পার্কিং লটে তাঁবু খাটিয়ে রাত কাটাচ্ছে ইসরাইলিরা (ভিডিও)
ইসরাইলের আগ্রাসনের কারণে ফিলিস্তিনের প্রায় বিশ লাখ মানুষ অভ্যন্তরীণভাবে বাস্তুচ্যুত হয়েছেন। যাদের অর্ধেকই রাফাহ, খান ইউনিস ও গাজার বিভিন্ন অস্থায়ী তাঁবু শিবিরে আশ্রয় নিতে বাধ্য হয়েছেন। এসব তাঁবুতে এক মানবেতর জীবন কাটাচ্ছেন তারা। একটি ছোট তাবুতে পরিবারের সবাই একসাথে গাদাগাদি করে থাকেন। রান্না, ঘুম, বাচ্চাদের যত্ন--সবই করতে হয় এই ছোট্ট তাঁবুতে।
সময়ের পরিক্রমায় এখন পাতলা কাপড়ের তাবুতেই আশ্রয় খুঁজছে দখলদার ইসরাইলিরা। যারা এতদিন দালান তুলেছে নিজেদের নিরাপদ রাখতে, তারাই এখন একটু নিরাপদ আশ্রয়ের খোঁজে ভিড় জমাচ্ছে তাঁবুতে।
আয়রন ডোম, অ্যারো ও ডেভিড’স স্লিং-এর মতো আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার কারণে নিজেদেরকে বিশ্বের সবচেয়ে নিরাপদ আকাশসীমার মালিক মনে করতো ইসরাইল। তবে শক্তিশালী আঘাতের মাধ্যমে ইসরাইলের সেই আস্থার দুর্গে ফাটল ধরিয়েছে ইরান। ইরানের লাগাতার মিসাইল ও ড্রোন হামলায় রীতিমত বিপর্যস্ত ইসরাইল।
এমন অবস্থায় ইসরাইলের তেল আবিব শহরের বহু আন্ডারগ্রাউন্ড পার্কিং লটকে বোমা আশ্রয়কেন্দ্র হিসেবে ব্যবহারের জন্য প্রস্তুত করা হয়েছে। বিশেষ করে হাবিমা থিয়েটারের নিচের চারতলা পার্কিং গ্যারেজটি এখন আধুনিক বোমা শেল্টারে রূপান্তরিত হয়েছে। সামাজিক মাধ্যমে প্রকাশিত বিভিন্ন ভিডিওতে দেখা যায়, পর্যাপ্ত আলো বাতাসহীন পার্কিং এরিয়াতে ছোট ছোট তাঁবু প্রস্তুত করা হয়েছে। যেখান থেকে বাইরের আকাশ দেখারও কোনো সুযোগ নেই।
শুধু হাবিমা নয়, পুরো তেল আবিব শহরে ৬০টি আন্ডারগ্রাউন্ড পার্কিং লট ও গ্যারেজকে জরুরি পরিস্থিতিতে বোমা আশ্রয়কেন্দ্র হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে। যেখানে একসাথে ৮ লাখ মানুষ থাকতে পারবেন। এই পার্কিং লটগুলোতে এখন শত শত মানুষ অস্থায়ীভাবে তাঁবু খাটিয়ে থাকছেন। ইরানের মিসাইল হামলা থেকে বাঁচতে আবদ্ধ আন্ডারগ্রাউন্ডের অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে থাকতে বাধ্য হচ্ছেন তারা। শুধু তাঁবু নয়, হামলা থেকে বাচতে ব্রিজের নিচে ও টানেলের ভেতরেও আশ্রয় নিচ্ছেন অনেকে।
বুধবার রাতে ইরানের তেহরানসহ বিভিন্ন স্থানে হামলা চালায় ইসরাইল। এর মধ্যে পারমাণবিক স্থাপনা নাতানজও ছিল। জবাবে ঘোষণা দিয়ে ইসরাইলে ব্যাপক হামলা চালায় ইরান। বুধবার রাতেই প্রথমবারের মতো সিজ্জিল ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবহার করেছে দেশটির নিরাপত্তা বাহিনী। এর পর থেকে সেখানে হতাহতের সংখ্যা বাড়ছেই।
এদিকে ইরানের এই তীব্র হামলার কথা স্বীকার করেছে ইসরাইলও। দেশটির প্রতিরক্ষা বাহিনী বলছে, ইরান এখন যেসব ক্ষেপণাস্ত্র ছুড়ছে, তাতে একাধিক ওয়ারহেড থাকছে। ফলে একই ক্ষেপণাস্ত্র একাধিক স্থানে আঘাত হানছে। এই হামলাকে ইরানের সবচেয়ে বড় হামলা হিসেবে আখ্যা দিয়েছে তারা। আর এসব হামলা থেকে বাঁচতে এমন বাংকার গুলোই এখন ইসরাইলিদের ভরসা।
বিভি/এমএফআর




মন্তব্য করুন: