• NEWS PORTAL

  • বুধবার, ০১ মে ২০২৪

কেনো মরুদেশ দুবাইয়ে এতো বৃষ্টি, জানা গেলো আসল কারণ (ভিডিও)

প্রকাশিত: ১৪:২২, ১৮ এপ্রিল ২০২৪

ফন্ট সাইজ

ঝাঁ চকচকে  শপিং মল থেকে হাইওয়ে, সর্বত্র পানি থইথই করছে। বিপর্যস্ত বিমানসহ সকল পরিবহন পরিষেবা। দেখে মনেই হবে না এটা মরুর দেশ সংযুক্ত আরব আমিরাতের দৃশ্য। 

তেলসমৃদ্ধ আমিরাতে বৃষ্টির দেখা মেলাই ভার। বৃষ্টির জন্য গুণতে হয় প্রতীক্ষার প্রহর। তাই আচমকা ভারী বৃষ্টি, বন্যা কারণ নিয়ে উঠেছে প্রশ্ন। এর জন্য জলবায়ু পরিবর্তনকেই দায়ী করছেন বিশেষজ্ঞরা। জলবায়ু পরিবর্তনের জেরেই আবহাওয়ার আচরণ খামখেয়ালি বলে দাবি তাদের। আর আগামী দিনে প্রায়শই এমন ঘটতে পারে বলেও আশঙ্কা তাদের।

তবে দুবাইয়ের এই বন্যা পরিস্থিতির জন্য বিশেষজ্ঞদের কেউ কেউ ‘ক্লাউড সিডিং’-কেই দায়ী করেছেন। তারা বলছেন, অত্যাধুনিক এই প্রযুক্তির কারণেই বানভাসি হয়েছে বিশ্বের অন্যতম বাণিজ্যিক শহর দুবাই। কিন্তু কি এই ক্লাউড সিডিং? আর কেনোই বা এর প্রভাবে এখন ভাসছে আমিরাত?

আকাশে বৃষ্টির অনুপযোগী মেঘগুলোর উপর বিভিন্ন কেমিক্যাল ছড়িয়ে দিয়ে সময়ের আগেই বৃষ্টি ঝরিয়ে ফেলা হয়। যাকে বলা হয় ক্লাউড সিডিং বা কৃত্রিম বৃষ্টিপাত।  ‘ক্লাউড সিডিং’ পদ্ধতিতে মূলত ট্রপোস্ফিয়ারে থাকা মেঘগুলোকে সময়ের আগেই কৃত্রিমভাবে ঘনীভূত করা হয়। আর এতেই তৎক্ষণাৎ বৃষ্টিপাত শুরু হয়ে যায়। বিমান, রকেট বা মিসাইলের সাহায্যে মেঘের উপর ড্রাই আইস, সিলভার আয়োডাইড, তরল প্রোপেন গ্যাস ইত্যাদি কেমিক্যাল ছড়িয়ে দিয়ে মেঘগুলোকে দ্রুত ঘনীভূত করা হয়। যার ফলশ্রুতিতে ঘটে বৃষ্টিপাত। এমনকি একই প্রযুক্তি ব্যবহার করে বৃষ্টির পাশাপাশি কৃত্রিম তুষারপাতও ঘটানো হয়।

জানা যায়, সংযুক্ত আরব আমিরাতের আবহাওয়া বিভাগ ন্যাশনাল সেন্টার অফ মেটিওরোলজি বৃষ্টি নামানোর লক্ষ্যে গত সোমবার ও মঙ্গলবার (১৫ ও ১৬ এপ্রিল) আল আইন বিমানবন্দর থেকে ক্লাউড সিডিংয়ের জন্য বিমান প্রেরণ করে। এর ফলে এই দুইদিন ব্যাপক বৃষ্টিপাত হয়। যা একসময় রূপ নেয় ভয়াবহ বন্যায়।

এ ঘটনায় ব্যাপক সমালোচনার মুখে পড়েছে দেশটির সরকার। আমিরাতের মেটিওরোলজি এজেন্সি বলছে ঝড়ের আগে এমন কোনো অপারেশনই চালায়নি তারা। আর বৈরী এই আবহাওয়ার জন্য জলবায়ু পরিবর্তনকেই দায়ী করছেন অনেক বিশেষজ্ঞ।

সংযুক্ত আরব আমিরাতের ন্যাশনাল সেন্টার অফ মেটিওরোলজির সিনিয়র ফোরকাস্টার এসরা আলনাকবি জানান, "যদি ক্লাউড সিডিং করা হতো তাহলে আমি বলতে পারি এর বড় একটা প্রভাব পড়তো। কিন্তু ক্লাউড সিডিং-এর কোনো অপারেশন চালানো হয়নি। এখানে এপ্রিল মাস ঋতু পরিবর্তনের মৌসুম। আসলে জলবায়ু পরিবর্তনের কারণেই এমনটা হয়েছে। আর এই মাসে এমন চরম আবহাওয়া স্বাভাবিক একটি ঘটনা।" 

৭৫ বছরের ইতিহাসে গত মঙ্গলবারই সর্বাধিক বৃষ্টি হয়েছে আমিরাতে। সাধারণত দেড় বছরে যে বৃষ্টি হয়, তা মাত্র একদিনেই হয়ে গেছে। সংযুক্ত আরব আমিরাতের প্রতিবেশী দেশ ওমানেও প্রবল বর্ষণ হয়েছে। দেখা দিয়েছে প্রচণ্ড বন্যা। যার ফলে দেশটিতে কমপক্ষে ১৮ জনের মৃত্যু হয়েছে। ওমানেও ক্লাউড সিডিং প্রযুক্তি ব্যবহার করা হয়েছিলো। তাই নজিরবিহীন এই প্রাকৃতিক বিপর্যয়কে শুধুই জলবায়ু পরিবর্তনের ফলাফল মানতে নারাজ অনেক বিশেষজ্ঞ।

বিভি/এমএফআর

মন্তব্য করুন: