বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি পরীক্ষায় ডোপ টেস্টের পরামর্শ ডেপুটি স্পিকারের
![বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি পরীক্ষায় ডোপ টেস্টের পরামর্শ ডেপুটি স্পিকারের বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি পরীক্ষায় ডোপ টেস্টের পরামর্শ ডেপুটি স্পিকারের](https://www.bvnews24.com/media/imgAll/2024April/image-271846-1714815147-13-2405231305.jpg)
ছবি: সংগৃহিত
বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি পরীক্ষা ও সরকারি যে কোনো ভাতা কার্যক্রমে ডোপ টেস্ট চালু করার পরামর্শ দিয়েছেন জাতীয় সংসদের ডেপুটি স্পিকার শামসুল হক টুকু, এমপি। প্রধানমন্ত্রীর স্বপ্ন বাস্তবায়নে ২০৪০ সালের মধ্যে তামাকমুক্ত বাংলাদেশ গড়তে হলে তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন আরও শক্তিশালী করতে হবে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
বৃহস্পতিবার (২৩ মে) জাতীয় সংসদের পার্লামেন্ট মেম্বার্স ক্লাব কনফারেন্স হলে ঢাকা ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভির্সিটির টোব্যাকো কন্ট্রোল এন্ড রিসার্চ সেল (টিসিআরসি) ও বাংলাদেশ তামাকবিরোধী জোট (বাটা)-এর আয়োজনে ‘সচিত্র স্বাস্থ্য সতর্কবাণী: বৈশ্বিক প্রেক্ষাপট এবং বাংলাদেশ’ শীর্ষক এক আলোচনা সভার তিনি একথা বলেন। এসময় টোব্যাকো কন্ট্রোল এন্ড রিসার্চ সেল (টিসিআরসি) প্রকাশিত “ধোঁয়াবিহীন তামাকজাত দ্রব্যের বাজার: নিয়ন্ত্রণে করণীয়” বইয়ের মোড়ক উন্মোচন করা হয়।
ডেপুটি স্পিকার বলেন, সিগারেট হচ্ছে মাদকের প্রবেশদার। মাদকমুক্ত বাংলাদেশ বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন ছিল। আর দেশকে মাদকমুক্ত করতে হলে সবার আগে তামাকমুক্ত করতে হবে। এ কারণেই সংবিধানে মদ-জুয়া নিষিদ্ধ করা হয়েছে। আমাদের তরুণ প্রজন্মকে রক্ষা করার জন্য সিগারেট ও মাদককে কঠোরভাবে নিয়ন্ত্রণ করতে হবে। প্রধানমন্ত্রীর স্বপ্ন বাস্তবায়নে ২০৪০ সালের মধ্যে তামাকমুক্ত বাংলাদেশ গড়তে তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন আরো শক্তিশালী করতে হবে।
টোব্যাকো কন্ট্রোল এন্ড রিসার্চ সেল (টিসিআরসি)- ঢাকা ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির প্রেসিডেন্ট সাবেক সংসদ সদস্য ব্যারিস্টার শামীম হায়দার পাটোয়ারীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন টোব্যাকো কন্ট্রোল এন্ড রিসার্চ সেল (টিসিআরসি)-এর প্রজেক্ট ম্যানেজার ফারহানা জামান লিজা এবং স্বাগত বক্তব্য প্রদান করেন টোব্যাকো কন্ট্রোল এন্ড রিসার্চ সেল (টিসিআরসি)-এর সদস্য সচিব ও প্রকল্প পরিচালক অধ্যাপক মো. বজলুর রহমান।
ডা. মো. তৌহিদুজ্জামান এমপি বলেন, মানুষকে সচেতন করতে সচিত্র স্বাস্থ্য সতর্কবাণীর আকার বৃদ্ধির করে ৯০ শতাংশ করা একান্ত প্রয়োজন। পাশাপাশি কর বৃদ্ধির মাধ্যমে মূল্য বৃদ্ধির করতে হবে যাতে এইজাতীয় পণ্য ভোক্তার ক্রয় ক্ষমতার বাইরে চলে যায়। এজন্য জাতীয় রাজস্ব বোর্ডকে শক্তিশালী ভূমিকা পালন করতে হবে।
ড. শ্রী বীরেন শিকদার এমপি বলেন, খোলা তামাক ও খুচরা বিক্রয় বন্ধ না করলে সচিত্র স্বাস্থ্য সতর্কবাণীর সঠিক বাস্তবায়ন সম্ভব হবে না। এছাড়া ই-সিগারেট নিষিদ্ধ করতে হবে এবং তা এখনই করতে হবে।
ডা. আব্দুল আজিজ এমপি বলেন, সচিত্র স্বাস্থ্য সতর্কবাণীর সঠিক বাস্তবায়নের জন্য স্ট্যান্ডার্ড প্যাকেজিং প্রবর্তন জরুরি। পাশাপাশি উৎস থেকে নির্মূল করতে হবে। চাষ বন্ধ করতে হবে এবং এজন্য প্রয়োজনীয় কার্যক্রম পরিচালনা করতে হবে।
আরমা দত্ত এমপি বলেন, বড় আকারের সচিত্র স্বাস্থ্য সতর্কবাণী জনসচেতনতা বৃদ্ধির করতে ভূমিকা রাখে। এছাড়াও স্কুল কলেজের শিক্ষার্থীদের মাঝে সচেতনতা বৃদ্ধির করতে হবে। এজন্য প্রতিটি স্কুল-কলেজে এন্টি টোব্যাকো ক্লাব তৈরি করতে হবে।
উম্মে কুলসুম স্মৃতি এমপি বলেন, সমাজকে রক্ষা করতে হলে সবার আগে স্বাস্থ্য রক্ষা করতে হবে। এজন্য তামাক নিয়ন্ত্রণ জরুরি। তামাক নিয়ন্ত্রণের জন্য আন্তর্জাতিকভাবেই অনেকগুলো পদ্ধতি ব্যবহার করা হয় আর সেক্ষেত্রে সচিত্র স্বাস্থ্য সতর্কবাণী অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। বাংলাদেশ এ বিষয়ে অনেক পিছিয়ে আছে। তাই আইন সংশোধন করে এটির পরিধি বৃদ্ধির করতে হবে। ই-সিগারেট নিষিদ্ধ ও তরুণ-শিক্ষার্থীদের মধ্যে সচেতনতা বাড়াতে হবে। আমাদের সংসদ সদস্যদের এক্ষেত্রে বড় ভূমিকা রাখতে হবে।
সভাপতির বক্তব্যে ব্যারিস্টার শামীম হায়দার পাটোয়ারী বলেন, তামাক নিয়ন্ত্রণ নিয়ে এতো বছর ধরে কাজ করে একটা জিনিস দেখেছি যে তামাক নিয়ন্ত্রণে আইনে কোন পরিবর্তন আনতে গেলে সেটার জন্য অনেক পরিশ্রম করতে হয়। কারণ তামাক কোম্পানির হস্তক্ষেপে বার বার তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন ব্যহত হয়েছে। বিশ্বের অন্যান্য দেশের তুলনায় বাংলাদেশের সচিত্র স্বাস্থ্য সতর্কবানীর অবস্থা অনেকটাই নাজুক। আমাদের দেশের তামাকজাত দ্রব্যের ছবির সাইজ, ছবির অস্পষ্টতা এবং মাড়কের ভিন্নতা এর প্রধান কারণ। পাশাপাশি তামাক কোম্পানির হস্তক্ষেপে আইন বাস্তবায়নে অন্ততম অন্তরায়। আইনে উপরের দিকে ছবি প্রদানের কথা থাকলেও তামাক কোম্পানি মোড়কের নিচের দিকে মুদ্রিত হয়ে আসছে, এমনকি হাই কোর্টের নির্দেশনা অমান্য করেই। এভাবে ৮ টি বছর কেটে গেছে। কিন্তু এর থেকে আমাদের বের হয়ে আসতে হবে।
অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মাঝে অধ্যাপক ডা. প্রান গোপাল দত্ত এমপি, আহমেদ ফিরোজ কবির এমপি, স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের স্বাস্থ্য সেবা বিভাগের জাতীয় তামাক নিয়ন্ত্রণ সেলের সাবেক সমন্বয়কারী (অব: অতিরিক্ত সচিব) মো. হোসেন আলী খোন্দকার, ভাইটাল স্ট্রাটেজিসের হেড অব প্রোগ্রামস মো. শফিকুল ইসলাম, গ্লোবাল হেলথ অ্যাডভোকেসি ইনকিউবেটর (ঘাই) বাংলাদেশের কনসালটেন্ট মোঃ শরিফুল আলম, ভাইটাল স্ট্রাটেজিসের সিনিয়র কারিগরি পরামর্শক অ্যাডভোকেট সৈয়দ মাহবুবুল আলম তাহিন ও কারিগরি পরামর্শক জনাব আমিনুল ইসলাম সুজন; ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক ড. রুমানা হক; এইড ফাউন্ডেশনের প্রজেক্ট ডিরেক্টর শাগুফতা সুলতানা; স্টপ-এর ফোকাল পারসন ফাহমিদা ইসলাম প্রমুখ বক্তব্য রাখেন। এছাড়াও অনুষ্ঠানে জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ, সাংবাদিক, এবং বাংলাদেশে তামাক নিয়ন্ত্রণে কর্মরত বিভিন্ন সংগঠনের প্রতিনিধি ও বিশেষজ্ঞগণ উপস্থিত ছিলেন।
বিভি/পিএইচ
মন্তব্য করুন: