গেছে, গত শনিবার (১৪ জুন) ইরানের প্রেসিডেন্ট মাসুদ পেজেশকিয়ানের সঙ্গে সৌদি আরবের ক্রাউন প্রিন্স মোহাম্মদ বিন সালমানের ফোনালাপ হয়। এসময় এমবিএস বলেন, সৌদি আরব বিশ্বাস করে যে ইরান বিচক্ষনতার সাথে কাজ করে তেল আবিবের সকল ষড়যন্ত্রকে ব্যর্থ করে দেবে।
তিনি ইরানে ইসরাইলের হামলার নিন্দা জানিয়ে আরও বলেন, এই হামলা ইরানের সার্বভৌমত্ব ও নিরাপত্তাকে ক্ষুণ্ন করেছে। পাশাপাশি আন্তর্জাতিক আইন ও বিধিমালার লঙ্ঘনও ঘটিয়েছে। এছাড়া ইসরাইলের এই আক্রমণ ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচি নিয়ে চলমান সংলাপকেও ব্যাহত করে দিয়েছে।
এমবিএস আরও বলেন, সৌদি আরব মনে করে যে ইসরাইলি নেতৃত্ব ইচ্ছাকৃতভাবে ইরানের সঙ্গে উত্তেজনা বৃদ্ধি করতে চাইছে, যাতে তারা যুক্তরাষ্ট্রকে এই সংঘাতে জড়িয়ে ফেলতে পারে। এমবিএস এসময় ইরানি জনগণ ও নিহতদের পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনা জানিয়েছেন। পাশাপাশি আহতদের দ্রুত সুস্থতা কামনা করেন তিনি।
এদিকে অপরপাশ থেকে পেজেশকিয়ান বলেন, তিনি দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকেই আঞ্চলিক শান্তি, নিরাপত্তা ও স্থিতিশীলতা বজায় রাখতে সক্রিয়ভাবে কাজ করে যাচ্ছেন। তবে, প্রতিবারই ইসরাইল তার সেই প্রচেষ্টাগুলোকে বাধাগ্রস্ত করার চেষ্টা করছে। তিনি আরও বলেন, ইরান ও সৌদি আরব যদি একত্রে কাজ করে, তবে তারা এই অঞ্চলে শান্তি নিশ্চিত করতে পারবে।
এর আগে তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোয়ানের সঙ্গেও ফোনালাপ হয় এমবিএসের। এসময় তিনি ইরানে ইসরাইলের হামলার পর পার্শ্ববর্তী অঞ্চলের পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা করেন।
ইসরাইলি বাহিনী যখন ইরানের অভ্যন্তরে হামলা চালানো শুরু করে, তখন প্রাথমিক পর্যায়ের হামলায় ইরানের আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা ও পারমাণবিক স্থাপনাগুলোকে টার্গেট করা হয়। এছাড়া, ইরানের উচ্চপর্যায়ের সামরিক কর্মকর্তারাও এই হামলার মূল টার্গেট ছিলেন। তেহরানের তথ্য অনুযায়ী, এ ঘটনায় অন্তত ৭৮ জনের মৃত্যু হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছেন উচ্চপদস্থ সামরিক কমান্ডার, পারমাণবিক খাতে কর্মরত বিজ্ঞানী ও অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ কর্মকর্তারা। এদিকে যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও বলেন, এই হামলায় যুক্তরাষ্ট্রের কোনো সংশ্লিষ্টতা নেই।
ইসরাইলের হামলার পর ইরানও পাল্টা প্রতিশোধমূলক আক্রমণ শুরু করে। এসময় তারা তেল আবিব ও জেরুজালেমে হামলা চালায়। ইরানি কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, প্রয়োজনে এই অভিযান সামনেও অব্যাহত থাকবে।
এদিকে ইসরাইল ইরানের জ্বালানি খাতের অন্তত দুটি গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনায় শক্তিশালী আঘাত হেনেছে। এই ঘটনার পর মধ্যপ্রাচ্যের এই সংঘাত আরও জটিল ও বিস্তৃত আকার ধারণ করেছে।
বিভি/আইজে
মন্তব্য করুন: