• NEWS PORTAL

  • বুধবার, ২৭ আগস্ট ২০২৫

Drama: Jamai Bou Chor
Drama: Jamai Bou Chor

জিআই স্বীকৃতি পেলো ফুলবাড়িয়ার লাল চিনি

প্রকাশিত: ০১:২৩, ২৭ আগস্ট ২০২৫

ফন্ট সাইজ
জিআই স্বীকৃতি পেলো ফুলবাড়িয়ার লাল চিনি

ময়মনসিংহের ফুলবাড়িয়ায় আখের রস থেকে হাতে তৈরি লাল চিনির ঐতিহ্য প্রায় আড়াই শ’ বছরের। শরবত, পিঠা ও মিষ্টান্ন তৈরিতে ব্যবহৃত হয় এই মিহি দানার চিনি। ঐতিহ্যবাহী এই লাল চিনি ভৌগোলিক নির্দেশক (জিআই) পণ্যের স্বীকৃতি পেয়েছে।

মঙ্গলবার (২৬ আগস্ট) দুপুরে ফুলবাড়িয়া উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা নূর মোহাম্মদ জানান, ওয়েবসাইট চেক করে আজ তারা বিষয়টি নিশ্চিত হয়েছেন।

নূর মোহাম্মদ বলেন, ‘২০২৪ সালের ১১ জুলাই উপজেলা প্রশাসনের পক্ষে ফুলবাড়িয়ার লাল চিনির জিআই স্বীকৃতির জন্য আবেদন করা হয়। অন্য কোনো পক্ষের দাবি না থাকায় সব প্রক্রিয়া শেষে আমরা স্বীকৃতি পেয়েছি। সনদের জন্য আজ সরকারনির্ধারিত ফি জমা দিয়েছি।’

এই কৃষি কর্মকর্তা আরও বলেন, জিআই স্বীকৃতির মাধ্যমে অর্থনীতিতে পরিবর্তন আসবে। আগে যারা লাল চিনি সম্পর্কে জানতেন না, তারাও এখন জানবেন। কৃষকেরা উৎপাদন বাড়াবেন, সরকারেরও পৃষ্ঠপোষকতা বাড়বে। অর্গানিক পণ্য হিসেবে যদি দেশের বাইরে রপ্তানি করা যায়, তাহলে চাষিদের জন্য নতুন সুযোগ তৈরি হবে।

কৃষি বিভাগের তথ্য অনুযায়ী, উপজেলার বাকতা, কালাদহ ও রাধাকানাই ইউনিয়নের প্রায় ২০টি গ্রামের কৃষকেরা আখ উৎপাদন ও লাল চিনি তৈরির কাজ করেন। উপজেলায় প্রতিবছর শতকোটি টাকার লাল চিনি বিক্রি হয়।

স্থানীয় কৃষকেরা জানান, লাল চিনি তৈরির একমাত্র কাঁচামাল আখ। জমি থেকে আখ সংগ্রহের পর তা পরিষ্কার করে যন্ত্রচালিত কলের সাহায্যে রস বের করা হয়। জ্বালঘরের চুলায় সাতটি লোহার কড়াই বসিয়ে প্রথমে কাঁচা রস জ্বাল দেওয়া হয়। ধাপে ধাপে কড়াই বদলে জ্বাল দিয়ে রস ঘন করা হয়। শেষে কাঠের মুগুর দিয়ে বারবার নাড়া দিয়ে তৈরি হয় অদানা বাদামি রঙের লাল চিনি। শুকনো ধুলার মতো বা গুটির মতো—দুই রকম আকারে এটি তৈরি হয়। পরে রোদে শুকিয়ে সংরক্ষণ করা হয়। জমিতে চৈত্র মাসে আখ রোপণ করা হয়। পৌষ মাস থেকে শুরু হয় আখমাড়াই। আড়াই মাস ধরে চলে লাল চিনি তৈরির কাজ।

কৃষি বিভাগ জানায়, ২০২৫ সালে উপজেলায় ৬৫০ হেক্টর জমিতে আখ চাষ হয়েছে। এর মধ্যে ৯০ শতাংশ জমিতে দেশি জাতের আখ, বাকিতে ঈশ্বরদী-৪১ ও ঈশ্বরদী-৪২ জাতের আখ চাষ হয়। এক হেক্টর জমিতে উৎপাদিত আখ থেকে প্রায় আট মেট্রিক টন লাল চিনি হয়। লাল চিনি প্রতি মণ গড়ে ৮ হাজার টাকায় বিক্রি হয়। এ বছর প্রায় ১০৮ কোটি টাকার লাল চিনি বিক্রি করেছেন কৃষকেরা। এক মেট্রিক টন আখ থেকে প্রায় ৩২ হাজার লিটার রস পাওয়া যায়। চার কেজি রস থেকে এক কেজি লাল চিনি তৈরি হয়। প্রাকৃতিক হওয়ায় শরবত বা মিষ্টান্নে ব্যবহার করলে কাঁচা রসের স্বাদ পাওয়া যায়। ফলে দেশ-বিদেশে এর চাহিদা আছে। অনেকেই বিদেশেও নিয়ে যাচ্ছেন এ চিনি।

ফুলবাড়িয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. আরিফুর ইসলাম বলেন, লাল চিনির জিআই স্বীকৃতির বিষয়টি আজ আমরা নিশ্চিত হয়ে সনদের জন্য টাকা জমা দিয়ে চিঠি পাঠিয়েছি। এই স্বীকৃতিতে উচ্ছ্বসিত এ অঞ্চলের মানুষ। এই স্বীকৃতি এ অঞ্চলের কৃষি অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখবে বলে মনে করেন তিনি।

বিভি/টিটি

মন্তব্য করুন:

সর্বাধিক পঠিত
Drama Branding Details R2
Drama Branding Details R2