• NEWS PORTAL

  • রবিবার, ০৫ মে ২০২৪

Inhouse Drama Promotion
Inhouse Drama Promotion

গাজীপুরের মেয়র জায়েদার নির্বাচন বাতিল চেয়ে মামলা

প্রকাশিত: ১৮:০৭, ৫ জুলাই ২০২৩

আপডেট: ১৮:০৮, ৫ জুলাই ২০২৩

ফন্ট সাইজ
গাজীপুরের মেয়র জায়েদার নির্বাচন বাতিল চেয়ে মামলা

গাজীপুরের নবনির্বাচিত মেয়র জায়েদা খাতুনের নির্বাচন বাতিল চেয়ে মামলা করেছেন নির্বাচনে পরাজিত মেয়র প্রার্থী আতিকুল ইসলাম।

মঙ্গলবার (৪ জুলাই) গাজীপুর সিনিয়র সহকারী জজ ১ নম্বর আদালত ও নির্বাচনী ট্রাইব্যুনালে এ মামলা করেন তিনি। বিচারক আগামী ২ আগস্ট পরবর্তী শুনানির দিন ধার্য করেছেন।

মামলার বাদী গাজীপুর সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে মেয়র পদে গণফ্রন্ট মনোনীত প্রার্থী হিসেবে মাছ প্রতীকে অংশ নিয়ে পরাজিত হন এবং তার জামানত বাজেয়াপ্ত হয়।

মামলায় গাজীপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচন-২০২৩-এ জায়েদা খাতুনের মনোনয়নপত্র অবৈধ ঘোষণা, বাতিল এবং ২৫ মে মেয়র হিসেবে নির্বাচিত প্রার্থীর নির্বাচন বাতিলের আবেদন করা হয়েছে।

মামলায় গাজীপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচনে নির্বাচিত মেয়র জায়েদা খাতুনকে ১ নম্বর বিবাদী এবং প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী হাবিবুল আউয়াল, নির্বাচন কমিশনার মো. আলমগীর, নির্বাচন কমিশনের সচিব মো. জাহাঙ্গীর আলম, গাজীপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচনের রিটার্নিং অফিসার মো. ফরিদুল ইসলামকে মোকাবিলা বিবাদী করা হয়েছে।

মামলার আবেদনে বলা হয়েছে, ১ নম্বর বিবাদী জায়েদা খাতুন তার নির্বাচনী হলফনামায় ‘পিতার নাম’ উল্লেখ করেছেন ‘শামসুল ইসলাম’। কিন্তু তার ২০২২-২০২৩ কর বর্ষের আয়কর রিটার্নে ‘পিতার নাম’ উল্লেখ করেছেন ‘মরহুম মো. শামসুল হুদা’। এতে ১ নম্বর বিবাদী জায়েদা খাতুন তার নির্বাচনী হলফনামায় অসত্য তথ্য প্রদান করেছেন।

স্থানীয় সরকার (সিটি করপোরেশন) নির্বাচন বিধিমালা, ২০১০’ এর ধারা ১৪ এর উপ ধারা (৩) অনুযায়ী ১ নম্বর বিবাদী জায়েদা খাতুনের মনোনয়ন বাতিল করার দায়িত্ব ও সুযোগ থাকলেও ৫ নম্বর মোকাবিলা বিবাদী গাজীপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচন-২০২৩ এর রিটার্নিং অফিসার মো. ফরিদুল ইসলাম প্রতারণামূলকভাবে জায়েদা খাতুনের মনোনয়ন বাতিল করেননি।

১ নম্বর বিবাদী জায়েদা খাতুন তার নির্বাচনী হলফনামায় ১ নম্বর শর্ত পূরণ করেননি। স্থানীয় সরকার (সিটি কর্পোরেশন) নির্বাচন বিধিমালা, ২০১০ (সংশোধনী)-তে হলফনামায় (প্রার্থীর সর্বোচ্চ শিক্ষাগত যোগ্যতার সনদপত্রের সত্যায়িত কপি সংযুক্ত করতে হবে) বলা থাকলেও জায়েদা খাতুন তার নির্বাচনী হলফনামার সঙ্গে শিক্ষাগত যোগ্যতার সার্টিফিকেটের সত্যায়িত কপি সংযুক্ত না করে প্রতারণামূলকভাবে মেয়র পদে প্রার্থী হয়েছেন। নির্বাচনী হলফনামার এই শর্ত পূরণ করতে না পারায় জায়েদা খাতুনের মনোনয়ন অবৈধ ছিল।

জায়েদা খাতুন তার নির্বাচনী হলফনামায় ৪ নম্বর অংশও পূরণ করেননি। নির্বাচনী হলফনামার ৪ নম্বর অংশে ব্যবসা/পেশার বিবরণীতে জায়েদা খাতুন তার ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের নাম, ঠিকানা ও ব্যবসার ধরন/বিবরণী উল্লেখ না করে হলফনামায় তথ্য গোপন করেছেন।

১ নম্বর বিবাদী জায়েদা খাতুন ২০২২-২০২৩ করবর্ষে (মহিলাদের আয়সীমা) ৩ লাখ ৪৫ হাজার টাকা আয় দেখিয়ে শূন্য আয়কর দিয়েছেন। শূন্য আয়কর দেখানোর কারণে জায়েদা খাতুন আয়কর রিটার্নের রসিদের কপি পাননি। স্থানীয় সরকার (সিটি কর্পোরেশন) নির্বাচন বিধিমালা, ২০১০ (সংশোধনী)–তে ১২ ডিজিটের টিআইএন সনদের কপি এবং সম্পদ বিবরণী সংবলিত সর্বশেষ দাখিলকৃত আয়কর রিটার্নের রসিদের কপি দাখিল করতে হবে বলা থাকলেও ১ নম্বর বিবাদী জায়েদা খাতুন তার নির্বাচনী হলফনামার সঙ্গে আয়কর রিটার্নের রসিদের কপি সংযুক্ত করেননি। নির্বাচনী হলফনামার এই শর্তও পূরণ করতে না পারায় জায়েদা খাতুনের মনোনয়ন অবৈধ ছিল।

জায়েদা খাতুন তার ২০২২-২০২৩ করবর্ষের আয়কর রিটার্ন অনুযায়ী হলফনামায় সম্পদের তথ্য গোপন করেছেন। নির্বাচন কমিশনের ওয়েবসাইট থেকে প্রাপ্ত জায়েদা খাতুনের নির্বাচনী হলফনামার সঙ্গে দাখিল করা ২০২২-২০২৩ কর বর্ষের আয়কর রিটার্নে দেখা যায়, তিনি ব্যবসার পুঁজি (মূলধনের জের) হিসেবে দেখিয়েছেন ৪ কোটি ৬৬ লাখ টাকা। এই টাকা জায়েদা খাতুন কোথায় রেখেছেন বা কোথায় বিনিয়োগ করেছেন বা এই টাকায় কোথায় কী ব্যবসা চলে তা জায়েদা খাতুন তার নির্বাচনী হলফনামায় উল্লেখ করেননি।

এছাড়া, অনারেবল টেক্সটাইল কম্পোজিট লিমিটেডে ২ লাখ ৫০ হাজার টাকা মূল্যের ২৫০০টি শেয়ারের বিপরীতে কত টাকা মুনাফা পেয়েছেন তাও জায়েদা খাতুন তার আয়কর রিটার্নে উল্লেখ করেননি।

মামলার আবেদনে আরও বলা হয়েছে, জায়েদা খাতুন তার নির্বাচনী হলফনামায় অস্থাবর সম্পদ দেখিয়েছেন নগদ ৩৫ লাখ টাকা, ব্যাংকে জমা ৫০ হাজার টাকা, অনারেবল টেক্সটাইল কম্পোজিট লিমিটেডের ২৫০০টি শেয়ার মূল্য ২ লাখ ৫০ হাজার টাকা, ৩০ তোলা স্বর্ণ দেখিয়েছেন যার বর্তমান বাজার মূল্য (৭ মে, ২০২৩ তারিখের বাজার দর ৯৮,৪৪৪ /- টাকা ভরি হিসেবে) ২৯ লাখ ৫৩ হাজার ৩২০ টাকা, ইলেকট্রনিক সামগ্রী দেখিয়েছেন ১ লাখ ৫০ হাজার টাকা এবং আসবাবপত্র দেখিয়েছেন ১ লাখ ২০ হাজার টাকা। এ হিসেবে হলফনামায় জায়েদা খাতুন মোট সম্পদ দেখিয়েছেন ৭০ লাখ ২৩ হাজার ৩২০ টাকার। সুতরাং জায়েদা খাতুন ২০২২-২০২৩ কর বর্ষে আয়কর রিটার্নে নিট সম্পদ দেখিয়েছেন ৪ কোটি ৭১ লাখ ২০ হাজার টাকার। ফলে হলফনামায় দেখানো সম্পদের মধ্যে ৪ কোটি ৯৬ হাজার ৬৮০ টাকার গড়মিল পাওয়া গেছে।

মামলার বাদী আতিকুল ইসলাম বলেন, ‘এর আগে, লিখিত অভিযোগ দিয়েছিলাম কিন্তু কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করেনি। এবার দেখি ট্রাইব্যুনালে ন্যায় বিচার পাই কিনা।’

মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করে বাদীপক্ষের আইনজীবী নুর নবী সরদার বলেন, ‘গত মঙ্গলবার আতিকুল ইসলাম একটি মামলা করেছেন।  নির্বাচনী বিরোধ নিষ্পত্তিতে বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশনের গঠিত নির্বাচনী ট্রাইব্যুনালে এ মামলাটি দায়ের করা হয়েছে।’

বিভি/টিটি

মন্তব্য করুন: