জেনেভা ক্যাম্পের ‘বোবা বিরিয়ানি’: না খেলে ঠকবেন (ভিডিও)
ঢাকা শহরে বিরিয়ানি খেয়েছেন অনেক। কিন্তু সেরাটা খেয়েছেন কি? খাদ্যরসিক মানুষগুলো খাবারের খোঁজে এক জায়গা থেকে অন্য জায়গায় ঘুরে বেড়ান। তাদের জন্য ঢাকা শহরের জনপ্রিয় এক বিরিয়ানির দোকানের সন্ধান দিচ্ছি আজ।
মোহাম্মদপুর জেনেভা ক্যাম্পের প্রথম গেট। সারি সারি কাপড়ের দোকান পেরিয়ে সামনে এগোলেই নাকে আসবে বিরিয়ানির সুবাস। এই সুবাসই আপনাকে নিয়ে যাবে ছোট্ট একটি দোকানের সামনে, যার সাইনবোর্ডে লেখা রয়েছে- 'ফায়জানে মদিনা বিরিয়ানি হাউস'। অবশ্য এই নামে কেউ চেনে না দোকানটিকে, চেনে 'বোবা বিরিয়ানি' নামে।
১৯৯০ সালে জেনেভা ক্যাম্পের মোহাম্মদ আক্তার হোসেন তাঁর বন্ধু ভোলা বাবুর্চিকে নিয়ে প্রতিষ্ঠা করেন 'ফায়জানে মদিনা বিরিয়ানি হাউস'। তাঁরা কেউই বেঁচে নেই। আক্তার হোসেনের বড় ছেলে আফতাবই এখন চালাচ্ছেন এই বিরিয়ানি হাউস।
আফতাব হোসেন জানান, ১৯৯৫ সালের দিকে এই দোকানে পরিবেশনকারী হিসেবে কাজে যোগ দেন বাবার বন্ধুর ছেলে বাকপ্রতিবন্ধী উকিল নামের একজন। এরপর থেকেই বিরিয়ানি খেতে আসা মানুষ দোকানটিকে 'বোবা বিরিয়ানি' হিসেবে ডাকতে শুরু করেন। পরে সাইনবোর্ডেও 'বোবার বিরিয়ানি' নামটি যুক্ত করা হয়।
প্রতিষ্ঠানটির প্রধান বাবুর্চি মো. ইশফাক প্রায় ২০ বছর ধরে এই দোকানেই কাজ করছেন।
তিনি জানান, আগে রান্নার কাজ করতেন খদর উদ্দিন বাবুর্চি। তিনি বয়সের কারণে এখন আর রান্না করতে পারেন না। তাঁর কাছ থেকেই রান্নায় হাতেখড়ি বলেও জানান তিনি।
তিনি বলেন, স্বাভাবিক সময়ে দোকানে প্রতিদিন ৫/৬ ডেকচি বিরিয়ানি রান্না হয়। তবে করোনার সময় ৩/৪ ডেকচি বিরিয়ানি রান্না করছেন। প্রতি ডেকচিতে থাকে ৩০ কেজি চাল, সমপরিমাণ মাংস এবং ১৫ কেজি আলু ,৭ লিটার তেল, ২০০ গ্রাম দুধ ও প্রয়োজনীয় মসলা।
[media type="image" fid="141739" layout="normal" caption="1" infograph="1" parallax="0" popup="1"][/media]
দোকানের আরেক কর্মচারী মো. নাসিম ১২ বছর ধরে এখানে আছেন।
তিনি জানান, এক প্লেট স্পেশাল বিফ বিরিয়ানির দাম ১২০ টাকা, সাধারণ বিরিয়ানি ৮০ টাকা, হাফ ৫০ টাকা। প্রথমে হাফ দেওয়া হয় না বলেও জানান তিনি। বলেন, প্রতিষ্ঠানটির সত্ত্বাধিকারী তাঁদের পরিবারের সদস্যর মতোই দেখেন।
বোবা বিরিয়ানি খেতে আসা দুবাই প্রবাসী নওসাদ বলেন, মানুষের মুখে অনেক নাম শুনেছি। আজই প্রথম বন্ধুদের সংগে নিয়ে খেতে এলাম। এখানে এসে ভালো লেগেছে, খাবারের মানও ভালো, দামও কম।
বোবা বিরিয়ানির নাম শুনে সাভার থেকে এসেছেন রাসেদুল ইসলাম। তিনি জানান, আগেই নাম শুনেছিলাম, কিন্তু আসার সুযোগ পাচ্ছিলাম না, সুযোগ পেয়ে হাতছাড়া করিনি, চলে আসলাম খেতে।
বোবা বিরিয়ানি মূলতঃ কাচ্চি বিরিয়ানি। মাংস ও চাল দীর্ঘ সময় দমে রেখে লাকড়ির চুলায় রান্না হওয়ায় স্বাদ হয় অনন্য, দামও কম। তাই অন্য দোকানের চেয়ে এখানে মানুষের ভীড় বেশি বলে জানান কর্তৃপক্ষ।
বিভি/এএইচ/এসডি
মন্তব্য করুন: