‘স্বৈরাচারের আঁচলে আশ্রয় নেওয়াদের রক্ষাকবচের দায়িত্বে অন্তর্বর্তী সরকার’

১২ দলীয় জোটের নেতৃবৃন্দ বলেছেন, ‘স্বৈরাচারের আঁচলে আশ্রয় নেওয়াদের রক্ষাকবচের দায়িত্বে অন্তর্বর্তী সরকার।’ মঙ্গলবার (২৭ মে) ১২ দলীয় জোটের এক জরুরি বৈঠকে উক্ত মন্তব্য করেন নেতৃবৃন্দ। এছাড়াও, সভায় বিদ্যমান রাজনৈতিক অস্থিরতা এখতিয়ার বহির্ভূতভাবে বন্দর, করিডোর চুক্তি বাস্তবায়নের চেষ্টা অব্যাহতভাবে ভারতের পুশইন’র ব্যাপারে অন্তর্বর্তী সরকারের নীরবতা ও দেশকে নিয়ে গভীর ষড়যন্ত্রের চক্রান্তে উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়।
সভায় নেতৃবৃন্দ বলেন, দীর্ঘ আন্দোলন সংগ্রামের পর ৫ আগস্ট ঐতিহাসিক ছাত্র জনতার গণঅভ্যুত্থানের মাধ্যমে একটি স্বৈরাচার ও সেবাদাস সরকারের পতন হয়েছে। তারা আরও বলেন, আমরা অনেক আশা নিয়ে ডক্টর ইউনুস এর মত বিশ্ব বরেণ্য ব্যক্তির ওপর পূর্ণ আস্থা রেখে এবং অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টাদের প্রতি সমর্থন জ্ঞাপন করেছিলাম। আমরা আশা করেছিলাম এই সরকার দেশকে গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় উত্তরণের জন্য প্রয়োজনীয় মৌলিক সংস্কার করে অচিরেই একটি নির্বাচনের রোডম্যাপ ঘোষণা করবেন।
নেতৃবৃন্দ আরও বলেন, অত্যন্ত পরিতাপ ও ক্ষোভের সাথে বলতে হচ্ছে এই সরকার নির্বাচন ও গণতন্ত্রকে পাশ কাটিয়ে দেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব বিপন্নকারী পদক্ষেপ গ্রহণ করতে চাচ্ছে। শুধু তাই নয় আধিপত্যবাদী ভারতীয় পুশইন ও সীমান্ত হত্যার ক্ষেত্রে আশ্চর্যজনকভাবে নীরবতা পালন করছে।
জোট নেতারা বলেন, দেশের ঐতিহাসিক ক্রান্তিলগ্নে জাতীয় ঐক্যমত সৃষ্টির প্রয়াসে স্বৈরাচারের দোসরদের এবং যারা প্রত্যক্ষভাবে বিগত স্বৈরাচারের মসনদ দীর্ঘায়িত করার জন্য সোচ্চার ভূমিকা রেখেছেন তাদের অনেককে নিয়েই গত দুই-তিন দিন রাজনৈতিক অচলাবস্থা নিরসনে বৈঠক করেছেন। অথচ, ফ্যাসিবাদবিরোধী আন্দোলনের সক্রিয় সোচ্চার ভূমিকা পালনকারী দেশপ্রেমিক গণতান্ত্রিক শক্তি সমূহকে উপেক্ষা করা হয়েছে। সরকারের এহেন আচরণ আমাদের চরম ক্ষুব্ধ ও মর্মাহত করেছে। আমরা আশা করি, ভবিষ্যতে গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ বিনির্মাণে যারা শত নির্যাতন, নিপীড়ন উপেক্ষা করে অগ্রণী ভূমিকা পালন করেছে তাদের সঠিক মূল্যায়ন করবেন।
নেতৃবৃন্দ আরো বলেন, আমরা এখনও ডক্টর ইউনুসের প্রতি আস্থা রাখতে চাই এবং আশা করি এই সরকার গণবিরোধী ও দেশবিরোধী যে কোন পদক্ষেপ গ্রহণ করা থেকে বিরত থাকবেন।
১২ দলীয় জোট প্রধান ও জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান মোস্তফা জামাল হায়দারের সভাপতিত্বে বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন জোটের মুখপাত্র বাংলাদেশ এলডিপির চেয়ারম্যান শাহাদাত হোসেন সেলিম, জোটের সমন্বয়ক বাংলাদেশ জাতীয় দলের চেয়ারম্যান সৈয়দ এহসানুল হুদা, জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশের মহাসচিব ডক্টর গোলাম মহিউদ্দিন ইকরাম, জাতীয় গণতান্ত্রিক পার্টি (জাগপার) সহ-সভাপতি রাশেদ প্রধান, লেবার পার্টি বাংলাদেশের চেয়ারম্যান লায়ন ফারুক রহমান, কল্যাণ পার্টি চেয়ারম্যান শামসুদ্দীন পারভেজ, ইসলামী ঐক্যজোটের চেয়ারম্যান মাওলানা আব্দুর রকিব, ইসলামিক পার্টির মহাসচিব আবুল কাশেম, নয়া গণতান্ত্রিক পার্টির সভাপতি এম এ মান্নান, প্রগতিশীল জাতীয়তাবাদী দল (পিএনপির) চেয়ারম্যান ফিরোজ মোঃ লিটন, বাংলাদেশ এলডিপির মহাসচিব তমিজ উদ্দিন টিটু, বাংলাদেশ কল্যাণ পার্টির মহাসচিব আবু হানিফ, লেবার পার্টি বাংলাদেশের মহাসচিব আমিনুল ইসলাম, জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশের সাংগঠনিক সম্পাদক মুফতি জাকির হোসেন, নয়া গণতান্ত্রিক পার্টির মহাসচিব ইমরুল কায়েস ও পিএনপির যুগ্ম মহাসচিব মোঃ হৃদয়।
বিভি/পিএইচ
মন্তব্য করুন: