ইরানে মার্কিন হামলার পর যা বলছেন বিশ্বনেতারা (ভিডিও)

দীর্ঘ কূটনৈতিক টানাপোড়েনের পর অবশেষে খোলস ছেড়ে বের হলো যুক্তরাষ্ট্র। বহুদিনের ছায়াযুদ্ধ এবার রূপ নিলো সরাসরি সংঘাতে। ইরানের তিনটি পরমাণু কেন্দ্র লক্ষ্য করে হামলা চালালো যুক্তরাষ্ট্র।

আন্তর্জাতিক বিভিন্ন গণমাধ্যমের সুত্রে জানা যায়, ইরানের ৩ পারমাণবিক স্থাপনায় হামলা করার সময় বি-২ বোমারু বিমান ও সাবমেরিন ব্যবহার করছে যুক্তরাষ্ট্র। এসব স্থাপনার মধ্যে রয়েছে ফরদো, নাতাঞ্জ ও ইস্পাহান। তবে ইরান জানিয়েছে, এসব পারমাণবিক স্থাপনায় বিমান হামলায় কিছু অংশ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ইরানের দাবি, যুক্তরাষ্ট্রে যেই তিনটি পারমাণবিক স্থাপনায় হামলার কথা বলছে, আদতে সেখানে এমন কোনো পদার্থ নেই যা তেজস্ক্রিয়তা সৃষ্টি করে।

ইরানের পারমাণবিক স্থাপনায় মার্কিন বোমারু বিমানগুলো হামলা চালানোর পর জাতির উদ্দেশে ভাষণ দিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। মার্কিন প্রেসিডেন্ট বলেন, ‘এ হামলার উদ্দেশ্য ইরানের পারমাণবিক সমৃদ্ধকরণ সক্ষমতা শেষ করে দেয়া। এ সময় ইরানে হামলাকে ‘অসাধারণ সামরিক সাফল্য’ বলে মন্তব্য করেন তিনি। 

এদিকে ইরানের রমাণবিক স্থাপনায় যুক্তরাষ্ট্রের হামলার প্রতিক্রিয়া জানাচ্ছেন বিশ্বনেতারা। জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস ইরানে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক হামলার ঘটনায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। তিনি একে মধ্যপ্রাচ্যের জন্য একটি ‘বিপজ্জনক উত্তেজনা’ হিসেবে বর্ণনা করেছেন এবং সতর্ক করেছেন যে, এই সংঘাত খুব দ্রুত নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যেতে পারে।

ইরানে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের হামলাকে ‘প্রকাশ্য আগ্রাসন’ আখ্যা দিয়ে নিন্দা জানিয়েছে ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাস। এক বিবৃতিতে হামাস বলেছে, এই হামলা আন্তর্জাতিক আইনের সুস্পষ্ট লঙ্ঘন এবং আন্তর্জাতিক শান্তি ও স্থিতিশীলতার জন্য সরাসরি হুমকি।

ইরানে মার্কিন হামলার সমালোচনা হচ্ছে যুক্তরাষ্ট্রেও। ইরানে যে হামলা চালানো হয়েছে তা চরমভাবে অসাংবিধানিক বলে মন্তব্য করেছেন ডেমোক্র্যাট দলীয় মার্কিন সিনেটর বার্নি স্যান্ডার্স। স্যান্ডার্সের মতে, কেবল মার্কিন কংগ্রেসেরই এই দেশকে যুদ্ধে পাঠানোর ক্ষমতা আছে। প্রেসিডেন্টের সেই অধিকার নেই।

ইরানের পারমাণবিক স্থাপনায় মার্কিন হামলার প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে দক্ষিণ আমেরিকার দেশ ভেনেজুয়েলা। ইরানের বিরুদ্ধে মার্কিন সামরিক আগ্রাসনের নিন্দা জানিয়ে অবিলম্বে শত্রুতা বন্ধের দাবি জানিয়েছে দেশটি। এছাড়াও প্রতিক্রিয়া জানিয়ে বিবৃতি প্রকাশ করেছে মেক্সিকো, কিউবা, অস্ট্রেলিয়া ও নিউজিল্যান্ড।

বিশ্লেষকদের অনেকে মনে করছেন, মার্কিন হামলার পর মধ্যপ্রাচ্যে বড় ধরনের যুদ্ধ ছড়িয়ে পড়তে পারে। ইরানের সরকারি টেলিভিশন থেকে জানানো হয়েছে, এখন থেকে ওই অঞ্চলের প্রতিটি আমেরিকান সামরিক ও বেসামরিক সদস্যকে হামলার বৈধ লক্ষ্য হিসেবে বিবেচনা করা হবে। তবে ধ্যপ্রাচ্যে ইরানের অনেক মিত্র এবং প্রক্সি রয়েছে। ফলে তারা তেহরানের নির্দেশের আগেই নিজ উদ্যোগে মার্কিন স্বার্থকে লক্ষ্যবস্তু করতে পারে বলেও আশঙ্কা করছেন অনেকে।