• NEWS PORTAL

  • মঙ্গলবার, ৩০ এপ্রিল ২০২৪

ছাত্ররাজনীতি কী মেধা বিকাশের অন্তরায়?

মো. তানভীর হোসাইন

প্রকাশিত: ১৫:৪২, ৪ এপ্রিল ২০২৪

ফন্ট সাইজ
ছাত্ররাজনীতি কী মেধা বিকাশের অন্তরায়?

মো. তানভীর হোসাইন

বুয়েট ক্যাম্পাসে ছাত্ররাজনীতি নিয়ে উত্তাল বাংলাদেশ। বুয়েটে ছাত্ররাজনীতি চালু হওয়া না হওয়ার বিষয় নিয়ে আসছে নানা মতবাদ। শিক্ষাঙ্গনে ছাত্ররাজনীতি থাকাটা কতটা যুক্তিক সেটা নিয়েও প্রশ্ন আসছে নানা মহল থেকে। ছাত্ররাজনীতি কি দেশকে এগিয়ে নেওয়ার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে নাকি শিক্ষা বিস্তারের অন্তরায় পরিণত হয়েছে ছাত্ররাজনীতি, প্রশ্নে থেকেই যায়। যুক্তিসঙ্গত উত্তরও রয়েছে, রয়েছে ছাত্ররাজনীতির পক্ষে বিপক্ষে নানা মতবাদ। 

ঔপনিবেশিক ও উন্নয়নশীল দেশগুলোতে সমাজের সচেতন ও সংগ্রামী অংশ হিসেবে ছাত্রসমাজ রাজনৈতিক সংগ্রামে সক্রিয় ভূমিকা পালন করেছে। আমাদের দেশের ছাত্রসমাজ ভাষা আন্দোলন, শিক্ষা আন্দোলন, ৬ দফা ও ১১ দফার আন্দোলনে এবং রক্তক্ষয়ী মুক্তিযুদ্ধে গৌরবোজ্জ্বল ভূমিকা পালন করেছে। কিন্তু দূর্ভাগ্যবশত আমাদের ছাত্ররাজনীতির সোনালী অতীতের সাথে বর্তমান ছাত্ররাজনীতির আকাশ পাতাল ব্যবধান। শিক্ষাঙ্গনে এখন আগের মতো দেশ ও জনগণের সেবার রাজনীতি নেই। বরং ছাত্ররাজনীতির নামে চলছে সন্ত্রাসবাদ, চাঁদাবাজি,

ক্ষমতার আধিপত্য, বড়াই-লড়াই, হল দখল, সিট বাণিজ্য, টেন্ডারবাজি, চাটুকারিতা, পকেট নেতা তৈরি, প্রশাসনের অন্যায্য সমর্থন প্রভৃতি কারণে ছাত্র রাজনীতির যথাযথ বিকাশ হচ্ছে না। ছাত্র সংগঠনগুলোর কমিটি গঠনের জন্য এখন যোগ্যতার পাশাপাশি চলে লাখ লাখ টাকার রাজনৈতিক বাণিজ্য। এই অপরাজনীতির দাপটে ক্রমেই ছাত্ররাজনীতি হয়ে উঠছে অসৎ ও অশুভ। আর এর প্রভাব পড়ছে সাধারণ ছাত্রদের ওপর। নেতা নির্বাচনে যেহেতু সাধারণ শিক্ষার্থীদের মতামতের কোনো মূল্য নেই, সেহেতু অপতৎপরতা বন্ধ হওয়ারও কোনো সুযোগ নেই।  আর এ কারণে সাধারণ শিক্ষার্থীরা অনেক ক্ষেত্রেই তাদের ন্যায্য দাবি কিংবা অধিকার প্রতিষ্ঠা করতে ব্যর্থ হচ্ছে। কোনো কোনো সময়ে সাধারণ শিক্ষার্থী ওপর চলে জুলুম-অত্যাচারও। ছাত্ররাজনীতিতে খুনের ঘটনাও অহরহ।

বিশ্ববিদ্যালয়ে যেখানে শিক্ষার্থীদের হাতে থাকার কথা ছিলো বই আর লাইব্রেরীতে বসে পড়াশোনা, সেখানে মিটিং-মিছিল করেই নষ্ট করছে তাদের জীবনের মূলবান সময়টুকু। যেখানে শিক্ষা ও গবেষণায় মনোনিবেশ করার কথা ছিলো, উচ্চ শিক্ষায় শিক্ষিত দেশ ও জাতির কল্যাণে নিয়োজিত হওয়ার কথা ছিলো, সেখানে একজন শিক্ষার্থী বছরের পর বছর থাকছে একই ক্লাসে। বাবা মায়ের স্বপ্ন পূরণের প্রত্যাশায় বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হয় শিক্ষার্থীরা। অথচ ছাত্ররাজনীতিতে জড়িয়ে বাবা মায়ের স্বপ্ন তো পূরণ হয়েই না বরং অনিশ্চিত ভবিষ্যত হাতছানি দিয়ে ডাকে। দেশের মেধা বিকাশ ও শিক্ষা বিস্তারের অন্তরায় এখন ছাত্ররাজনীতি। তাহলে কি বন্ধ হওয়ায় প্রয়োজন ছাত্ররাজনীতি? অবশ্যই না। বরং ছাত্ররাজনীতির চিত্র বদলাতে হবে। বন্ধ করতে হবে ছাত্ররাজনীতির নামে অপরাজনীতি। 

লেখক: শিক্ষার্থী
হাজী মোহাম্মদ দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, দিনাজপুর।

(বাংলাভিশনের সম্পাদকীয় নীতিমালার সঙ্গে লেখকের মতামতের মিল নাও থাকতে পারে। প্রকাশিত লেখাটির আইনগত, মতামত বা বিশ্লেষণের দায়ভার সম্পূর্ণরূপে লেখকের, বাংলাভিশন কর্তৃপক্ষের নয়। লেখকের নিজস্ব মতামতের কোনো প্রকার দায়ভার বাংলাভিশন নিবে না।)

বিভি/এজেড

মন্তব্য করুন:

Drama Branding Details R2
Drama Branding Details R2