মানিকছড়ি ডিসি এডভেঞ্চার ও ইকো-ট্যুরিজম পার্ক পেল দেশসেরা স্বীকৃতি

দেশসেরা স্বীকৃতি পেয়েছে মানিকছড়ি ডিসি এডভেঞ্চার ও ইকো-ট্যুরিজম পার্ক
পরিবেশ রক্ষায় অনন্য অবদানে খাগড়াছড়ির মানিকছড়ি ডিসি এডভেঞ্চার ও ইকো-ট্যুরিজম পার্কটি প্রথম স্থান অর্জন করেছে। পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের আয়োজিত অনুষ্ঠানে এ পুরস্কার তুলে দেওয়া হয়। মানিকছড়ি ডিসি এডভেঞ্চার ও ইকো-ট্যুরিজম পার্ক সারা দেশে প্রথম স্থান অর্জন করায় খুশি স্থানীয় অধিবাসী ও প্রশাসন। সে সাথে ডিসি এডভেঞ্চার ও ইকো-ট্যুরিজম পার্কটি দেখতে দর্শানর্থীদের সংখ্যা বেড়েছে বহুগুণ।
খাগড়াছড়ির মানিকছড়িতে অবৈধ দখল থেকে উদ্ধার করা ১৬০ একর জমিতে ডিসি অ্যাডভেঞ্চার অ্যান্ড ইকো ট্যুরিজম পার্ক গড়ে তুলে মানিকছড়ি উপজেলা প্রশাসন। সেখানে দেশের সম্ভাবনাময় পর্যটন কেন্দ্র এবং সবুজবান্ধব পরিবেশ গড়ে তুলতে নেয়া হয় ব্যাপক বৃক্ষরোপণ কর্মসূচি। পার্কের ভেতরে ১০০ প্রজাতির পরিবেশবান্ধব ২৫ হাজার গাছের চারা রোপণ ও রক্ষণাবেক্ষণের মাধ্যমে পরিবেশ রক্ষা এবং সৌন্দর্যবর্ধনের কাজ করা হয়। আর তার স্বীকতি হিসেবে গত ২৫ জুন পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের আয়োজিত অনুষ্ঠানে মানিকছড়ি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার হাতে শ্রেষ্ঠত্বের পুরস্কার তুলে দেওয়া হয়।
জাতীয় পর্যায়ের এই স্বীকৃতি মানিকছড়িকে সবুজায়নের পাশাপাশি দেশের ইকো ট্যুরিজম বিকাশেও অনুপ্রাণিত করবে বলে মনে করছেন স্থানীয়রা।
স্বীকৃতি অর্জনের জন্য মানিকছড়ির উপজেলা নির্বাহী অফিসার তাহমিনা আফরোজ ভূঁইয়া সাবেক খাগড়াছড়ি জেলা প্রশাসক ও মানিকছড়ি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও কার্যালয়ের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের অবদানের কথা স্মরণ করে বলেন, এ জাতীয় পুরস্কার মানিকছড়ি বিশ্ব দরবারে ও দেশের আনাচে-কানাচে পরিচিত করবে। এটি আন্তর্জাতিক মানের ট্যুরিজম স্পট হিসেবে ভবিষ্যতে গড়ে উঠবে।
খাগড়াছড়ি বিভাগীয় বন কর্মকর্তা মো. ফরিদ মিঞা বলেন, মানিকছড়ি ডিসি এডভেঞ্চার ও ইকো-ট্যুরিজম পার্ক দেশে পরিবেশ রক্ষায় অনন্য দৃষ্টান্ত। বাচঁতে হলে বৃক্ষের কোন বিকল্প নেই। অবৈধ দখল মুক্ত করে বিপুল পরিমাণ রাষ্ট্রীয় ভূমি উদ্বার করে পার্কের ভেতরে ১০০ প্রজাতির পরিবেশবান্ধব ২৫ হাজার গাছের চারা রোপণ করা হয়েছে। যা দেশের পরিবেশ বিপর্যয় রোধে ভূমিকা রাখবে।
নিসর্গপ্রেমীরা এখানে রাতও কাটানোরও সুযোগ পাবেন। তাবুবাসের পাশাপাশি অরণ্য কুটির রিসোর্টেও রাত কাটাতে পারবে। এ জন্য পুলিশের নিয়মিত টহলের পাশাপাশি শীঘ্রই মানিকছড়ি ডিসি এডভেঞ্চার ও ইকো-ট্যুরিজম পার্কে একটি স্থায়ী পুলিশ স্থাপনের কথা জানিয়েছেন মানিকছড়ি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা শেখ মাহমুদুল হাসান।
খাগড়াছড়ি জেলা প্রশাসক এবি এম ইফতেখারুল ইসলাম খান্দকার বলেন, এ অর্জন খাগড়াছড়ি জেলাবাসীর জন্য উৎসকৃত। পার্কটি গড়ে তোলার ক্ষেত্রে প্রকৃতিকে গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। পার্কে ২২টি টিলা ও ৩টি লেক পর্যটকদের মনের তৃষ্ণা মেটাতে ২০ একর জায়গাকে পাখির অভয়ারণ্য ঘোষণা করা হয়েছে।
তিনি বলেন, এক সময় এটি অবৈধ দখলে ছিল। এটি উদ্বার করে পাখিবান্ধব গাছের চারা রোপণ করা হয়েছে। পার্কের ভেতরে প্রাাকৃতিকভাবে বন্যপ্রাণী ও পাখিদের নিরাপত্তা দিতে এমন উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এটিই জেলার প্রথম পাখির অভয়ারণ্য।বিলুপ্ত প্রায় ঔষধি ও বনজ বৃক্ষ রোপন করা হয়েছে। এর ফলে পার্কটি বড় অর্জন নিয়ে এসেছে। এটা পুরস্কার নিঃসন্দেহে আমাদের জন্য গৌরবের জাায়গা।
তিনি সাবেক জেলা, উপজেলা ও স্থানীয় জনসাধারণের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে বলেন, এটি জেলায় পর্যটন শিল্পকে বিস্তৃত করতে সহায়ক হবে। এতে স্থানীয় জনগোষ্ঠীর কর্মসংস্থানও বাড়বে বলে আশা তার।
পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের ২০২৪ সালের বৃক্ষরোপণে জাতীয় পুরস্কারের জন্য ২১ জন ও প্রতিষ্ঠান এবং বন্যপ্রাণী সংরক্ষণের জন্য ৪ ব্যক্তিকে মনোনীত করা হয়। এর মধ্যে সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠান ক্যাটাগরিতে প্রথম স্থান অর্জন করে খাড়াছড়ির মানিকছড়ি উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কার্যালয়।
বিভি/এজেড
মন্তব্য করুন: