‘খালাদের ব্যবহারে বিরক্ত তিন বোন বাবার কাছেই থাকতে চান’

আদাবর থেকে সেই তিন বোন নিখোঁজ হননি জানিয়ে ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) তেজগাঁও বিভাগের উপ-কমিশনার বিপ্লব কুমার সরকার বলেছেন, তারা তাদের বাবার সংগেই থাকতে চান। এজন্য খালাদেরকে না জানিয়ে তারা বাবার বাড়িতে চলে গেছেন।

তিনি বলেন, দুই খালার উপর তারা চরম বিরক্ত, তাই তাদের সংগে আর থাকতে চান না। কারণ হিসেবে তারা পুলিশকে জানিয়েছে, খালার বাসায় তারা প্রত্যাশিত ব্যবহার পাচ্ছিলেন না। তবে তাদেরকে আমরা আদালতে সোপর্দ করেছি। আদালত তাদেরকে যেখানে রাখতে বলবে এবং যে নির্দেশনা দিবে আমরা সে মোতাবেক পরবর্তী ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।

শনিবার (২০ নভেম্বর) বেলা সাড়ে ১২টার দিকে তেজগাঁও ডিসি কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা জানায় তেজগাঁওয়ের ডিসি।

বৃহস্পতিবার (১৮ নভেম্বর) আদাবর থানায় তিন বোন নিখোঁজের জিডি করেন তাদের খালা সাজেদা নওরীন। তবে এ ঘটনায় ওই তিন বোনের সন্ধান পাওয়ার পর পুলিশ জানতে পারে তারা নিখোঁজ নয়, স্বেচ্ছায় খালাদের বাসা থেকে বেরিয়ে গিয়েছিলেন। গতকাল বিকেলে যশোরের হামিদপুর থেকে তিন বোনকে উদ্ধারের পর শনিবার সকালে তাদের ঢাকায় নিয়ে আসে পুলিশ।

ডিসি বিপ্লব কুমার বলেন, তারা তিনজন আপন বোন। ২০১২ সালে বাবা-মায়ের সেপারেশন হওয়ার পর মায়ের সংগে থাকতেন তারা। ২০১৩ সালে মা ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে মারা যান। এরপর তারা তিন বোন দুই খালার কাছে থাকতেন। এক খালার কাছে থাকতেন একজন, আরেক খালার কাছে থাকতেন দুজন। তাদের খালারা এ তিন বোনকে তাদের বাবা ও চাচাদের সংগে যোগাযোগ করতে দিতেন না। গত ৮ থেকে ৯ বছর ধরে বাবার সংগে দেখা নেই তাদের। 

তিনি বলেন, বাবা-মায়ের সেপারেশন, ক্যান্সারের মায়ের মৃত্যু এবং বেঁচে থাকার পরও বাবার দেখা না পাওয়া, বাবা চাচাদের সংগে যোগাযোগ করতে না পারা- এই সবকিছু মিলে তিন বোনের মধ্যে চাপা ক্ষোভ বিরাজ করছিলো। এরসংগে যুক্ত হয় খালাদের কাছ থেকে প্রত্যাশিত ব্যবহার না পাওয়া। এসব না পাওয়া থেকে ক্ষোভে খালার বাসা থেকে পালিয়ে যান তিন বোন। বাসযোগে তারা চলে যান যশোরে বাবার কাছে। বাবা কয়েকবার স্ট্রোক হওয়ায় প্যারালাইজড হয়ে অনেকটা শয্যাশায়ী জীবন যাপন করছেন। 

তিন তরুণীর টিকটক আসক্তির বিষয়ে খালা সাজিয়া নওশীনের অভিযোগের বিষয়ে বিপ্লব কুমার সরকার বলেন, আমরা তাদের কাছ থেকে কোনো মোবাইল ফোন পাইনি। তার খালার গণমাধ্যমে বিভিন্ন অভিযোগের বিষয়ে সত্যতা আমরা পাইনি এখন পর্যন্ত। তিন বোনের অনেকটাই ক্ষোভ রয়েছে খালাদের উপর। তাদের ধারণা খালাদের কাছে তারা আরও ভালো থাকতে পারতেন। 

বিভি/এসএইচ