দেশের সরকারি মুরগীর খামারগুলোর বেহাল অবস্থা
ছবি: রাজবাড়ির সরকারি মুরগীর খামার
বিপুল সম্ভাবনার মাঝেও মুখ থুবড়ে পড়েছে দেশের মুরগীর সরকারি খামারগুলো। লোকবল সংকট আর প্রযুক্তির ঘাটতিতে তেমন কাজে আসছে না প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের আওতাধীন দেশের ২৮টি খামার। তবে, খামারের উন্নয়নে শিগগিরই প্রকল্প হাতে নেয়ার কথা জানালেন প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক।
রাজধানীর মিরপুরে ১৯৭৬ সালে প্রতিষ্ঠিত সরকারি কেন্দ্রীয় মুরগি খামার। ২০ একর জায়গার ওপর এ খামারে দেখা মিলবে দৃষ্টিনন্দন ফাওমি, বিপিআর এবং স্বর্ণালীসহ অপ্রচলিত বেশ কিছু জাতের মুরগির। এ পর্যন্ত মুরগির তিনটি জাত উদ্ভাবন করেছে রাষ্ট্রীয় এ প্রতিষ্ঠানটি। যার মধ্যে রয়েছে বাজারে বহুল বিক্রিত সোনালী জাত।
খামারটিতে একসময় প্রতি মাসেই মুরগির প্রায় দুই লাখ বাচ্চা ফোটানো হতো । নানা সীমাবদ্ধতায় উৎপাদন কমতে কমতে এখন সেখানে বছরে লক্ষ্যমাত্রাই ৩ লাখ বাচ্চার। প্রয়োজনীয় বরাদ্দ ও শ্রমশক্তি না থাকায় ২৭টি শেডের মধ্যে ৭টি পড়ে আছে পরিত্যক্ত অবস্থায়। বিশাল এ খামারে স্থায়ী লোকবল মাত্র পাঁচজন। আর বাকিরা বহিরাগত, কাজ করেন দৈনিক হাজিরায়।
প্রযুক্তির ছোঁয়া লাগেনি বললেই চলে সরকারি এ খামারটিতে। আশির দশকে বিদেশ থেকে আনা প্রযুক্তিতেই চলছে হ্যাচারিতে বাচ্চা উৎপাদনের কাজ।
রাজধানীর বাইরে কুমিল্লা, রাজবাড়ী, ফরিদপুর, জামালপুরসহ বিভিন্ন জেলায় মুরগির সরকারি খামার রয়েছে আরও ২৭টি। এসবের বেশিরভাগের অবস্থা আরও নাজুক। অনেক খামারেই ভঙ্গুর অবস্থায় কোনোমতে দাঁড়িয়ে আছে শেড। মুরগির সংখ্যাও খুবই অপ্রতুল। সংরক্ষিত আছে দুয়েকটি জাত। কোনো খামারেই দুয়েকজনের বেশি স্থায়ী লোকবল নেই। দৈনিক হাজিরার শ্রমিক দিয়ে চলে কেবল জরুরি কাজটুকু।
খামারগুলো মাঝে মাঝে সীমিত আকারে বাচ্চা সরবরাহ করে পারিবারিকভাবে ছোট পরিসরে মুরগী লালন পালনকারীদের। অথচ দেশে প্রায়ই বাচ্চা সংকটের কারণে মুরগির বাজার অস্থিতিশীল হয়ে ওঠে। বিপুল লোকসানও গুনতে খামারিদের। ব্রিডার্স অ্যাসোসিয়শনের অব বাংলাদেশের সভাপতি মাহবুবুর রহমান মনে করছেন, এক্ষেত্রে উদ্যোগী ভূমিকা নেয়ার সুযোগ রয়েছে সরকারি খামারগুলোর।
সরকারি খামারগুলোর উন্নয়নে একটি প্রকল্প প্রস্তাবনা পর্যায়ে ঝুলে আছে দেড় বছরেরও বেশি সময় ধরে। তবে প্রাণীসম্পদ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক জানালেন, প্রকল্পে বিদেশি অর্থায়ণ খুঁজছে সরকার। তবে, বাণিজ্যিক উদ্দেশ্যে সরকারি খামারে মুরগি লালন পালনের বিরোধী তিনি।
মুগরির সরকারি এ খামারগুলোয় নেই স্বতন্ত্র ওয়েবসাইট। তাই মুরগির সংখ্যা বা উৎপাদনের হালনাগাদ তথ্যও মেলে না সহজে। এক্ষেত্রে লোকবলের ঘাটতিকে দায়ী করলেন সংশ্লিষ্ট ঊর্ধ্বতনরা।
বিভি/এমআর
মন্তব্য করুন: