• NEWS PORTAL

  • শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪

সনাতন ধর্মাবলম্বীদের উত্তপ্ত করতেই বিভ্রান্তিকর পোস্ট দিতো আশিষঃ র‍্যাব

প্রকাশিত: ১৯:০৮, ২৭ অক্টোবর ২০২১

আপডেট: ১৯:০৯, ২৭ অক্টোবর ২০২১

ফন্ট সাইজ
সনাতন ধর্মাবলম্বীদের উত্তপ্ত করতেই বিভ্রান্তিকর পোস্ট দিতো আশিষঃ র‍্যাব

কুমিল্লার মন্দিরে অপ্রীতিকর ঘটনা ছড়িয়ে দিয়ে সাম্প্রদায়িক সম্প্রতি নষ্টের মাধ্যমে নিজের ক্ষোভ মেটাতে চেয়েছিলো আশিষ মল্লিক (৩০) নামের এক যুবক। আশিষ মনে করতো, দেশে সনাতন ধর্মাবলম্বীরা নির্যাতিত। তাই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে পেজ খুলে বিভ্রান্তিকর ও উগ্রবাদী বিভিন্ন পোস্ট দিতো সে। বিষয়টি র‍্যাব-১ এর নজরে এলে সাইবার অপরাধে তাকে গ্রেফতার করা হয়।

বুধবার (২৭ অক্টোবর) বিকালে রাজধানীর কারওয়ান বাজারে র‍্যাব মিডিয়া সেন্টারে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান র‍্যাব-১ এর অধিনায়ক আব্দুল্যাহ আল মামুন।

তিনি বলেন, রাজধানীর বনানী এলাকা থেকে সাম্প্রতিক সময়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে পেজ খুলে মিথ্যা অপপ্রচার করে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিনষ্ট ও জনমনে বিভ্রান্তি ছড়ানোর দায়ে ফেসবুক পেজ এ্যাডমিন আশিষ মল্লিককে গ্রেফতার করা হয়েছে।

তিনি আরও বলেন, র‍্যাব-১ এর সাইবার টিম সাম্প্রতিক সময়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম পর্যবেক্ষণ করে দেখতে পায় যে, কুমিল্লার ঘটনাকে কেন্দ্র করে কিছু ব্যক্তি বাংলাদেশের সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিনষ্ট করার নিমিত্তে মিথ্যা ও উস্কানিমূলক বক্তব্য পোস্ট করে আসছে এবং সমাজে উক্ত পোস্টের মাধ্যমে বিশৃঙ্খলাসহ জনমনে বিভ্রান্তি সৃষ্টি করছে। এছাড়াও একটি স্বার্থান্বেষী মহল সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বিভিন্ন গুজব ও মিথ্যা তথ্য পরিবেশন করে সহিংসতার ইন্ধন দিয়ে আসছে।

তিনি বলেন, এরই ধারাবাহিকতায় গত ২৬ অক্টোবর সন্ধ্যায় র‍্যাব-১ এর একটি আভিযানিক দল গোপন সংবাদের ভিত্তিতে রাজধানীর বনানী থেকে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে মিথ্যা অপপ্রচার ও উস্কানি দেওয়ার জন্য ফেসবুক এ্যাডমিন আশিষ মল্লিককে গ্রেফতার করে। গ্রেফতারের সময় তার কাছ থেকে একটি মোবাইল ফোন উদ্ধার করা হয়। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেফতারকৃত ব্যক্তি সাইবার অপরাধের সংগে তার সংশ্লিষ্টতার কথা স্বীকার করেছে।

আশিষ মল্লিকের গ্রামের বাড়ি চট্টগ্রাম জেলায় এবং সে ঢাকা কলেজ থেকে স্নাতক সম্পন্ন করে ফার্মগেট এলাকার কোচিং সেন্টার পরিচালনা করে আসছিলো।

র‍্যাব-১ এর সিইও আব্দুল্যাহ আল মোমেন বলেন, আশিষ মল্লিক গত ১৬ অক্টোবর একটি ফেসবুক পেজ খোলে। ওই পেজে এবং তার ব্যক্তিগত আইডি থেকে বিভিন্ন উস্কানিমূলক বক্তব্য পোস্ট করে আসছিলো। সে নিজে উক্ত পেজের এ্যাডমিন এবং তার সমমনা আরও কয়েকজন ব্যক্তিকে এ্যাডমিন হিসেবে নিযুক্ত করে। খুব দ্রুতই উক্ত পেজের সদস্য ও ফলোয়ার কয়েক হাজার ছাড়িয়ে যায়। এই ফেসবুক পেজ থেকে কুমিল্লার ঘটনাকে কেন্দ্র করে মিথ্যা তথ্য প্রচার এবং উস্কানিমূলক পোস্ট প্রদান করা হচ্ছিলো এবং বাংলাদেশের সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিনষ্ট ও সহিংসতা বিস্তার করার অপতৎপরতা চলছিলো। ওই ফেসবুক পেজে পার্শ্ববর্তী দেশসমূহে ঘটে যাওয়া বিভিন্ন নৃশংস ঘটনার ভিডিও আপলোড করে জনমনে ভয়-ভীতি তৈরিসহ উস্কানি প্রদান করা হচ্ছিলো। অভিযুক্ত আশিষ মল্লিক প্রতিটি পোস্ট হ্যাশট্যাগ করে এই দেশকে একটি সাম্প্রদায়িক রাষ্ট্র হিসেবে প্রতিষ্ঠা করার ষড়যন্ত্রে লিপ্ত ছিলো।

তিনি বলেন, ওই ফেসবুক পেজ থেকে পার্বত্য জেলার একজন স্থানীয় সরকার প্রতিনিধিকে নিয়ে একটি মিথ্যা তথ্য দিয়ে পোস্ট করা হয়। সেখানে বলা হয় "সনাতন ধর্মাবলম্বী মানুষদের হুমকি দিলেন উপজেলা চেয়ারম্যান"। নোয়াখালীতে মারা যাওয়া এক ব্যক্তিকে পায়ের রগ কেটে পুকুর ফেলে দিয়েছেন বলে অপপ্রচার করা হয় ওই ফেসবুক পেজে।

এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, প্রাথমিকভাবে আশিষ মল্লিক-এর কোনো রাজনৈতিক দলের সংগে সম্পৃক্ততা পাওয়া যায়নি।

ঠিক কী কারণে এসব করতো, এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, তার মনে হতো এই দেশে হিন্দু সম্প্রদায় নির্যাতিত। তাই তাদের নিয়ে নেতিবাচক ও বিভ্রান্তিকর পোস্ট করলে সাম্প্রদায়িক সম্প্রতি নষ্টের মাধ্যমে সনাতন ধর্মাবলম্বীরা উত্তপ্ত হবে। এটাই তার মোটিভ ছিলো বলে আমাদের ধারণা।

বিভি/এসএইচ/এমএস

মন্তব্য করুন: