‘বিএনপির পায়ে পা দিয়ে ঝগড়া সৃষ্টি করতে চায় কয়েকটি দল’

বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্স বলেছেন, ‘বিএনপির পায়ে পা দিয়ে ঝগড়া সৃষ্টি করতে চায় কয়েকটি দল। তারা উদ্দেশ্যমূলকভাবে রাজনৈতিক সংঘাতে পরিবেশ বিনষ্ট করে নির্বাচন বানচালের পাঁয়তারা করছে।’ তিনি বলেন, খোঁচাখুঁচি না করে জনগণের ওপর আস্থা রেখে নির্বাচনী ট্রেনে চড়ার জন্য তিনি দলগুলোর প্রতি আহ্বান জানান।
শুক্রবার (১১ জুলাই) বিকালে তিনি ময়মনসিংহের হালুয়াঘাটের যুগলী ইউনিয়নের নয়াপাড়া শাহ সুলতান ঈদগাহ মাঠে ৮ নং ওয়ার্ড বিএনপির সন্মেলন এবং বিএনপি নেতাকর্মীদের সদস্য নবায়ন ও নতুন প্রাথমিক সদস্যদের সদস্য রশীদ প্রদান অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন।
এদিন দুপুর ৩টায় খলিশাকুড়ি দাখিল মাদরাসা মাঠে ৮ নং ওয়ার্ড এবং রাতে কলাপাগলা উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে ৭ নং ওয়ার্ড বিএনপির সম্মেলন এবং বিএনপি নেতাকর্মীদের সদস্য নবায়ন ও নতুন প্রাথমিক সদস্যদের সদস্য রশীদ প্রদান অনুষ্ঠানে তিনি প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন। এর আগে তিনি কৈচাপুর ইউনিয়নের ফকিরপাড়া গ্রামে জুম্মার নামাজ শেষে গণ সংযোগ করেন।
সম্মেলন সমূহে এমরান সালেহ প্রিন্স বলেন, বিএনপিকে ইঙ্গিত করে চোখ রাঙিয়ে গরম বক্তব্য দিয়ে রাজনীতি পাল্টনো যায় না বরং, সংঘাত সৃষ্টিতে উস্কানি দেওয়া হচ্ছে। কোনও উসকানিতে বিএনপি পা দেবে না।
তিনি আরো বলেন, আওয়ামী খেলোয়াড়রা দেশ ছেড়ে পালিয়ে গেছে। নতুন খেলোয়ারের আবির্ভাব হয়েছে, তারা খেলা ও খেলার নিয়ম পাল্টে দিতে চায়। বিএনপি জনগণ ও রাজনীতি নিয়ে কোনও খেলা নয়, বাস্তবমুখী কর্মসূচি নিয়ে জনগণের মন জয় করে গণঅভ্যুত্থানের আকাঙ্ক্ষা বাস্তবায়ণ করে শহীদের রক্তের ঋণ পরিশোধ করতে চায়।
তিনি বলেন, বিএনপি জনগণের রাজনীতির মাধ্যমে জনগণের গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করবে। শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান রাজনীতিকে নেতাদের ড্রইংরুম থেকে বের করে গ্রামীণ জনপদে নিয়ে জবাবদিহিতা ও জনসম্পৃক্ততা নিশ্চিত করেছিলেন। শহীদ জিয়া গ্রামীণ জনপদে পায়ে হেঁটে গ্রামে গ্রামে ঘুরে বিএনপির জাতীয়তাবাদী রাজনীতি প্রতিষ্ঠা করে গেছেন। এসব কথা রাজনীতির ময়দানে আসা নতুন দলের নেতারা হয়তো জানেন না, তবে তাদের অভিভাবকরা তা জানেন। দমন-নিপীড়ন ও ফ্যাসিবাদ মোকাবেলা করে বিএনপি শহীদ জিয়ার সেই রাজনীতি বহন করে চলেছে সাহসের সাথে।
তিনি আরো বলেন, নতুন দলের নেতারা রাজনীতির নতুন বন্দোবস্তের কথা বললেও পুরাতন বন্দোবস্তের আদলে বয়ান দিয়ে উত্তেজনা সৃষ্টি করতে চাচ্ছেন। বিএনপি গণঅভ্যুত্থানসহ বিগত ১৫ বছরের শহীদের রক্তের ঋণ পরিশোধ করতে গণ অভ্যুত্থানের আকাঙ্ক্ষা বাস্তবায়ন করতে দ্রুত সংস্কার ও বিচার প্রক্রিয়া এগিয়ে নিয়ে নির্বাচন চায়। নির্বাচিত সংসদ ও সরকার ছাড়া অভ্যুত্থানের আকাঙ্ক্ষা বাস্তবায়ন করা সম্ভব নয়। শুধু আবেগ নয়, আবেগের সাথে ও যুক্তি দিয়ে রাজনীতিকে পরিশুদ্ধ করতে হয়।
তিনি বলেন, অন্তর্বর্তী সরকারের ভেতরে ও বাইরে থেকে যারা সংস্কার ও বিচারকাজে দীর্ঘায়িত ও জটিলতা সৃষ্টি করেছে তারাই এক বছরে প্রত্যাশিত ও আকাঙ্ক্ষিত বাংলাদেশ না পাওয়ার কথা বলে দায় এড়াতে চাচ্ছে। নির্বাচনে যারা জনগণের সমর্থন পাবে না, তারা নির্বাচন চায় না। সেজন্য বিভিন্ন অজুহাত তুলে তারা ঘোলা পানিতে মাছ শিকার করতে চায়। লন্ডন বৈঠক এবং ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচনের প্রস্তুতি নিতে প্রধান উপদেষ্টার নির্দেশনার পর নির্বাচন বাধাগ্রস্ত করতে মহল বিশেষের পায়তারা বেড়ে গেছে। সকল ষড়যন্ত্রের জাল ছিন্ন করে ইনশাআলাহ রমজানের আগেই নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। তিনি নেতাকর্মীদের প্রতি ঘরে ঘরে বেগম খালেদা জিয়া ও তারেক রহমানের সালাম পৌঁছে দিয়ে ধানের শীষের প্রচারণা শুরু করার আহ্বান জানান।
যুগলী ইউনিয়ন বিএনপির আহবায়ক ক্বারী আবুল কাশেম এর সভাপতিত্বে ও সদস্য সচিব কৃষক আব্দুস সাত্তার এর সঞ্চালনায় সম্মেলনে আরো বক্তব্য রাখেন হালুয়াঘাট উপজেলা বিএনপির আহবায়ক আসলাম মিয়া বাবুল, সদস্য সচিব আবু হাসনাত বদরুল কবীর, যুগ্ম আহবায়ক আলী আশরাফ, কাজী ফরিদ আহমেদ পলাশ, চেয়ারম্যান শফিকুর রহমান, সাবেক চেয়ারম্যান মোনায়েম হোসেন খান খোকন, বিএনপি নেতা অধ্যাপক মেহেবুবুর রহমান মুকুল, অধ্যক্ষ আশরাফুল ইসলাম, শাজাহান মাহমুদ, রফিকুল ইসলাম, অ্যাডভোকেট আবুল কালাম আযাদ, রমজান আলী জহির, উপজেলা কৃষকদলের সভাপতি আনোয়ার হোসেন, উপজেলা তাঁতীদলের আহবায়ক আকিকুল ইসলাম, বিএনপি নেতা আবদুল জলিল, মুকতাদির আহসান, আবু তালেব, জাহাংগীর আলম, হযরত আলী, সবুজ মিয়া, মো. শওকত প্রমুখ।
বিভি/পিএইচ
মন্তব্য করুন: