• NEWS PORTAL

  • শুক্রবার, ০৩ মে ২০২৪

Inhouse Drama Promotion
Inhouse Drama Promotion

ভোটের মাঠে ৫ ব্যাংক মালিক, চার মাঝির সঙ্গে এক ঈগল

প্রকাশিত: ২৩:২০, ২০ ডিসেম্বর ২০২৩

আপডেট: ১৭:০৮, ২১ ডিসেম্বর ২০২৩

ফন্ট সাইজ
ভোটের মাঠে ৫ ব্যাংক মালিক, চার মাঝির সঙ্গে এক ঈগল

দেশের আলোচিত পাঁচ ব্যাংক মালিক দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশ নিচ্ছেন। সফল এসব ব্যাংক মালিক তাদের নিজ নিজ ক্ষেত্রে পরিচিত হলেও রাজনীতির মাঠে এবার চারজন নৌকা প্রতীকে লড়াই করবেন। অন্যজন ঈগল প্রতীকে লড়বেন স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে। আলোচিত এই ব্যাংক মালিকদের মধ্যে দু’জন নতুন প্রার্থী হয়েছেন এবার। বাকিরা পুরনো নৌকার মাঝি।

তাদের মধ্যে রয়েছেন- সালমান এফ রহমান, আলহাজ্ব মোরশেদ আলম, আনোয়ার হোসেন খান, মো. ওয়াকিল উদ্দিন এবং আব্দুল কাদের আজাদ (এ কে আজাদ)। 

আলোচিত ও সফল এসব ব্যবসায়ীর মধ্যে রয়েছেন আইএফআইসি ব্যাংকের চেয়ারম্যান সালমান এফ রহমান। তিনি ঢাকা-১ আসনে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী। ইতোপূর্বে তিনি একাধিকবার এই আসন থেকে বিজয়ী হয়েছে। এছাড়া তিনি ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন এফবিসিসিআইএর প্রেসিডেন্ট ছিলেন। ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠনের আরেক সাবেক প্রেসিডেন্ট একে আজাদ। তিনি শাহজালালা ইসলামী ব্যাংকের পরিচালক ও হামিম গ্রুপের চেয়ারম্যান। এবার প্রথমবারের মতো ঈগল প্রতীক নিয়ে ফরিদপুর-৩ আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়েছেন। শাহজালাল ইসলামী ব্যাংকের আরেক সাবেক চেয়ারম্যান ও বর্তমানে ব্যাংকটির পরিচালনা পর্ষদের সদস্য আনোয়ার হোসেন খান লক্ষ্মীপুর-১ আসন থেকে আওয়ামী লীগের নৌকা প্রতীক নিয়ে নির্বাচন করছেন। তিনি ওই আসনের বর্তমান এমপি। এছাড়া  আলহাজ্ব মোরশেদ আলম মার্কেন্টাইল ব্যাংকের সাবেক  চেয়ারম্যান ও বর্তমান পরিচালনা পর্ষদের সদস্য। তিনি নোয়াখালী-২ আসন থেকে নৌকা প্রতীকে নির্বাচন করছেন। তিনিও এই আসনের বর্তমান সংসদ সদস্য। জাতীয় নির্বাচনে ঢাকা-১১ আসন থেকে প্রথম বারের মতো নৌকা প্রতীকের প্রার্থী হয়েছেন মিউচ্যুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংকের সদ্য সাবেক চেয়ারম্যান ও ব্যাংকটির পরিচালনা পর্ষদের সদস্য মো. ওয়াকিল উদ্দিন।

পাঁচ ব্যাংক মালিকের হলফনামায় কি পরিমাণ সম্পাদ আছে জেনে নিন…

শাহজালাল ইসলামী ব্যাংকের পরিচালক ও হা-মিম গ্রুপের চেয়ারম্যান এ কে আজাদ। তিনি পেশায় ব্যবসায়ী। চাকরি থেকে আয় ৩ কোটি ৬৭ লাখ ৮০ হাজার টাকা। অন্যান্য (সুনির্দিষ্টভাবে উল্লেখ করিয়া) শাহজালাল ব্যাংক শেয়ার ডিভিডেন্ট, শেয়ার ডিভিডেন্ট, এফডিআর ইন্টারেস্ট, সেভিংস একাউন্ট ইন্টারেস্ট ইত্যাদি আয় ৫ কোটি ৭৫ লাখ ৭৯ হাজার ৫৮৩ টাকা। নগদ টাকা নিজের নামে আছে ১১ কোটি ৬১ লাখ ১৭ হাজার ১২০ টাকা, ৪৯ লাখ ১২ হাজার ৬৪৪ টাকা। তার প্রত্যেক সন্তান আয় করেন, তার ওপর কেউ নির্ভরশীল নয়। বন্ড, ঋণপত্র, স্টক এক্সচেঞ্জ তালিকাভুক্ত ও তালিকাভুক্ত নয় এমন কোম্পানির শেয়ার রয়েছে ১৫ কোটি ৮৭ লাখ ১০ হাজার ৫৮৬ টাকা। পোস্টাল, সেভিংস সার্টিফিকেটসহ বিভিন্ন ধরনের সঞ্চয়পত্রে বা স্থায়ী আমানতে বিনিয়োগ ১ কোটি ৩৮ লাখ ৭৮ হাজার ৯৭৮ লাখ। স্বর্ণ রয়েছে ৮০ তোলা। ইলেকট্রনিক সমাগ্রী রয়েছে ৬১ লাখ ৯৩ হাজার ৪৭৪ টাকা। আসবাবপত্রের বিবরণী মূল্যসহ ৪৬ লাখ ৮৮ হাজার ৫৭৩ টাকা। অন্যান্য অর্জনকালীন সময়ে দালান ও বাণিজ্যক সম্পদ আর্থিক গুলশানে ২টি, ফরিদপুর, উত্তরা, গাজীপুর মূল্য  ১২৩ কোটি ২৯ লাখ ২৭ হাজার ৮৭৭ টাকা আর তার স্ত্রীর ২ কোটি ৬৫ লাখ ২২ হাজার ৪১৯ টাকা। অকৃষিজমি ও অর্জনকালীন সময়ের আর্থিক মূল্য ১০ কোটি ৬৮ লাখ ২৯ হাজার ৫০ টাকা।  ২কোটি ১১ লাখ ৭০ হাজার ৭৭৫টাকা।  

আলহাজ্ব মোরশেদ আলম নির্বাচনী হলফনামায় তিনি জানিয়েছেন, তার কাছে নগদ আছে ৪ কোটি ৯ লাখ ৯৩ হাজার ১৮৪ টাকা। তার স্ত্রীর কাছে আছে ৩ কোটি  ৯ লাখ ৬৮ হাজার ৯৯৭ হাজার। পেশা হিসেবে দেখিয়েছেন ব্যবসা। তার জমির পরিমাণ ১১৮.৬৬ একর ঢাকা জেলায় যার দাম ২৯ কোটি ৭৭ লাখ ৬৪ হাজার ৯৬১ টাকা। 

এছাড়া নোয়াখালীতে ৫ একর জমি রয়েছে যার আনুমানিক মূল্য ৫০ হাজার টাকা।  শেয়ারবাজার ও ব্যাংককে আমানত রয়েছে ৭১ কোটি ৯২ লাখ ৪৪ হাজার ২৬৮ টাকা। তার বার্ষিক আয় ৬ কোটি ৫০ লাখ ৪ হাজার ৭৮৭ টাকা। এবং ব্যয় ২ কোটি ৭৬ লাখ ৭০ হাজার ৭২৩ টাকা। 

মিউচ্যুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংকের সদ্য সাবেক চেয়ারম্যান ও ব্যাংকটির পরিচালনা পর্ষদের সদস্য মো. ওয়াকিল উদ্দিন। তিনি স্বদেশ প্রোপার্টির এমডি। এছাড়াও তিনি একাধিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের পরিচালনায় পর্ষদের সদস্য হিসেবে রয়েছেন। হলফনামায় তিনি উচ্চ মাধ্যমিক পাশ করেছেন বলে জানিয়েছেন। এছাড়া তার বিরুদ্ধে কোনো মামলা নেই বলেও উল্লেখ্য করেন। সম্পদের হিসাবে তিনি জানান, বাড়ি/ এপার্টমেন্ট/দোকান বা অন্যান্য ভাড়া থেকে তার আয় ১ কোটি ৫ লাখ ৯৭ হাজার ৪৫৯ টাকা। 

এছাড়া শেয়ার/সঞ্চয়পত্র/ব্যাংক আমানত থেকে আয় ৫৩ লাখ ৩৩ হাজার ৬১০ টাকা, চাকরি থেকে আয় ২৫ লাখ ২০ হাজার টাকা। তার নিজের নামে নগদ ১১ কোটি ২৬ লাখ ১৩ হাজার ৯৬৪ কোটি টাকা, তার স্ত্রীর নামে ২ কোটি ১৫ লাখ ৮০ হাজার ১৭১ টাকা এবং নির্ভরশীলদের আয় ২ কোটি ৫৬ লাখ ১৫ হাজার ১৭৮ টাকা। ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানে জমাকৃত সম্পদের পরিমাণ  ৫৩ লাখ ৫১ হাজার ৪৯৫ টাকা রয়েছে তার স্ত্রী ও সন্তানদের রয়েছে যথাক্রমে ২ কোটি ৪৬ লাখ ৯৮ হাজার ৭৯৪ টাকাও ১৭ লাখ ২৪ হাজার ৬৩১ টাকা। বন্ড, ঋণপত্র, স্টক এক্সচেঞ্জ তালিকাভুক্ত ও অতালিকাভুক্ত কোম্পানির শেযার ২৩ কোটি ৩৯ লাখ ৮ হাজার ৯১৯ , তার স্ত্রী ও সন্তানদের নামে রয়েছে যথাক্রমে ৩ কোটি ৪৫ লাখ  ২ হাজার ১০টি ও ১২ কোটি ৫৭ লাখ টাকার শেয়ার।  তার ও স্ত্রীর নামে দুটি গাড়ি রয়েছে যেগুলোর দাম যথাক্রমে  ১ কোটি ২৫ লাখ ৬০ হাজার টাকা ও ২১ লাখ টাকা। বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের চেয়ারম্যান ও ম্যানেজিং কমিটির সদস্য হিসেবে তিনি ঋণ নিয়েছেন। এর মধ্যে সাউথ ইস্ট ব্যাংক থেকে ১৪ কোটি টাকা, যমুনা ব্যাংক ৭ কোটি টাকা এবং ঢাকা ব্যাংক থেকে ১৩ কোটি টাকার ঋণ নিয়েছেন তিনি। 

আনোয়ার হোসেন লক্ষ্মীপুর-১ আসন থেকে আওয়ামী লীগের নৌকা প্রতীকের প্রার্থী হয়েছে। তিনি বর্তমানে শাহজালাল ইসলামী ব্যাংকের পরিচালক হিসেবে দায়িত্বরত আছেন। এছাড়াও তিনি আনোয়ার খান মর্ডান মেডিকেল কলেজ এন্ড হাসপাতালের চেয়ারম্যান ও এমডির দায়িত্ব পালন করছেন। এছাড়াও তিনি একাধিক ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানের পরিচালনা পর্ষদের সদস্য পদে রয়েছেন। হলফনামায় তিনি স্নাতকোত্তর পাশ দেখিয়েছেন।কৃষিখাত হতে বার্ষিক আয় ২৩ লাখ ৭৩ হাজার ৭৯৯ টাকা, বাড়ি/এপার্টমেন্ট/দোকান বা অন্যান্য ভাড়া থেকে আয় ৫৭ লাখ ৩৬ হাজার ৪২৬ টাকা। ব্যবসা থেকে আয়  ৫২ লাখ ৭ হাজার ৪২১ টাকা, শেয়ার, সঞ্চপত্র/ব্যাংক আমানত  ৩১ লাখ ১ হাজার ৭৩০ টাকা। চাকরি থেকে আয় ২৬ লাখ ৪৬ হাজার টাকা। নগদ টাকা রয়েছে  ৯ কোটি ৩৫ লাখ ৮৮ হাজার ৫৮৬ টাকা আর তার স্ত্রী রয়েছে ৮৫ লাখ ৮৩ হাজার ৬৩৩ টাকা। ব্যাংকে ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানে জমা রয়েছেন ৭৮ লাখ ৬৪ হাজার ৪১৬ টাকা আর ২০ লাখ ৯৩ হাজার ৩৬৮ টাকা। বন্ড, ঋণপত্র, স্টক এক্সচেঞ্জে তালিকাভুক্ত ও তালিকাভুক্ত নয় কোম্পানির শেয়ার রয়েছে ৮ কোটি ৬৫ লাখ ৩২ হাজার ২৪৮ টাকা আর তার স্ত্রীর রয়েছে ৯ কোটি ৭৯ লাখ ১৫ হাজার ৭১৩ টাকা। বিভিন্ন ধরনের আমানত ও সঞ্চয়পত্র রয়েছে ৩ কোটি ১ লাখ ২১ হাজার টাকা,  ২০ লাখ ৯৩ হাজার ৩৬৮ টাকা। গাড়ির দাম ৯০ লাখ টাকা। ৭ লাখ টাকা। স্বর্ণ অন্যান্য ধাতু রয়েছে ২ লাখ ৮৪ হাজার ৫০০ টাকা ও ২৫ লাখ টাকার। 

সালমান এফ রহমান। বর্তমান ক্ষমতাসীন দলের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ বিষয়ক উপদেষ্টার দায়িত্বে রয়েছেন। এছাড়াও তিনি আইএফআইসি ব্যাংককের চেয়ারম্যান এবং দেশের বৃহৎ গ্রুপ অব কোম্পানি বেক্সিমকো গ্রুপের ভাইস চেয়ারম্যানের দায়িত্বে রয়েছেন। নির্বাচনী হলফনামায় তিনি জানিয়েছেন, নগদ টাকা ও ব্যাংক জমার স্থিতিসহ ৫৩ লাখ ৩৫ হাজার ৯০৯ টাকা এবং তার স্ত্রীর নামে রয়েছে ৫ লাখ ৩১ হাজার ৬১৫ টাকা। ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানে জমাকৃত অর্থের পরিমাণ (নগদ ঘরে বিবরণ মোতাবেক) ৯ কোটি ৪ লাখ ২৫ হাজার ৯৬৭ টাকা। আর স্ত্রীর রয়েছে ৯৯ লাখ ৭২ হাজার ১১০ টাকা। বন্ড, ঋণপত্র, স্টক এক্সচেঞ্জে তালিকাভুক্ত ও তালিকাভুক্ত নয় কোম্পানির শেয়ার (পরিমাণ, অর্জনকালীন সময়ের মূল্যসহ) অন্যান্য বিনিয়োগ সহ ২৯৫ কোটি ৫২ লাখ ১২ হাজার ৯১৬ টাকা। তার গাড়ি দাম ৫ কোটি ৮৪ লাখ টাকা। স্বর্ণ ও অন্যান্য মূল্যবান ধাতু রয়েছে ১৫ লাখ ৫ হাজার টাকা। এছাড়া স্ত্রীর নামেও রয়েছে ১ লাখ ৮০ হাজার টাকার স্বর্ণালঙ্কার। হলফনামায় তিনি আরও জানিয়েছেন ইলক্ট্রনিক্স ৬০ লাখ ৫৩ হাজার ৬৯০ টাকা এবং তার স্ত্রীর নামে রয়েছে ১ কোটি ৮ রাখ ৯০ হাজার ৮৬০ টাকা। এছাড়া আসবাবপত্র রয়েছে যথাক্রমে ৩৯ লাখ ৬২ হাজার ০৩৫ টাকা ও ১ কোটি ৫১ লাখ ৫৩ হাজার ৩৩৩ টাকার। কৃষি জমি রয়েছে ১ কোটি ৯৮ লাখ ৫৯ হাজার টাকা ও  ৩  কোটি ৭৩ লাখ ৩ হাজার ৭০৮ টাকা। দালান, আবাসিক ও বাণিজ্য মিলিয়ে ৩২ কোটি ৪৬ লাখ ৮৯ হাজার ২৪৭ কোটি টাকা।

বিভি/এইচএস

মন্তব্য করুন: