• NEWS PORTAL

  • শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪

ঘূর্ণিঝড়ের নাম কেন ‘অশনি’, কে দিলো এই নাম?

প্রকাশিত: ১২:১০, ৯ মে ২০২২

ফন্ট সাইজ
ঘূর্ণিঝড়ের নাম কেন ‘অশনি’, কে দিলো এই নাম?

প্রতীকী ছবি

পশ্চিম-মধ্য বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন দক্ষিণপূর্ব বঙ্গোপসাগর এলাকায় অবস্থানরত প্রবল ঘূর্ণিঝড় ‘অশনি’ সামান্য উত্তরপশ্চিম দিকে অগ্রসর হয়ে বর্তমানে পশ্চিম-মধ্য বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন এলাকায় অবস্থান করছে। আগামী বৃহস্পতিবার নাগাদ এটি উপকূলের কাছাকাছি পৌঁছবে বলে আবহাওয়াবিদরা ধারণা করছেন।

ঘূর্ণিঝড়ের নাম কেন হলো অশনি? কে-ইবা দিলো এই নাম, জানার আগ্রহ সবার মনেই। চলুন জেনে নেওয়া যাক কিভাবে অশনি নাম পেলো ঘূর্ণিঝড়। 

বিশ্ব আবহাওয়া সংস্থার (ডব্লিউএমও) তালিকা অনুযায়ী এবারের ঘূর্ণিঝড়টির নাম দেয়া হয়েছে Asani। যাকে বাংলায় আশানি বা অশনি বলা হচ্ছে। 

২০২০ সালে বিশ্ব আবহাওয়া সংস্থার তৈরি করা নতুন ১৬৯টি নামের তালিকার মধ্যে অশনি অন্যতম একটি।  তালিকায় দেওয়া তথ্য অনুসারে জানা যায়, অশনি নামের এই ঘূর্ণিঝড়টির নমকরণ করা হয়েছে শ্রীলঙ্কার দেওয়া নাম অনুসারে। শ্রীলঙ্কার সিংহলী ভাষায় ‘অশনি’-এর শাব্দিক অর্থ ‘ক্রোধ’। 


কখন নাম করণ করা হয়?

সাগরে সৃষ্টি হওয়া লঘুচাপ প্রথমে নিম্নচাপে পরিণত হয়। শক্তিশালী হয়ে উঠলে নিম্নচাপটি এরপর ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হয়। তখনই তালিকায় আগে থেকে নির্ধারণ করে রাখা একটি নাম দেওয়া হয়ে থাকে ঘূর্ণিঝড়টির। সাধারণত আবহাওয়া ও জলবায়ুর সঙ্গে সংগতিপূর্ণ এমন নামে ঘূর্ণিঝড়ের নাম দেওয়া হয়ে থাকে। কোনো নামেরই পুনরাবৃত্তি করা হয় না।

ঘূর্ণিঝড়ের নামকরণ কেন?

সম্ভাব্য ঘূর্ণিঝড়ের গতিপ্রকৃতি নির্ণয় করতে পূর্বে আঘাত হানা ঘূর্ণিঝড়গুলোর সময় বা তারিখসহ বিভিন্ন আচরণ পর্যবেক্ষণ করতে হয় আবহাওয়াবিদদের। কিন্তু নামবিহীন থাকলে আঘাত হানা ঘূর্ণিঝড়ের শক্তি, ধরন সম্পর্কে পরবর্তীতে তথ্য জানা কঠিন এবং সময় সাপেক্ষ হয়ে পড়ে।

সে জন্য বিশ্ব আবহাওয়া সংস্থার (ডব্লিউএমও) ছয়টি বিশেষ আঞ্চলিক আবহাওয়া সংস্থার (আরএসএমসি) সঙ্গে সমন্বয় করে ২০০৪ সাল থেকে ঘূর্ণিঝড়ের নামকরণ শুরু করেছে। আরএসএমসি তার সদস্য দেশগুলোর কাছ থেকে নামের তালিকা চেয়ে থাকে। তালিকা পেলে দীর্ঘ সময় যাচাই-বাছাই করে সংক্ষিপ্ত তালিকা করে ডব্লিউএমওর কাছে পাঠায়।

২০০৪ সালে প্রথমবার নামকরণ শুরুর সময় ৬৩টি ঘূর্ণিঝড়ের নামকরণ করা হয়। সেগুলো শেষ হলে ২০২০ সালের এপ্রিলে সম্ভাব্য ১৬৯টি ঘূর্ণিঝড়ের নামের তালিকার অনুমোদন দেয় বিশ্ব আবহাওয়া সংস্থা (ডব্লিউএমও)। এই তালিকার নামগুলো প্রস্তাব করেছে বাংলাদেশসহ ১৩টি দেশ। বাকি ১২টি দেশ হলো ভারত, ইরান, মালদ্বীপ, মিয়ানমার, ওমান, পাকিস্তান, কাতার, সৌদি আরব, শ্রীলঙ্কা, থাইল্যান্ড, আরব আমিরাত ও ইয়েমেন। যার মধ্যে প্রথম ব্যবহৃত হয়েছে গেলো বছর বাংলাদেশ-ভারত উপকূলে আঘাত হানা ঘূর্ণিঝড় আম্পান।

নতুন ঘূর্ণিঝড়ের জন্য পাঠানো ১৬৯ নাম

বাংলাদেশ : নিসর্গ, বিপর্যয়, অর্ণব, উপকূল, বর্ষণ, রজনী, নিশীথ, ঊর্মি, মেঘলা, সমীরণ, প্রতিকূল, সরবর, মহানিশা।

ভারত: গাতি, তেজ, মুরাসু, আগ, ভায়ুম, ঝড়, প্রবাহ, নীড়, প্রভানজান, ঘূর্ণি, আমবুদ, জালাদি, ভিগা।

ইরান: নিভার, হামুন, আগভান, সিপান্দ, বুরান, আনাহিতা, আজআর, পোয়ান, আরশাম, হেনজামি, সাভাস, তাহামতান, তুফান।

মালদ্বীপ: বুরিভি, মিদহিল, কানি, ওডি, কিনাউ, এন্ধেরি, রিয়াউ, গুরুভা, কুবাংগি, হোরাংগু, থুনডি, ফানা।

মিয়ানমার: তুয়াতি, মিগজায়ুম, নাগামান, কাজাথি, যাবাগজি, ইউয়ুম, মউইহু, কাউই, পিংকু, জিনগাউন, লিনইওনি,কাইকান, বাউপা।

ওমান: ইয়াস, রিমাল, সাইল, নাসিম, মুথন, সাদিম, দিমা, মানজর, রুকাম, ওয়াতাদ, আল-জারয, রাবাব, রাদ।

পাকিস্তান: গুলাব, আসনা, সাহাব, আফসান, মানাহিল, সুজানা, পারওয়ায, জান্নাতা, সারসার, বাদবান, সাররাব, গুলনার, ওয়াসেক।

কাতার: শাহীন, ডানা, লুলু, মউজ, সুহাইল, সাদাফ, রিম, রায়হান, আনবার, ওউদ, বাহার, সাফ, ফানার।

সৌদি আরব: জাওয়াদ, ফেনগাল, ঘাজির, আসিফ, সিদরাহ, হারিদ, ফাইদ, কাসির, নাখিল, হাবুব, বারেক, আরিম, ওয়াবিল।

শ্রীলঙ্কা:  অশনি, শাক্তি, জিগুম, গগনা, ভারামভা, গাজানা, নিবা, নিনাদা, ভিদুলি, ওঝা, সালিথা, রিভি, রুদু।

থাইল্যান্ড: সিতারাংগ, মনথা, থিয়ানুট, বুলান, ফুতালা, আইয়ারা, সামিংগ, কারইসন, মাতচা, মাহিংসা, ফারিওয়া, আাসুরি, থারা।

আরব আমিরাত: মানদউস, সেনইয়ার, আফুর, নাহ-হাম, কুফফাল, দামান, দিম, গারগুর, খুব, দিগল, আথমাদ, বুম, সাফার।

ইয়েমেন: ব্রম, শুকরা, ফারতাক, দারসাহ, সামহাহ, বাকহুর, ঘাওয়েযি, হাউফ, বালহাফ, মোকহা, দিতওয়াহ, দিকসাম, সিরা।

বিভি/কেএস

মন্তব্য করুন: