• NEWS PORTAL

  • বুধবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৪

উদ্বোধন হলো পার্বত্য বিতর্ক উৎসব-২০২৩

প্রকাশিত: ২৩:১৭, ২২ জানুয়ারি ২০২৩

ফন্ট সাইজ
উদ্বোধন হলো পার্বত্য বিতর্ক উৎসব-২০২৩

গ্লোবাল এ্যাফেয়ার্স কানাডার সহযোগিতায় এবং ব্র্যাক ও ডিবেট ফর ডেমোক্রেসি’র যৌথ আয়োজনে রবিবার (২২ জানুয়ারি) উদ্বোধন হলো ‘পার্বত্য বিতর্ক উৎসব-২০২৩’।  পার্বত্য অঞ্চলের স্কুল শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণে প্রথমবারের মতো জাতীয় পর্যায়ে রাজধানীর বাংলাদেশ চলচ্চিত্র উন্নয়ন কর্পোরেশনে (এফডিসি) এই প্রতিযোগিতার উদ্বোধন করা হয়। পার্বত্য বিতর্ক উৎসবে পার্বত্য অঞ্চলের রাঙ্গামাটি ও বান্দরবান জেলার ৭টি উপজেলার ৫০টি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করেছে। 

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের যুগ্ম কমিশনার বিপ্লব কুমার সরকার। সভাপতিত্ব করেন ডিবেট ফর ডেমোক্রেসির চেয়ারম্যান হাসান আহমেদ চৌধুরী কিরণ।

এর আগে সকালে সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদ, এমপি প্রতিযোগিতার উদ্বোধন করেন। আগামী ৩১ জানুয়ারী পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রী বীর বাহাদুর উশৈসিং এমপি পার্বত্য বিতর্ক উৎসবের সমাপনি অনুষ্ঠানে চ্যাম্পিয়ন ও রানারআপ দলের মধ্যে পুরস্কার বিতরণ করবেন।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের যুগ্ম কমিশনার বিপ্লব কুমার সরকার বলেন, তথ্য প্রযুক্তির ব্যবহার আমাদের জন্য আবশ্যক। কিন্তু সমস্যা হয়েছে অপব্যবহার নিয়ে। তথ্য প্রযুক্তির অপব্যবহারে আজ তরুণ সমাজ নানা ভাবে বিভ্রান্ত, দিকভ্রান্ত ও অপরাধপ্রবণ হয়ে উঠেছে। এ থেকে পরিত্রাণের অন্যতম উপায় আমাদের পারিবারিক বন্ধনকে আরও শক্তিশালী করা। সন্তানের প্রতি পিতামাতার ও  শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের নজরদারী আরো বৃদ্ধি করা। সর্বোপরি তরুণ প্রজন্মকে আমরা যদি শিক্ষা, সংস্কৃতি ও মূল্যবোধের আলোয় আলোকিত করতে পারি তবেই প্রযুক্তির অপব্যবহার প্রশমন করা যাবে এবং এর ফলে সমাজে কিশোর অপরাধ রোধ করা সম্ভব হবে।

সভাপতির বক্তব্যে ডিবেট ফর ডেমোক্রেসির চেয়ারম্যান হাসান আহমেদ চৌধুরী কিরণ বলেন, ‘সম্প্রতি দেশে আশঙ্কাজনক হারে বৃদ্ধি পাচ্ছে কিশোর অপরাধ। সামাজিক যোগাযোগ বা তথ্য প্রযুক্তির অপব্যবহারের কারণে এই অপরাধের মাত্রা আরো বৃদ্ধি পাচ্ছে। বিতর্কিত অ্যাপস টিকটকসহ বিভিন্ন সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে তারকা বানিয়ে আর্থিক প্রলোভন দেখিয়ে নিম্ন আয়ের পরিবারের মেয়েদের অনৈতিক কর্মকান্ডের ফাঁদে ফেলছে এসব অপরাধীরা। এমন কি সুকৌশলে এসব মেয়েদের ভারত ও মধ্যপ্রাচ্য সহ বিভিন্ন দেশে পাচার করা হচ্ছে। বিশেষ করে টিকটক, লাইকি, ইমু, ফেসবুক, স্ট্রিমকার, মাইস্পেস, হাইফাইভ, বাদু ইত্যাদি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের অনিয়ন্ত্রিত ব্যবহার কিশোর-তরুণদের বিপথগামী করে তুলছে। কিশোর অপরাধ নিয়ন্ত্রণে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর পাশাপাশি অভিভাবক ও শিক্ষকসহ সমাজের বিভিন্ন পেশার মানুষকে সমন্বিত ভাবে কাজ করতে হবে। বিশেষত পরিবারে সন্তানদের প্রতি বাবা মায়ের নজরদারি বাড়াতে হবে। সোশ্যাল মিডিয়ার অপব্যবহার প্রতিরোধে সংশ্লিষ্ট সকলকে সতর্ক থাকতে হবে।

ডেমোক্রেসির চেয়ারম্যান হাসান আহমেদ চৌধুরী কিরণ তথ্য প্রযুক্তির অপব্যবহার রোধে নিম্নের ৭ দফা সুপারিশ করেন: 
১. তথ্য প্রযুক্তির অপব্যবহারসমূহ চিহ্নিত করে ফ্রি-ফায়ার ও পাবজির মতো বিভিন্ন ধরনের অপ্রয়োজনীয় অ্যাপস, গেইম বন্ধ করা এবং  এসব বিষয়ে কঠোর নিয়ন্ত্রণ আরোপ করা।
২. শিশু-কিশোরদের সৃজনশীল কর্মকাণ্ডে আরও বেশি সম্পৃক্ত করে এলাকাভিত্তিক পাঠাগার, সাংস্কৃতিক কর্মকান্ড, খেলাধূলাসহ বিনোদনের  ব্যবস্থা করা।
৩. কিশোর অপরাধ সংক্রান্ত আইনের জটিলতা নিরসন করা 
৪. রাজনৈতিক কর্মকান্ডে কিশোরদের ব্যবহার না করা
৫. পারিবারিক, সামাজিক ও ধর্মীয় মূল্যবোধ জাগ্রত করে সামাজিক প্রতিরোধ গড়ে তোলা 
৬. রাত ১০ টার পর থেকে সকাল পর্যন্ত অপ্রয়োজনীয় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের ব্যবহার বন্ধ রাখা 
৭. কিশোর অপরাধ সংশোধন কেন্দ্রগুলি আধুনিকায়ন করে সেখানে কাউন্সেলিং এর ব্যবস্থা করা

“তথ্য প্রযুক্তির অপব্যবহারের কারণে কিশোর অপরাধ বৃদ্ধি পাচ্ছে” শীর্ষক বিষয়ে বান্দরবানের থানচি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়কে পরাজিত করে নাইক্ষ্যংছড়ি মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয় বিজয়ী হওয়ার গৌরব অর্জন করে। প্রতিযোগিতায় বিচারক ছিলেন অধ্যাপক আবু মোহাম্মদ রইস, ড. এস এম মোর্শেদ, সাংবাদিক জামিউল আহসান শিপু, সাংবাদিক এস এম ফয়েজ ও সাংবাদিক মৌ খন্দকার। প্রতিযোগিতা শেষে  অংশগ্রহণকারী লকে ট্রফি ও সার্টিফিকেট প্রদান করা হয়।

বিভি/এনএ

মন্তব্য করুন: