• NEWS PORTAL

  • সোমবার, ১৫ ডিসেম্বর ২০২৫

পহেলা বৈশাখ রাঙাতে ব্যস্ত মৃৎশিল্পীরা

শামীম হোসেন সামন

প্রকাশিত: ১৬:২৫, ৮ এপ্রিল ২০২৩

ফন্ট সাইজ
পহেলা বৈশাখ রাঙাতে ব্যস্ত মৃৎশিল্পীরা

পহেলা বৈশাখ রাঙাতে ব্যস্ত মৃৎশিল্পীরা

বাংলা নববর্ষকে ঘিরে নির্ঘুম ব্যস্ত সময় পার করছেন ঢাকার নবাবগঞ্জ উপজেলার মৃৎশিল্পীরা। এমনিতে সারা বছর অনেকটা অলস সময় পার করলেও এ সময় দম ফেলার ফুসরত নেই তাদের। ফলে তারাও সারা বছর অপেক্ষায় থাকেন এই একটা উৎসবের। 

নববর্ষ উপলক্ষে উপজেলার বিভিন্ন স্থানে বসে বর্ষবরণ মেলা। সেই মেলায় চাহিদা থাকে নানা রকমের খেলনা, মাটির জিনিসপত্রের। তাই মৃৎশিল্পীরা নিজের হাতে নিপুণ কারুকাজে মাটি দিয়ে তৈরি করেন শিশুদের জন্য রকমারি পুতুল, ফুলদানি, রকমারি ফল, হাঁড়ি, কড়াই, ব্যাংক, বাসন, থালা, বাটি, হাতি, ঘোড়া, কলস, ঘটি, চুলা ও ফুলের টবসহ বিভিন্ন মাটির জিনিসপত্র।

বাপ-দাদার পেশাকে টিকিয়ে রাখতে এখন কেউ কেউ এ পেশার সঙ্গে জড়িত। বেচাকেনা কম বিধায় অনেকেই এ কাজ করতে অনাগ্রহ প্রকাশ করছে। অনেকেই তাদের ছেলে-মেয়েকে এ পেশায় আনতে নিরুৎসাহিত করছে। আর এর মূল কারণ বেচা-বিক্রি কম। মানুষ এখন মাটির তৈরি জিনিসের চেয়ে মেলামাইন, প্লাস্টিককে বেশি প্রাধান্য দিচ্ছে।

জানা গেছে, নবাবগঞ্জের নয়নশ্রী ইউনিয়নের খানেপুর ও জয়কৃষ্ণপুর ইউনিয়নের সোনাবাজু গ্রামের পালবাড়িসহ উপজেলার বিভিন্ন গ্রামে মৃৎশিল্প ছিল। মৃৎশিল্পীরা মাটির হাঁড়ি-পাতিল, বাসন-কোসন, ঢাকনা, কলসি, ছোট বাচ্চাদের খেলনা সামগ্রী, পেয়ালা তৈরি করতেন। 

তাদের তৈরি পুতুল ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন জেলা ও উপজেলায় সরবরাহ করা হতো। বর্তমানে নানা প্রতিক’লতা ও অভাব অনটনের কারণে ঢাকার নবাবগঞ্জ উপজেলার সোনাবাজু গ্রামের পালবাড়ির মৃৎশিল্পীরা তাদের ঐতিহ্যবাহী বাপ-দাদার আদি পেশা ছেড়ে দিতে বাধ্য হচ্ছেন।

জয়কৃষ্ণপুর ইউনিয়নের সোনাবাজু গ্রামের স্বপ্না রানী পাল বলেন, ‘আমাদের পেশায় এখন আর আগের মতো ব্যস্ততা নেই। শুধুমাত্র বৈশাখ আসলেই আমাদের হাতে কিছুটা কাজ থাকে।’

একই এলাকার সুধীর পাল বলেন, ‘যদি জাত পেশা না হতো তাহলে অন্য কাজ করতাম। আমাদের এখানে প্রায় ২৫টি পরিবার এই কাজ করত, কিন্তু এখন ৮-৯টি পরিবার এই পেশার সঙ্গে জড়িত রয়েছে। বাকিরা অন্য কাজ করছে।’

এখানকার মৃৎশিল্পীরা জানান, পারিবারিকভাবেই তারা পৈতৃক পেশা হিসেবে এই মাটির কাজ ধরে রেখেছে। পণ্যের রঙ ও নকশার কাজ নিজেরাই করে থাকে। খেলনা তৈরির জন্য মাঠ থেকে মাটি আনা, মাটি নরম করা, সাচ বসানো, চুলায় পোড়ানো, রোদে শুকানো, রঙ করাসহ প্রায় সব কাজই এখানকার নারীরা করেন। আসছে বৈশাখী মেলাকে সামনে রেখে এক একটি পরিবার প্রায় ২ হাজার খেলনাসহ মাটির জিনিসপত্র তৈরি করেছেন এবং রঙের কাজ প্রায় শেষ করা হয়েছে। 

তারা আরও বলেন, আমাদের সন্তানরা মাটির কাজ শিখতে চায় না। তারা অন্য পেশায় নিযুক্ত হচ্ছে। আমাদের খোঁজখবর কেউ নেয় না। পৃষ্ঠপোষকতা ও প্রশিক্ষণ পাওয়া গেলে খেলনা, শোপিসসহ অন্যান্য সৌখিন জিনিস তৈরি করে শিল্পকে টিকিয়ে রাখা সম্ভব বলে মনে করেন মৃৎশিল্পীরা।

বিভি/এজেড

মন্তব্য করুন:

Drama Branding Details R2
Drama Branding Details R2