কোরআনে যে বর্ণনা রয়েছে ইহুদি জাতির

মহান আল্লাহ তাআলা ইহুদিদের মাঝে বহু নবী-রসুল পাঠিয়েছেন। তাদের আসমানি কিতাবও দিয়েছেন। তাই তাদের বলা হয় আহলে কিতাব। মুসা (আ.)-এর পর আল্লাহ দুজন নবি ঈসা (আ.) ও মুহাম্মাদ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে পাঠিয়েছেন। যারা এ দুইজনকে নবী হিসেবে স্বীকার করে না, তারা ‘ইহুদি’ নামে পরিচিত।
ইহুদি শব্দটি পবিত্র কোরআনে ৯ বার উল্লেখ হয়েছে। ইহুদিরা হজরত ইয়াকুব আলাইহিস সালামের বংশধর। ইহুদি শব্দটি এসেছে ইয়াহুদা থেকে, যিনি ছিলেন হজরত ইয়াকুব আলাইহিস সালামের জ্যেষ্ঠপুত্র ও হজরত ইউসুফ আলাইহিস সালামের ভাই। মূলত শব্দটি ছিল ইয়াহুজা। জালকে দাল দিয়ে পরিবর্তন করে আরবি করা হয়েছে।
ইয়াহুদা শব্দের অর্থ তাওবাকারী। গোবৎস পূজা থেকে তওবা করার কারণে তার নাম হয়েছে ইয়াহুজা। অর্থাৎ তাওবাকারী। (কুরতুবি প্রথম খণ্ড পৃষ্ঠা-৩৩৮)
পবিত্র কোরআনে ইহুদি জাতির চরিত্র নিয়ে মহান আল্লাহ বলেন,
لَاَنْتُمْ اَشَدُّ رَهْبَةً فِيْ صُدُوْرِهِمْ مِّنَ اللهِ ذٰلِكَ بِاَنَّهُمْ قَوْمٌ لَّا يَفْقَهُوْنَ
অর্থ: (হে মুসলিমগণ!) প্রকৃতপক্ষে তাদের অন্তরে আল্লাহর চেয়ে তোমাদের ভয়ই বেশি। তা এজন্য যে, তারা এমনই এক সম্প্রদায়, যাদের বুঝ নেই। (সুরা হাশর, আয়াত: ১৩)
এখনও দেখা যায় কথিত বড় সামরিক শক্তি হওয়া সত্ত্বেও নিরস্ত্র ফিলিস্তিনীদের প্রতি তারা এত ভীত! ইসলাম ও ইসলামের নবীর বিরুদ্ধে বনু নজিরের ষড়যন্ত্র ফাঁস হওয়ার পর নবীজি যখন তাদের তল্পিতল্পা গুটিয়ে মদিনা থেকে চলে যাওয়ার সময় বেঁধে দিলেন, মুনাফিকদের প্রলোভনে তারা মদিনায় বসে থাকল। অবশেষে মুনাফিকদের সাহায্য না পেয়ে তারা দুর্গে গিয়ে আশ্রয় নিলো। এই প্রসঙ্গে কোরআনের সুরা হাশর নাজিল হয়। সেখানে এও বলা হয়েছে,
لَا يُقَاتِلُوْنَكُمْ جَمِيْعًا اِلَّا فِيْ قُرًي مُّحَصَّنَةٍ اَوْ مِنْ وَّرَآءِ جُدُرٍ بَاْسُهُمْ بَيْنَهُمْ شَدِيْدٌ تَحْسَبُهُمْ جَمِيْعًا وَّ قُلُوْبُهُمْ شَتّٰي ذٰلِكَ بِاَنَّهُمْ قَوْمٌ لَّا يَعْقِلُوْنَ
অর্থ: তারা সকলে একাট্টা হয়েও তোমাদের সঙ্গে যুদ্ধ করবে না, তবে এমন জনপদে (করবে), যা প্রাচীর দ্বারা সুরক্ষিত অথবা (করবে) দেয়ালের আড়ালে লুকিয়ে। তাদের আপসের মধ্যে বিরোধ প্রচণ্ড। তুমি তাদের ঐক্যবদ্ধ মনে কর, অথচ তাদের অন্তর বহুধা বিভক্ত। তা এজন্য যে, তারা এমনই এক সম্প্রদায়, যাদের বুদ্ধি নেই। (সুরা হাশর, আয়াত: ১৪)
পরকালের সফলতা একমাত্র নিজেদের বলে নবীজির কাছে তাদের মিথ্যা আস্ফালন দেখাতো, কিন্তু নবীর পক্ষ থেকে যখনই তাদের চ্যালেঞ্জ দেওয়া হতো যে, যদি তোমরা আল্লাহর এতই প্রিয় বান্দা হয়ে থাক, পরকালের সফলতা যদি তোমাদেরই হয়ে থাকে, তাহলে এই জগৎ থেকে ওই জগতের পাড়ি দেওয়ার একমাত্র সেতুপথ মৃত্যুটা একটু কামনা করে দেখাও না! কিন্তু মৃত্যু কামনা দূরের কথা; এদের একেকজন কামনা করে, যদি পৃথিবীতে হাজার বছর পর্যন্ত বেঁচে থাকা যায়! (সুরা বাকারা, আয়াত: ৯৪-৯৬)
বিভি/টিটি
মন্তব্য করুন: