ওআইসিকে রাষ্ট্রদূত মুশফিক
শুধু কথা নয়, জোরালো অবস্থান নিতে হবে যেনো বিশ্ব শুনতে পায়
দখলদার ইসরাইলিদের নির্যাতন এবং বর্বরতার হাত থেকে ফিলিস্তিনকে মুক্ত করতে ইসলামিক সহযোগিতা সংস্থা (ওআইসি) এবং আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে জোরালো ভূমিকা অব্যাহত রাখার আহ্বান জানিয়ে মেক্সিকোতে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মুশফিকুল ফজল আনসারী বলেছেন, ওআইসি পরিবারের ঐক্য যেনো শুধু কথার মধ্যে সীমাবদ্ধ না থাকে। প্রতিটি ফোরামে, প্রতিটি রাজধানীতে, আমাদের ফিলিস্তিনিদের অধিকারের কথা আরও জোরালোভাবে তুলতে হবে, যতোক্ষণ না বিশ্ব শুনছে।
শুক্রবার (৭ নভেম্বর) মেক্সিকো সিটিতে ইসলামিক সহযোগিতা সংস্থার (ওআইসি) রাষ্ট্রদূত গ্রুপের বৈঠকে এই আহ্বান জানান রাষ্ট্রদূত মুশফিক। তার ভেরিফাইড ফেসবুক পেজে বক্তব্যের অংশ তুলে ধরে কয়েকটি ছবি শেয়ার করেন বাংলাদেশসহ বিশ্বের অধিকার বঞ্চিত মানুষের একসময়ের সাহসী এই কন্ঠস্বর।
গাজায় চলমান যুদ্ধ বিরতির কার্যকারিতা প্রশ্নবিদ্ধ উল্লেখ করে এই রাষ্ট্রদূত বলেন, ‘আমার বোন, ফিলিস্তিনের রাষ্ট্রদূত নাদিয়া, এই মাত্র আমাদের স্মরণ করিয়ে দিয়েছেন যে, ২৮ দিন আগে যুদ্ধবিরতি শুরু হলেও এ সময়ের মধ্যে ২৩৭ জন ফিলিস্তিনি শিশু নিহত হয়েছে। এই সংখ্যাটিই বিশ্বের বিবেককে নাড়া দেওয়ার জন্য যথেষ্ট। এমন যুদ্ধবিরতিকে শান্তি বলা যায় না, যেখানে এখনো শিশুদের দাফন করতে হয়।’
তিনি মানবিক ইস্যুতে এরকম বৈঠক আয়োজনের উদ্যেগ নেওয়ার জন্য মরক্কোর রাষ্ট্রদূত এবং ওআইসি গ্আর প্রধান আব্দেলফাত্তাহ লেব্বারকে ধন্যবাদ জানান।
ফিলিস্তিন ইস্যুতে বাংলাদেশের অবস্থান তুলে ধরে রাষ্ট্রদূত মুশফিক বলেন, ‘বাংলাদেশ ফিলিস্তিনের মানুষের পাশে দৃঢ় ও অবিচলভাবে দাঁড়িয়ে আছে। জাতিসংঘে দেওয়া আমাদের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান, প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূসের সেই কথাই আমি পুনরাবৃত্তি করছি — ন্যায়বিচার বাধাগ্রস্ত হলে শান্তি টিকে না; আর অত্যাচার দেথে চোখ বুঝে থাকা মানেই অত্যাচারের প্রতি সমর্থন ।’
গাজায় ইসরাইলের সংগঠিত গণহত্যা এবং মানবাধিকার লঙ্ঘনের কথা উল্লেখ করে রাষ্ট্রদূত মুশফিক বলেন, ‘গাজায় যা ঘটছে তা সমান শক্তির সংঘর্ষ নয়; এটি এক ভয়াবহ মানবিক বিপর্যয় এবং আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের জন্য নৈতিক পরীক্ষা। আমাদের দাবি করতে হবে আন্তর্জাতিক আইন লঙ্ঘনের পূর্ণ জবাবদিহি, তাৎক্ষণিক মানবিক সহায়তার প্রবেশাধিকার, এবং এমন এক রাজনৈতিক প্রক্রিয়ার পুনঃপ্রতিশ্রুতি যা দুই-রাষ্ট্র সমাধানের ভিত্তিতে একটি স্বাধীন ও সার্বভৌম ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠায় সহায়ক হবে।’
ফিলিস্তিনে নিহতদের প্রতি সমবেদনা জানিয়ে রাষ্ট্রদূত মুশফিক বলেন, ‘যারা প্রাণ দিয়েছেন, তাদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাই, ন্যায়ের পাশে থেকে, সত্যের পক্ষে থেকে, এবং ফিলিস্তিনের মানুষের প্রতি সংহতি জানিয়ে।’
বৈঠকে ফিলিস্তিন, মরোক্ক, সৌদিআরব, তুরস্ক, কুয়েত, কাতার, সংযুক্ত আরব আমিরাত, ইন্দোনেশিয়া, ইরান, মালয়েশিয়া, আজারবাইজান, আইভরিকোস্টসহ ওআইসি সদস্যভুক্ত দেশগুলোর রাষ্ট্রদূতরা উপস্থিত ছিলেন বলে জানা গেছে।
বিভি/এআই




মন্তব্য করুন: