ডিসেম্বরে মহাজাগতিক বিরল দুই ঘটনার সাক্ষী হবে মানুষ, জানা গেল দিন
ডিসেম্বরের শীতল আকাশ এবার যেন বিশেষভাবে স্মরণীয় হয়ে থাকবে। বছরের শেষ মাসটিতে মানুষ দেখতে পারবে মহাজাগতিক দুটি বিরল ঘটনা। একদিকে পৃথিবীর আকাশ ছুঁয়ে যাবে এক আন্তঃনাক্ষত্রিক অতিথি (ধূমকেতু), অন্যদিকে চাঁদ ও বৃহস্পতির অপূর্ব মিলন সৃষ্টি করবে মনোমুগ্ধকর দৃশ্য। যুক্তরাষ্ট্রের মহাকাশ গবেষণা সংস্থা নাসার সর্বশেষ আকাশপথ নির্দেশিকা এরইমধ্যে জানিয়ে দিয়েছে-এই ডিসেম্বরের রাতগুলো হবে রোমাঞ্চে ভরা।
প্রথম ঘটনাটি ঘটবে ৭ ডিসেম্বর। যাকে বলা হচ্ছে চাঁদ-বৃহস্পতি সংযোগ। সূর্যাস্তের পর পূর্ব আকাশে দেখা যাবে সরু চাঁদ আর গাঢ় আলো ছড়ানো বৃহস্পতিকে পাশাপাশি। যদিও বাস্তবে বৃহত্তম গ্রহ এবং পৃথিবীর একমাত্র কৃত্রিম উপগ্রহ চাঁদের দূরত্ব কোটি কোটি কিলোমিটার, তবুও পৃথিবী থেকে দেখলে তারা কয়েক ডিগ্রির ব্যবধানে পাশাপাশি থাকা স্থির কিছু বলে মনে হবে। খালি চোখে সহজে দেখা যাবে। তবে দূরবীন ব্যবহার করলে দেখা যাবে বৃহস্পতির চার উপগ্রহ-আইও, ইউরোপা, গ্যানিমিড ও ক্যালিস্টো।
মাসের দ্বিতীয় বিরল ঘটনাটি ঘটতে যাচ্ছে ১৯ ডিসেম্বর, যখন আমাদের সৌরজগতে ঢুকে পড়া আন্তঃনাক্ষত্রিক ধূমকেতু থ্রিআই/অ্যাটলাস (3I/ATLAS) পৃথিবীর সবচেয়ে কাছে দিয়ে অতিক্রম করবে। এটি মানব ইতিহাসে তৃতীয় আন্তঃনাক্ষত্রিক বস্তু। আগে ছিল ২০১৭ সালের ‘ওউমুয়ামুয়া’ এবং ২০১৯ সালের কমেট বোরিসভ। নাসার অ্যাটলাস সার্ভে টেলিস্কোপ এই ধূমকেতুটিকে আবিষ্কার করে, যা মূলত অন্য এক নক্ষত্রমণ্ডল থেকে ছুটে আসা এক রহস্যময় ভ্রমণকারী।
পৃথিবীর কাছাকাছি আসলেও কোনো ঝুঁকি নেই। কারণ সবচেয়ে কাছের দূরত্ব হবে প্রায় ১৭ কোটি মাইল, অর্থাৎ চাঁদের দূরত্বের ৭০০ গুণ। তবে দূরত্ব ও ক্ষীণ উজ্জ্বলতার কারণে এটি দেখতে চাইলে প্রয়োজন হবে অন্তত ১২ ইঞ্চি অ্যাপারচারের টেলিস্কোপ। ভোরের আগে পূর্ব–উত্তর–পূর্ব আকাশে, লিও নক্ষত্রমণ্ডলের রেগুলাস তারার নিচে এটি খুঁজে পাওয়া যাবে। শহরের আলো থেকে দূরে গেলে সহজে দেখা যাবে।
এই দুই মহাজাগতিক ঘটনা মিলিয়ে ডিসেম্বর হবে জ্যোতির্বিদদের স্বপ্নময় মাস। শীতের পরিষ্কার আকাশ, শহরে আলো থেকে অন্য কোথাও সরে যাওয়ার পাশাপাশি একটু ধৈর্য ধরতে পারলে যে কেউ হয়ে উঠতে পারে মহাজগতের নীরব সাক্ষী।
বিভি/টিটি




মন্তব্য করুন: