সবাইকে নিয়েই ফেব্রুয়ারির নির্বাচনে অংশগ্রহণ হোক: ডা. শফিকুর রহমান
								ছবি: সংগৃহীত
বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান বলেছেন, রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে মতের পার্থক্য থাকা স্বাভাবিক, তবে তা যেন বিভাজন বা সংঘাতে রূপ না নেয়। আমরা চাই, সবাইকে নিয়েই ফেব্রুয়ারির নির্বাচনে অংশগ্রহণ হোক। মঙ্গলবার (৪ নভেম্বর) ভোরে সৌদি আরব, যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্য সফর শেষে দেশে ফিরে বিমানবন্দরের ভিআইপি গেটে সংক্ষিপ্ত এক ব্রিফিংয়ে তিনি এসব কথা বলেন।
ডা. শফিকুর রহমান বলেন, ‘গত মাসের ১৯ তারিখে ওমরাহ পালনের উদ্দেশে দেশত্যাগ করি। তিন দিনে ওমরাহ শেষ করে ২২ অক্টোবর আমেরিকায় পৌঁছাই। সেখানে সরকারি-বেসরকারি গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের সঙ্গে বৈঠক করেছি, প্রবাসী বাংলাদেশিদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছি। তাদের অনেকে দীর্ঘদিনের বঞ্চনা ও নিপীড়নের কথা বলেছেন। আমি তাদের আশ্বস্ত করেছি, বাংলাদেশ এখন ফ্যাসিবাদী শাসন থেকে মুক্ত, এবং এ মুক্তির লড়াইয়ে প্রবাসীদের ভূমিকাও গুরুত্বপূর্ণ ছিল।’
তিনি জানান, প্রবাসীদের ভোটাধিকার নিয়ে জামায়াতের দাবির পর সরকার ও নির্বাচন কমিশন এখন ব্যাপক উদ্যোগ নিয়েছে। তবে প্রবাসী নিবন্ধন সফটওয়্যার কাজ না করায় অনেকেই ভোটার হতে পারেননি। এ পরিস্থিতিতে তিনি নির্বাচন কমিশনের কাছে অন্তত আরও ১৫ দিন সময় বাড়ানোর অনুরোধ জানান।
তার ভাষায়, ‘ভোটার হওয়ার প্রক্রিয়াটি আরও সহজ করা প্রয়োজন। একজন নাগরিকের এনআইডি ও বৈধ পাসপোর্ট থাকলেই যথেষ্ট হওয়া উচিত।’
জাতীয় সংসদ ও সরকার পরিচালনায় প্রবাসীদের অংশগ্রহণের বিষয়ে তিনি বলেন, ‘প্রবাসীরা পিআর সিস্টেমের মাধ্যমেই ধীরে ধীরে অংশগ্রহণ করবেন। এটা সময়সাপেক্ষ হলেও নিশ্চিতভাবে হবে— ইনশাআল্লাহ।’
যুক্তরাজ্য ও তুরস্ক সফরের কথাও তুলে ধরেন তিনি। বলেন, ‘দুনিয়ার সব দেশের সঙ্গে আমরা পারস্পরিক শ্রদ্ধা ও সমতার ভিত্তিতে সম্পর্ক চাই। যেখানে গিয়েছি, সবার কাছেই সম্মান ও আগ্রহ পেয়েছি।’
বিএনপির মনোনয়ন প্রকাশের প্রসঙ্গে এক প্রশ্নে তিনি বলেন, ‘বিএনপি ২৩৭টি আসনের প্রার্থী তালিকা প্রকাশ করেছে, তবে সেটি এখনো চূড়ান্ত নয়। আমাদের ক্ষেত্রেও আঞ্চলিক পর্যায়ে প্রাথমিক তালিকা আগে থেকেই প্রস্তুত আছে। সময়মতো পূর্ণাঙ্গ তালিকা জানিয়ে দেওয়া হবে।’
তিনি আরও বলেন, ‘জামায়াতে ইসলামী একা নির্বাচন করবে না। জাতীয় স্বার্থে আরও অনেক দলকে সঙ্গে নেবে। সবদিক বিবেচনা করে যথাসময়ে চূড়ান্ত মনোনয়ন তালিকা প্রকাশ করা হবে।’
লন্ডনে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের সঙ্গে বৈঠকের বিষয়ে জানতে চাইলে জামায়াত আমির সংক্ষিপ্ত জবাবে বলেন, ‘আপনি শুনেছেন, আমি শুনিনি।’
রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে বিরোধের প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘মতানৈক্য থাকতে পারে, কিন্তু মতবিরোধ যেন না হয়। মতের ভিন্নতা গণতন্ত্রের সৌন্দর্য। আমরা সব দলের মতকে শ্রদ্ধা করি। মতানৈক্য মানেই অনৈক্য নয়।’
সরকারের আলোচনার আহ্বান প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘সরকার কোনো সময় বেঁধে দেয়নি, শুধু অনুরোধ করেছে। রাজনৈতিক দলগুলো যদি বসে ঐকমত্যে পৌঁছাতে পারে, তা সরকারের জন্যও ইতিবাচক হবে। আমাদের নায়েবে আমির তাহেরও দেশের স্বার্থে খোলামেলা আলোচনার আহ্বান জানিয়েছেন।’
এ সময় জামায়াতের নায়েবে আমির অধ্যাপক মুজিবুর রহমান ও মাওলানা আ.ন.ম শামসুল ইসলাম, সেক্রেটারি জেনারেল অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার, সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল এটিএম মাসুম, মাওলানা আব্দুল হালিম, হামিদুর রহমান আযাদ, রফিকুল ইসলাম খানসহ কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদের অন্যান্য নেতারা উপস্থিত ছিলেন।
বিভি/এসজি
						


							
							
 
										
							
							
							
							
							
							
							
							
							
							
											
											
											
											
মন্তব্য করুন: