• NEWS PORTAL

  • রবিবার, ১৫ জুন ২০২৫

Drama: Jamai Bou Chor
Drama: Jamai Bou Chor

প্রিয়জনকে বুকে জড়িয়ে ধরলে নারীরা মানসিক শান্তি পান 

প্রকাশিত: ০৯:১১, ২ জুন ২০২২

ফন্ট সাইজ
প্রিয়জনকে বুকে জড়িয়ে ধরলে নারীরা মানসিক শান্তি পান 

প্রিয়জনকে বুকে আলিঙ্গন কে না করতে চায়? সবার প্রিয় মুহূর্তগুলোর একটি হলো- ভালোবাসার মানুষের আলিঙ্গন। আর গবেষণা বলছে প্রিয়জনের আলিঙ্কন  নারীর মনে প্রশান্তি আনে। তবে পুরুষের ওপর এর প্রভাব কম।

গবেষণা বলছে, নারী হলে প্রভাবটা বিশাল। পুরুষ হলে তেমন কোনো প্রভাবই নেই। ‘পিএলওএস ওয়ান’ সাময়িকীতে প্রকাশিত এক গবেষণায় এই তথ্য উঠে আসে। জার্মানির ‘রুয়র ইউনিভার্সিটি বখুম’ ও ‘মেডিকেল স্কুল হ্যামবার্গ’ এবং ‘নেদারল্যান্ড ইন্সটিটিউট অফ নিউরোসায়েন্স’য়ের করা এই গবেষণায় মোট ৭৬ জন অংশ নেন।

গবেষণার প্রধান, নেদারল্যান্ড ইন্সটিটিউট অফ নিউরোসাইন্স’য়ের ‘পোস্ট ডক্টরাল’ গবেষক জুলিয়ান প্যাকহাইজার সিএনএন ডটকম’য়ে প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলেন, “এদের মধ্যে যারা নারী, তাদের প্রিয় মানুষটার কাছ থেকে যদি আলিঙ্গন পায় তবে তার শরীরে ‘কর্টিসল’ উৎপাদনের মাত্রা কমে যায় অনেকাংশে।”

‘কর্টিসল’ এমন একটি হরমোন যা মানসিক চাপ সৃষ্টির জন্য দায়ী। স্মৃতিশক্তির ওপর এই হরমোন প্রভাব ফেলে, যে কারণে মানসিক চাপ সৃষ্টি করে।

তবে এদিক থেকে পুরুষ আবার অভাগা। তিনি আরও বলেন, “শারীরিক স্পর্শ শরীরের বিভিন্ন বিষয়ের ওপর নিয়ন্ত্রণ রাখতে পারে ব্যাপারটা অবিশ্বাস্য নয়। যে মানুষটাকে আপনি ভালোবাসেন তার কাছ থেকে ভালোবাসা পেলে ‘অক্সিটোসিন’ নামক ‘নিউরোট্রান্সমিটার’ নিঃসৃত হয়। যাকে ‘লাভ হরমোন’ বলে। এই হরমোন ‘কর্টিসল’য়ের মাত্রা কমায়, ফলে মানসিক চাপ কমে।”

“অন্যান্য গবেষণায় লম্বা সময় ভালোবাসার মানুষের স্পর্শ পাওয়ার উপকারিতার দিকেও নজর দেয়। যেমন শরীর মালিশ। তবে এর উপকারিতার সপক্ষে বৈজ্ঞানিক ভিত্তি ছিল দুর্বল। সেই তুলনায় আলিঙ্গন করা যায় দ্রুত এবং মানসিক অবস্থাকে প্রভাবিত করে তাৎক্ষণিকভাবে”, বলেন এই গবেষক।

পুরুষের ক্ষেত্রে কেনো এমনটা হয় না সে প্রসঙ্গে প্যাকহাইজার বলেন, “এটা নিশ্চিতভাবে বলা মুশকিল। আলিঙ্গনের প্রতি পুরুষের সামাজিক দৃষ্টিভঙ্গি একটা কারণ হতে পারে। পুরুষের ক্ষেত্রে আলিঙ্গনকে সামাজিকভাবে বিব্রতকর দৃষ্টিতে দেখা হয়। পুরুষ আর নারীর জৈবিক গড়ন ভিন্ন, তাই স্পর্শ অনুভব করার ইন্দ্রিয়ও ভিন্ন। এই পার্থক্যও একটা কারণ হওয়া সম্ভব।”

“নারী ও পুরুষের মধ্যে এই তফাৎ পাওয়া যাবে এমনটা আমাদের ধারণার বাইরে ছিল। আর এটাই চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নয়। আমাদের গবেষণায় পুরুষকে জড়িয়ে ধরায় তার মানসিক অবস্থার ওপর কোনো প্রভাব খুঁজে পাওয়া যায়নি। তাই বলে যে কোনো প্রভাবই নেই এমনটা ধরে নেওয়া উচিত হবে না। হয়ত প্রভাবটা খুবই সামান্য যা আমরা ধরতে পারিনি,” বলেন তিনি।

আশপাশের মানুষগুলো যেমন জীবনসঙ্গী, আত্মীয়, বন্ধু, সহকর্মী যদি মানসিক বিপর্যয়ের মধ্যে থাকে তবে সম্ভব হলে তাদের জড়িয়ে ধরার পরামর্শ দেন প্যাকহাইজার।

যুক্তরাষ্ট্রের ওহায়ো’র ‘ক্লিনিকাল সাইকোলজিস্ট’ লিসা ডামোর বলেন, “বয়সন্ধিকাল পার করছে এমন মেয়েদের সঠিক বিকাশের ক্ষেত্রে বাবা-মায়ের আলিঙ্গন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। যে কোনো নেতিবাচক ঘটনার পর পরস্পরকে জড়িয়ে ধরা পরিস্থিত স্বাভাবিক করতে দারুণ কার্যকর।”

এই গবেষণার ওপর ভিত্তি করে, দি ইউনিভার্সিটি অফ অ্যারিজোনা’র অধ্যাপক কোরি ফ্লয়েড বলেন, “জড়িয়ে ধরার প্রতি মানুষের অনুভূতি ব্যক্তিভেদে ভিন্ন হতে পারে। এমনকি একজন নারীও জড়িয়ে ধরাকে অপছন্দ করতে পারেন। কারও জন্য আলিঙ্গন যেমন ভালোবাসার উষ্ণতা আবার কারও সেটাই হতে পারে বিব্রতকর এবং সীমা লঙ্ঘনের প্রতিক। যিনি অপছন্দ করেন তার জন্য আবার এই আলিঙ্গনই হবে মানসিক অস্বস্তির কারণ।”

বিভি/এজেড

মন্তব্য করুন: