• NEWS PORTAL

  • বুধবার, ১৮ জুন ২০২৫

Drama: Jamai Bou Chor
Drama: Jamai Bou Chor

নারী-পুরুষের হালালভাবে ঈদের দিন কাটানোর ৭টি উপায়! 

হাবিবুন নাহার মিমি

প্রকাশিত: ০৭:২৮, ২২ এপ্রিল ২০২৩

ফন্ট সাইজ
নারী-পুরুষের হালালভাবে ঈদের দিন কাটানোর ৭টি উপায়! 

ফাইল ছবি

মুসলিম উম্মাহর জন্য ঈদ হলো সবচেয়ে আনন্দঘন উৎসব, যা পরিবার পরিজনের সাথে উদযাপন করা হয়ে থাকে। কিন্তু অপসংস্কৃতি ও ফিতনার অনুপ্রবেশের এই ক্রান্তিলগ্নে পবিত্র এই দিনটিতেও আমরা হারামে ডুবে যাই। সাউন্ড বক্সে উচ্চস্বরে গান বাজানো, পটকা ফোটানো, ফ্রিমিক্সিংসহ নানা ধরণের পাপে ডুবে যায় যুবসমাজ। 

সচেতন মুসলিম হতে হলে আমাদের জানতে হবে ঈদের আনন্দের নামে কোন কাজটা করা যাবে কোনটা করা যাবে না। যুগের কালস্রোতে গা ভাসালে চলবে না। তাহলে চলুন জেনে নিই কীভাবে হালালভাবে ঈদের দিন আনন্দ উদযাপন করা যায়। 

১. দিনের শুরুটা হোক সালাতের মাধ্যমে: 
ভোরে ফজরের নামাজ আর তার কিছুক্ষণ পর ঈদের নামাজের মাধ্যমে আপনার দিন শুরু করুন। ঈদের নামাজ হলো একটি বিশেষ নামাজ, যা সাধারণত ঈদগাহে খোলামেলা পরিবেশে আদায় করা হয়। নামাজ শেষে ছোট-বড় সবাই কোলাকুলি করে, সকলের চোখেমুখে ঈদের আনন্দ, গায়ে পাঞ্জাবি টুপি, আতরের সুঘ্রাণে পরিবেশ মাতোয়ারা।
 
২. আপনার সেরা পোশাক পরুন: 
ঈদ হলো উদযাপনের দিন, আর ইসলাম এদিন সবাইকে তাদের সেরা পোশাক পড়তে উৎসাহিত করে। পোশাকটি নতুনই হতে হবে এমন কোনো কথা নেই, পুরনো হলেও আপনার কাছে থাকা সবচেয়ে ভালো পোশাকটি ঈদের দিন পড়ুন। এতে ঈদের প্রতি সম্মান দেখানো হয় ও দিনটি যে স্পেশাল, তা বোঝা যায়। 

৩. দান করুন: 
ঈদের দিন হলো দানের সময়। ঈদের সালাতের আগেই সাদাকাতুল ফিতর প্রদান করিন, যেন দরিদ্ররাও এই খুশির দিনে ভালো খাবার খেতে পারে, ভালো পোশাক পড়তে পারে, তাদের ঘরেও যেন খুশি থাকে।  মুসলিম মানেই সে একা আনন্দ উদযাপন করবে না, আশপাশের সবার মাঝে আনন্দ ছড়িয়ে দিবে। 

৪. পরিবার ও আত্মীয়স্বজনের সাথে দেখা করুন: 
ঈদ হলো এমন একটা উৎসব যা কেউ একা একা উদযাপন করতে পারেনা। ঈদের আনন্দকে উপভোগ করতে হয় প্রিয়জনদের সাথে। তাই আপনার পরিবার ও আত্মীয়স্বজনদের সাথে দেখা করুন। সবার জন্য ছোটখাটো হলেও উপহার নিয়ে যান। আত্মীয়স্বজনদের মাঝে পারস্পরিক সম্পর্ক শক্তিশালী করার জন্য ঈদ একটি চমৎকার উপলক্ষ্য। তবে এই কাজটি করতে গিয়ে আমরা প্রায়ই ইসলামের সীমারেখা ভুলে যাই। আপনি পুরুষ হলে যে আত্মীয়ের বাড়ি যাবেন সেখানকার মেয়েরা যেন অস্বস্তিকর পরিস্থিতিতে না পড়ে তা খেয়াল রাখবেন। দৃষ্টি নিচু রাখবেন ও তাদের পর্দা নিশ্চিত করতে চেষ্টা করবেন। হুটহাট কোনো বাড়িতে ঢুকে পড়বেন না, সালাম দিয়ে অনুমতি নিয়ে ঢুকবেন যেন মেয়েরা বেপর্দা অবস্থায় থাকলে নিজেদের আড়াল করার জন্য পর্যাপ্ত সময় পায়৷ গাইরে মাহরাম মেয়ে, কাজিন, ভাবীদের সাথে হাসি-তামাশা করতে বসে যাবেন না। 

আর আপনি যদি নারী হন, অবশ্যই কোনো আত্মীয়ের বাড়ি গেলে পরিপূর্ণ পর্দা সহকারে যাবেন। পর্দা মেইনটেইন করতে সমস্যা হবে এমন কোথার না যাওয়ার সর্বোচ্চ চেষ্টা করবেন। নিজেকে আড়ালে রাখার যথাসাধ্য চেষ্টার পরও যদি বেহায়া কোনো কাজিন, দুলাভাই বা অন্য গায়রে মাহরাম পুরুষ খোশগল্প করতে চায়, তাকে এভয়েড করবেন।  মনে রাখবেন, ঈদ আনন্দের, কিন্তু এই আনন্দ করতে গিয়ে রমাদানের সারামাস কঠোর পরিশ্রমের মাধ্যমে যে তাকওয়াটুকু আপনি অর্জন করেছেন, তা বিসর্জন দেওয়া যাবে না। 

৫. স্পেশাল খাবার তৈরি করুন: 
আপনার প্রিয়জনদের জন্য নিজ হাতে স্পেশাল কোনো রেসিপি ট্রাই করুন। ঈদ মানেই প্রিয়জনের সান্নিধ্যে বসে মজাদার সব খাবার খাওয়া। তবে এক্ষেত্রে মা-চাচীদের উপর একটু এহসান করবেন। ঈদের দিন সাধারণত তারা সেই ভোর থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত রান্নাঘরেই থাকেন। তাদের কাজে টুকটাক সাহায্য করুন। তাদের সাধ্যাতিরিক্ত খাবারের আবদার করবেন না। তাদেরও ঈদের আনন্দ আছে। আপনার মতো তাদেরও নতুন পোশাক পড়ে সবার সাথে একসাথে বসে একটু গল্প করতে ইচ্ছে হয়। 

৬. আল্লাহকে স্মরণ করুন: 
আপনার জীবনের সমস্ত নিয়ামতের জন্য আল্লাহ রাব্বুল আলামীনের কাছে কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করুন। কতোজন গত ঈদে দুনিয়ায় ছিলো, এই ঈদে অন্ধকার কবরে শুয়ে আছে। আপনাকে আল্লাহ আরেকটি ঈদের আনন্দ দান করেছেন। তাই আল্লাহর কাছে শুকরিয়া জানান। একটু সময় নিয়ে ভাবুন, আমাদেরকে কেন আল্লাহ এই আনন্দময় ঈদ দান করেছেন, আমরা কি সঠিকভাবে ঈদ উদযাপন করছি, আমাদের ঈদ উদযাপনে আনন্দের নামে হারাম কাজকর্মে লিপ্ত হয়ে যাচ্ছি না তো? 

৭. হারাম ও অনৈসলামিক সংস্কৃতির অনুসরণ করবেন না: 
ঈদের আনন্দের নামে পশ্চিমা অনৈসলামিক সংস্কৃতির অন্ধ অনুসরণ করবেন না। উচ্চস্বরে সাউন্ড বক্সে হারাম গান বাজানো, ট্রাকে নেচেগেয়ে ঘুরে বেড়ানো, অন্যের অসুবিধা ও কষ্টের কথা বিবেচনা না করে বিকট শব্দে পটকা ও বাজি ফোটানো, পার্ক ও ভ্রমণকেন্দ্রগুলোতে অসভ্যতা ও বেহায়াপনা, ফ্রি মিক্সিং ইত্যাদি ইসলামের সংস্কৃতি নয়। এগুলো সুস্পষ্টভাবে হারাম ও গর্হিত কাজ। ইসলাম কখনোই এসব কাজের অনুমতি দেয় না। এমনকি তা ঈদের মতো উৎসবে আনন্দের নামেও না।

 ঈদ একটি পবিত্র আনন্দোৎসব, এর পবিত্রতা বজায় রাখুন। আনন্দের নামে একে অপবিত্র করবেন না৷ 

ফেসবুক পেইজ ‘ওহী’ থেকে সংগৃহী

বিভি/এজেড

মন্তব্য করুন: