ইসরাইলি হামলা থেকে সুরক্ষায় বাঙ্কারে আশ্রয় নিয়েছেন খামেনি?

কেবল ইরানের শীর্ষ পর্যায়ের কর্মকর্তারা নয়, সর্বোচ্চ ধর্মীয় নেতা আয়াতুল্লাহ আলি খামেনিকেও হত্যার পরিকল্পনা করে ইসরাইল। তবে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প তা ভেস্তে দেন। নাম প্রকাশ না করে ট্রাম্প প্রশানের দুটি সূত্রের বরাত দিয়ে এক প্রতিবেদনে এমনটাই জানিয়েছে সিএনএন। এখন পর্যন্ত ইসরাইল-ইরান সংঘাতে জড়াতে চাইছেন না, জনসমক্ষে ও ব্যক্তিগত পরিসরে ট্রাম্প যখন এমন বার্তা দিয়ে চলেছেন, সে সময়ই এই তথ্য সামনে এলো।
সপ্তাহান্তে জ্যেষ্ঠ এক মার্কিন কর্মকর্তার কাছ থেকে পাওয়া তথ্যের বরাতে সিএনএন জানায়, ইসরাইলের হাতে ইরানের সর্বোচ্চ ধর্মীয় নেতাকে হত্যার একটি সুযোগ এসেছিল। কিন্তু প্রেসিডেন্ট ভেটো দেয়ায় তা বাস্তবায়ন করা হয়নি। ওই কর্মকর্তার মতে, ট্রাম্প ইসরাইল-ইরান উত্তেজনা কমাতে ব্যাগ্র হয়ে আছেন।
তবে ফক্স নিউজকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে, এ ধরনের কোনো কিছুর কথা অস্বীকার করেছেন ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু। তিনি বলেন, ট্রাম্পের সাথে আলোচনা নিয়ে এতো মিথ্যা প্রতিবেদন সামনে আসছে যে তিনি এগুলো নিয়ে কথা বলতে আগ্রহী নন। এছাড়া সিএনএনকে নেতানিয়াহুর এক মুখপাত্র জানিয়েছেন, ট্রাম্প খামেনিকে হত্যার পরিকল্পনা ভেস্তে দিয়েছেন এমন তথ্য ভুয়া।
এদিকে সত্য হোক বা মিথ্যা, খামেনিকে হত্যার পরিকল্পনা করা বা তা ভেস্তে দেয়ার মতো প্রসঙ্গ সামনে আনার বিষয়টিকে মোটেই সরলভাবে দেখছেন না বিশ্লেষকরা। তাদের মতে, এর মধ্য দিয়ে একটি বিষয় স্পষ্ট যে, ইরানের সর্বোচ্চ নেতাকে হত্যার বিষয়টি বিবেচনার বাইরে নয়।
ইসরায়েলের সাবেক কূটনীতিক অ্যালন পিঙ্কাসের ধারণা, ইরানের রাজনৈতিক নেতৃত্বকে ভয় দেখানোর জন্য এমন প্রচারণা সামনে আনা হয়েছে। বোঝানোর চেষ্টা করা হয়েছে যে, কোনো বিকল্পই বিবেচনার বাইরে নয়। একই সাথে বোঝানো হচ্ছে যে, যুক্তরাষ্ট্র সংযম দেখাচ্ছে এবং ইসরায়েলকেও সংযত থাকতে বলছে। তবে ইরান আরো আগে বাড়লে এই সংযম থাকবে না। খামেনির হত্যা পরিকল্পনার প্রসঙ্গ এনে একসাথে এ ধরনের অনেকগুলো দিক ইঙ্গিত করা হচ্ছে বলে মনে করছেন পিঙ্কাস।
এদিকে ইসরাইলের অপ্রত্যাশিত হামলার পরপরই পরিবারের সদস্যদের নিয়ে খামেনি বাঙ্কারে আশ্রয় নিয়েছেন। যুক্তরাজ্যভিত্তিক ফার্সি সংবাদমাধ্যম ইরান ইন্টারন্যাশনালের এক প্রতিবেদনে এমনটা দাবি করা হয়েছে। তাদের বরাত দিয়ে ইসরাইলি সংবাদমাধ্যম টাইমস অব ইসরাইল জানিয়েছে, ইসরাইলি হামলা শুরুর বেশ কয়েক ঘণ্টা পর তেহরানের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের লাভিজানে একটি বাঙ্কারে আশ্রয় নেন খামেনি।
খামেনির সঙ্গে তার ছেলে মোজতবাও আছেন বলে দাবি টাইমস অব ইসরাইলের। খামেনির পর ইরানের সর্বোচ্চ ধর্মীয় নেতা হতে পারেন মোজতবা। এর আগে ইসরাইলে ইরানের হামলা ট্রু প্রমিজ-ওয়ান ও ট্রু প্রমিজ টু’র সময়ও খামেনি পরিবারের সদস্যদের নিয়ে বাঙ্কারে আশ্রয় নেন বলে জানিয়েছে ইরান ইন্টারন্যাশনাল।
বিভি/এইচজে
মন্তব্য করুন: