• NEWS PORTAL

  • রবিবার, ০৩ আগস্ট ২০২৫

Drama: Jamai Bou Chor
Drama: Jamai Bou Chor

বন্যপ্রাণী বাঁচাতে সোহেলের খাঁচায়বন্দী প্রতিবাদ

প্রকাশিত: ১৬:৪২, ২০ আগস্ট ২০২২

আপডেট: ০০:০৩, ২২ আগস্ট ২০২২

ফন্ট সাইজ
বন্যপ্রাণী বাঁচাতে সোহেলের খাঁচায়বন্দী প্রতিবাদ

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসি এলাকা। এখানকার রাজু ভাষ্কর্যের পাদদেশে একটি খাঁচার ভেতর বসে আছেন একজন মানুষ। তাঁর গলায় বাধা রয়েছে একটি শেকল। মাথার উপরে কাপড়ের প্লেকার্ডে লিখা ‘মুক্তি চাই’। খাঁচার দুপাশের দুটি প্লেকার্ডে দেওয়া আছে বন্যপ্রাণীদের খাঁচায় না রেখে নিজের আবাসস্থলে বাঁচতে দেওয়ার বার্তা।

খাঁচার ভেতরের মানুষটির নাম হোসেন সোহেল। তিনি একজন সুপরিচিত বন্যপ্রাণী সাংবাদিক ও পরিবেশকর্মী। হোসেন সোহেল জানিয়েছেন, এই খাঁচায় আগামী তিনদিন থাকবেন তিনি। টয়লেটে যেতে হলে শেকলবন্দী অবস্থায় একজন তাকে নিয়ে যাবেন। টয়লেট শেষে আবার আটকে দেওয়া হবে খাঁচায়। এর মাধ্যমে তিনি বুঝার চেষ্টা করবেন কতটুকু কষ্ট হয় খাঁচায়বন্দী প্রাণীদের। একইসঙ্গে প্রতিবাদ জানাবেন চিড়িয়াখানা ও মানুষের বাসাবাড়িতে প্রাণীদের খাঁচায় পোষার বিরুদ্ধে।

কেন এই আন্দোলন জানতে চাইলে হোসেন সোহেল বাংলাভিশনকে বলেন, সৃষ্টিকর্তা প্রতিটি প্রাণীকে সৃষ্টি করেছেন প্রকৃতিতে তার প্রয়োজন আছে বলে। প্রতিটি প্রাণীর নিজস্ব পরিবেশে জীবন ধারণের অধিকার রয়েছে। আমার মতো প্রতিটি প্রাণীর অধিকার রয়েছে স্বাধীনভাবে ঘুরে বেড়ানোর, প্রেম করার, সংসার পাতার। কিন্তু আমরা ধরে এনে খাঁচায় পুরে দেওয়ার মাধ্যমে তার এই অধিকার খর্ব করছি। 

কয়েকটি দাবি তুলে ধরে তিনি বলেন, আমি খাঁচায় প্রাণী পোষার প্রথা বাতিল চাই। বন্যপ্রাণী (সংরক্ষণ ও নিরাপত্তা) আইনের যথাযথ বাস্তবায়ন চাই। বন বিভাগ কেন ব্যর্থ হচ্ছে তার জবাব চাই। আমি চাই চিড়িয়াখানার বর্তমান প্রথা বাতিল করা হোক। বিশ্বের বিভিন্ন দেশে চিড়িয়াখানার আধুনিকায়ন হচ্ছে, আমরা কেন এখনো ছোট ঘরে প্রাণীদের আটকে রাখার প্রথায় রয়েছি, এটার জবাব চাই। 

উল্লেখ্য, সম্প্রতি হাওয়া চলচ্চিত্রে একটি শালিক পাখিকে খাঁচায় আটকে প্রদর্শন ও পরবর্তীতে সেই পাখিকে পুড়িয়ে খাওয়ার দৃশ্য দেখানো নিয়ে বেশ আলোচনা-সমালোচনা চলছে দেশজুড়ে। এ নিয়ে হাওয়া সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবিতে গত কয়েকদিন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বেশ সরব দেখা গেছে হোসেন সোহেলকে। পাখির পক্ষে প্রতিবাদকে কেন্দ্র করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বেশ বুলিংয়েরও শিকার হয়েছেন সোহেল। এরই মধ্যে শনিবার (২০ আগস্ট) বন্যপ্রাণীদের খাঁচায়বন্দী করার প্রথা বিলুপ্তির দাবি নিয়ে ব্যতিক্রমী এই আন্দোলন শুরু করেন তিনি। সকাল থেকে রাজু ভাষ্কর্য এলাকায় গিয়ে তার পাশে বসে সংহতিও প্রকাশ করেন অনেকে।

এর আগে গত ২৯ জুলাই মুক্তি পায় মিজবাউর রহমান সুমন পরিচালিত চলচ্চিত্র হাওয়া। চলচ্চিত্রটিতে খাঁচায়বন্দী পাখি প্রদর্শন ও পুড়িয়ে খাওয়ার চিত্র দেখানো নিয়ে সেদিন থেকেই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সমালোচনা শুরু করেন প্রাণীপ্রেমিরা। পরে চলচ্চিত্রটিতে বন্যপ্রাণী (সংরক্ষণ ও নিরাপত্তা) আইন-২০১২ লংঘনের তথ্য তুলে ধরে প্রতিবেদন প্রকাশ করে বাংলাভিশন। তার পর সিনেপ্লেক্সে গিয়ে হাওয়া চলচ্চিত্র দেখেন বন্যপ্রাণী অপরাধ দমন ইউনিটের গঠিত ৪ সদস্যের তদন্ত দল। সেদিনই গণমাধ্যমে তারা বলেন, ‘চলচ্চিত্রটিতে আইন লংঘনের সত্যতা মিলেছে। এ ঘটনায় গত বৃহস্পতিবার ঢাকা মহানগর দায়রা জজ আদালতে হাওয়া চলচ্চিত্রের পরিচালক মিসবাউর রহমান সুমনকে আসামি করে বন্যপ্রাণী (সংরক্ষণ ও নিরাপত্তা) আইনে মামলা করে বন্যপ্রাণী অপরাধ দমন ইউনিট। সেই থেকে মামলার পক্ষে বিপক্ষে বেশ সবর রয়েছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের আলোচনায় বার বার উঠে আসছে চিড়িয়াখানায় খাঁচায় প্রাণী আটকে রাখার বিষয়টিও।

বিভি/রিসি

মন্তব্য করুন: