• NEWS PORTAL

  • শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪

টিপুকে  দেখতে হাসপাতালে বঙ্গবন্ধু পরিষদের নেতৃবৃন্দ 

প্রকাশিত: ১৮:৩৪, ১১ মে ২০২৩

ফন্ট সাইজ
টিপুকে  দেখতে হাসপাতালে বঙ্গবন্ধু পরিষদের নেতৃবৃন্দ 

টিপুকে  দেখতে হাসপাতালে বঙ্গবন্ধু পরিষদের নেতৃবৃন্দ 

সম্প্রতি অসুস্থ অবস্থায় রিকশা চালানো ছাত্রলীগ নেতা টিপু সুলতানের একটি সংবাদ বেশ আলোচিত হয়েছে। এরপর থেকে সবাই টিপুর পাশে দাঁড়াচ্ছেন। বৃহস্পতিবার (১১ মে) বঙ্গবন্ধু পরিষদের পক্ষ থেকে পরিষদের প্রেসিডিয়াম সদস্য ড. আবদুল ওয়াদুদ ও যুগ্মসাধারণ সম্পাদক ডাক্তার শেখ আব্দুল্লাহ আল মামুনের নেতৃত্বে একদল প্রতিনিধি দল ছাত্রলীগ নেতা টিপু সুলতানকে দেখতে পঙ্গু হাসপাতালে যান। 

এ সময় তারা টিপুর চিকিৎসার খোঁজখবর নেন ও  হাসপাতালে দায়িত্বরত  চিকিৎসকদের সাথে কথা বলেন। নেতৃবৃন্দ টিপুর চিকিৎসার ত্বরিত ব্যবস্থা নেওয়ায় জন্য প্রধানমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানান। প্রধানমন্ত্রী এত ব্যস্ততার মাঝেও   তৃণমূল কর্মীদের দুঃসময়ে সবসময় পাশে থাকেন, খোঁজ খবর  রাখেন  এটা তারই এক উৎকৃষ্ট উদাহরণ। 

ফিকামলি তত্ত্বের জনক, রাজনৈতিক বিশ্লেষক ড. আব্দুল ওয়াদুদ বলেন, টিপুকে নিয়ে বাংলাভিশনের সংবাদ দেখার পরপরই আমি টিপুর চিকিৎসার ব্যয়ভার নিতে এগিয়ে আসি, অনেকেই এসেছেন, এখন মাননীয় প্রধানমন্ত্রী  নিয়েছেন শোকর আলহামদুলিল্লাহ। বঙ্গবন্ধু কন্যার মহানুভবতা ও কর্মীদের প্রতি ভালোবাসা দেখে আমি মুগ্ধ ও অভিভূত।  

উপস্থিত সাংবাদিকদের ড. আব্দুল ওয়াদুদ ক্ষোভের সাথে বলেন, প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনাকে যদি তৃণমূল পর্যায়ের সকল খোঁজখবর একাই রাখতে হয় তাহলে এত নেতা- কর্মী এমপির কি দরকার। তিনি নেতা-কর্মী, এমপি মন্ত্রীদের আরো কর্মীবান্ধব হওয়ার আহ্বান জানান।   

টিপুর চিকিৎসার সুব্যবস্থা করার দায়িত্ব ছিল নাটোর জেলা নেতা-কর্মীদের। তাদের সাহায্য, সহযোগিতা ও অবহেলার কারণে টিপু ঢাকাতে এসে রিকশা চালাতে বাধ্য হচ্ছে। ঢাকা পর্যন্ত কেন তাকে আসতে হবে? স্থানীয় সংসদ সদস্য ও নেতৃবৃন্দের কোন দায়িত্ব কি ছিল না! কর্মীরা কেন জীবনের ঝুঁকি নিয়ে দলীয় কর্মসূচি সফল করবে? টিপুর বিষয়টা বঙ্গবন্ধুর আদর্শের সকল মানুষের জন্য একটা লজ্জাস্করও গ্লানির। এখন সময় এসেছে সুবিধাবাদী হাইব্রিড নেতাদের থাবা থেকে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগকে মুক্ত করার যারা দুঃসময়ে কর্মীদের পাশে থাকে না।  

ড. আবদুল  ওয়াদুদ আরো বলেন, জনগণের মন-মানসিকতা, চাহিদা, প্রয়োজন, সর্বোপরি জনগণের প্রত্যাশাকে বুঝে এবং  বিবেচনায় নিয়ে রাজনৈতিক নেতৃত্ব কর্মসূচি প্রণয়ন করবেন এবং জনগণের ন্যায্য দাবি আদায় ও বাস্তবায়নের মাধ্যমে মানব সেবা এবং  সমাজ উন্নয়নে অবদান রাখবেন- সাধারণ মানুষ রাজনৈতিক নেতাদের কাছ থেকে এমনটাই প্রত্যাশা করে।অথচ, বঙ্গবন্ধুর আজকের বাংলাদেশে রাজনৈতিক নেতাদের কথাবার্তা, চালচলন, ভাবভঙ্গি ও বিলাসিতা দেখলে সবার মনে প্রশ্ন জাগে- বঙ্গবন্ধু কি এমন নেতৃত্ব, এমন বাংলাদেশ চেয়েছিলেন? 

বঙ্গবন্ধু  সব সময় সাধারণ মানুষের পাশে থেকে, তাদেরকে নিয়ে, তাদের জন্য রাজনীতি করেছেন; সুখে দুখে তাদের পাশে থেকেছেন, নিজের সাধ্যমত সাহায্য সহযোগিতা করেছেন। সাধারণ মানুষের দুঃখ-কষ্ট, দুর্দশা, শিক্ষা-স্বাস্থ্য ও অর্থনৈতিক পশ্চাদপদতা বঙ্গবন্ধু গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করতেন। সামাজিক পশ্চাদপদতা ও অসংগতি তাঁকে ভাবিয়ে তুলতো। তাই, গণ মানুষের ভাগ্য উন্নয়নের বিষয়টিকে তিনি রাজনীতির মূল লক্ষ্য হিসাবে গ্রহণ করছিলেন। 

বঙ্গবন্ধু  চেয়েছিলেন সাধারণ মানুষের দুদাশা ঘুঁচিয়ে সুখী সমৃদ্ধশালী সোনার বাংলা গড়ে তুলতে। কর্মীবান্ধব বঙ্গবন্ধু নেতাকর্মীদের যেকোনো প্রয়োজনে নিজের সর্বস্ব বিলিয়ে দিতেন। ছাত্রলীগ নেতা টিপুর ঘটনা একক কোনো ঘটনা নয়।  টিপুর মতো এরকম শত শত টিপু আছে, যাদের দুঃসময়ে বর্তমান কালের নেতারা পাশে থাকে না।

মিডিয়ার কারণে হয়তো টিপুর বিষয়টি সামনে এসেছে। এই ঘটনা থেকে আমাদের নেতাদের অনেক কিছু শেখার আছে। যারা আদর্শিক রাজনীতি করে তাদের আরো কর্মীবান্ধব হওয়া বাঞ্ছনীয়। নিজেদের আখের গোছাতে ব্যস্ত নেতাদের সময় থাকেনা-বিপদগ্রস্থ কর্মীদের খবর নেবার। কর্মীরা নেতাদের কর্মচারী নয়, কর্মীরাই নেতা তৈরি করে। যে সব নেতারা নির্যাতিত- নিপীড়িত কর্মীদের পাশে থাকতে পারে না তাদের রাজনীতিকে অপরাজনীতি বলাই শ্রেয়। নিজ দলের কর্মীদের দুর্দিনে যে সব নেতারা খোঁজ খবর নেয় না, পাশে থাকে না, উপকারে আসে না তারা কিভাবে জনগণের ভাগ্য উন্নয়নের দায়িত্ব পালন করবে! মুজিব আদর্শের লেবাসধারী এসব রাজনীতিবিদের বিষয়ে দলের সতর্ক হওয়ার সময় এসেছে। টিপুর ঘটনা স্থানীয় রাজনীতির সমন্বয়হীনতা ও কর্মীদের সাথে নেতাদের যোগাযোগহীনতা ও দূরত্বের প্রতি ইঙ্গিত বহন করে।  আওয়ামী লীগের হাই কমান্ডের  এসব ঘটনায় দলীয় ব্যবস্থা নেওয়ার  সময় এসেছে।

হাসপাতাল ত্যাগের পূর্বে বঙ্গবন্ধু পরিষদের পক্ষ থেকে টিপুর পরিবারকে আর্থিক অনুদান প্রদান করা হয়।

বিভি/এসএম/এজেড

মন্তব্য করুন: